# ড. মুহাম্মদ ইউনূস: করোনা মহামারী বিশ্বকে যে পরিমাণ ক্ষতির সম্মুখীণ করেছে তা উদ্বেগের। তবে, এই বিশাল ক্ষতি হওয়া সত্ত্বেও এটি আমাদের পরিবর্তনের একটি অতুলনীয় সুযোগ দিয়েছে।
এই মুহূর্তে পুরো বিশ্বকে একটি বড় প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে তা হলো কীভাবে আবার অর্থনীতি সচল হতে পারে। ভাগ্যক্রমে আমরা এর উত্তরটি জানি। আমরা পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য ভাল অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। আমাদের যে বড় প্রশ্নটির উত্তর দিতে হবে তা হল আমরা কি বিশ্বকে করোনা ভাইরাস আসার আগে যেখানে নিয়ে গিয়েছিলাম সেখানে যেতে পারবো? বা, আমরা কি বিশ্বকে নতুন করে পুনর্গঠন করতে পারবো? সিদ্ধান্ত পুরোপুরি আমাদের হাতে।
বলা বাহুল্য, করোনার আগের বিশ্বটি আমাদের পক্ষে ভাল যাচ্ছিল না। করোনা ভাইরাস খবরের শিরোনাম হয়ে ওঠার আগ পর্যন্ত পুরো পৃথিবী চিৎকার করছিল যে পৃথিবীতে ভয়ানক কিছু ঘটতে চলেছে। জলবায়ু বিপর্যয়ের কারণে পুরো পৃথিবী মানুষের অস্তিত্বের পক্ষে অযোগ্য হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা আক্ষরিক অর্থে দিনগুলি গণনা করছিলাম; আমরা কীভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্বারা সৃষ্ট বিশাল বেকারত্বের মারাত্মক হুমকির মধ্যে আছি; সম্পদের ঘনত্ব কীভাবে বিস্ফোরক স্তরে পৌঁছেছিল। আমরা একে অপরকে মনে করিয়ে দিয়েছিলাম যে, বর্তমান দশকটি শেষ সুযোগের দশক। এই দশকের পরে, আমাদের সকল প্রচেষ্টা কেবলমাত্র প্রান্তিক ফলাফল নিয়ে আসবে, যা আমাদের পৃথিবী সংরক্ষণের জন্য অপর্যাপ্ত। করোনা ভাইরাস হঠাৎ করে বিশ্বের প্রেক্ষাপট ও ক্যালকুলাস পরিবর্তন করে দিয়েছে। এটি এমন এক দুঃখজনক অধ্যায়ের সূচনা করেছে যা এর আগে কখনও ছিল না।
# মাইনিচি শিম্বুন: মহামারী শুরু হওয়ার আগের সেই পৃথিবীতে কী আমাদের ফিরে যাওয়া উচিত?
# ড. মুহাম্মদ ইউনূস: নতুনভাবে সবকিছু শুরু করার আগে আমাদেরকে অবশ্য অর্থনীতির পাশাপাশি সুখী জীবনের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। আমারা যেন সবচেয়ে বেশি সুখে পৌঁছাতে পারি সেদিকে নজর দিতে হবে। শুধু হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার উন্নয়ন করলেই হবে না। জিরো কার্বনের দিকেও নজর দিতে হবে। আমরা যদি বেকার সংখ্যা জিরোতে নিয়ে আসতে পারি তাহলে সেটি হবে নতুন হার্ডওয়ার ও সফটওয়্যার।
সব জায়গায় অর্থনৈতিক লাভের কথা বিবেচনা করলে আমরা করোনা উত্তর পুনর্গঠনে যে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছি তার সুফল পাওয়া যাবে না। আমাদের হার্ডওয়ার বা সফটওয়ার এই কাজ করতে দিচ্ছে না। সবখানেই সফটওয়ার বা হার্ডওয়ারের অজুহাত দেওয়া যাবে না। এটা অপ্রত্যাশীত ও খুড়া অজুহাত।
মানুষ যা চায় তা করতে পারে। মানুষের পক্ষে করা কোনো কিছুই অসম্ভব নয়। করোনা ভাইরাস আমাদের নতুন ও মুক্তভাবে সতেজ হয়ে বাঁচার সম্ভাবনার দ্বার করে দিয়েছে। এখন আমরা সতেজভাবে আমাদের হার্ডওয়ার ও সফটওয়ার শুরু করতে পারি।
# মাইনিচি শিম্বুন: আমাদের কী ধরণের পৃথিবী তৈরি করা উচিত?
# ড. মুহাম্মদ ইউনূস: করোনা উত্তর বিশ্বকে পুনর্গঠনের জন্য দুটি বিষয়কে কেন্দ্র করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অবশ্যই সামাজিক ও পরিবেশ সচেতনতাকে সমস্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের কেন্দ্রে দৃঢ়ভাবে স্থাপন করা উচিত। সরকারকে নিশ্চয়তা দিতে হবে যে সরকার অন্য সকল বিকল্পের তুলনায় সর্বোচ্চ সামাজিক ও পরিবেশগত সুবিধা নিয়ে আসবে। তা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত কাউকে একটি টাকা দেওয়া যাবে না।
সামাজিক সচেতনতামূলক পরিকল্পনা ও কার্য সম্পাদনার জন্য ‘পুনর্গঠন প্যাকেজ চালু করতে হবে। আমরা এখন সঙ্কটের মধ্যে আছি এখনই ভবিষ্যত পরিকল্পনাগুলো তৈরি করতে হবে। সঙ্কট শেষ হয়ে গেলে নির্দিষ্ট উপায়ে বাস্তবায়ন করতে হবে। বিপর্যয় শুরুর আগে আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে। এখনই সময়।
# মাইনিচি শিম্বুন: অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের পরিকল্পনার কেমন হওয়া উচিত?
# ড. মুহাম্মদ ইউনূস: এই পুনর্গঠনে ব্যাপক পরিকল্পনায় আমি কেন্দ্রীয়ভাবে একটি ব্যবসায় ভূমিকা রাখার আহবান জানাবো। আর সেই ব্যবসায়ের নাম ‘‘সামাজিক ব্যবসা’’ দেওয়ার প্রস্তাব করছি। এটি মূলত বিনিয়োগের ব্যয় ছাড়া বিনিয়োগকারীদের জন্য কোনও ব্যক্তিগত মুনাফা না নিয়ে জনগণের সমস্যা সমাধানের জন্য তৈরি একটি ব্যবসা। মূল বিনিয়োগটি ফেরত দেওয়ার পরে, পরবর্তী সকল মুনাফা আবার ব্যবসায়ে বিনিয়োগ করা হবে।
করোনা উত্তর পুনর্গঠনে বড় বড় দায়িত্ব গ্রহণের জন্য সামাজিক ব্যবসায়ের জন্য উৎসাহ, অগ্রাধিকার ও স্থান উন্মুক্ত করার অনেক সুযোগ সরকারকে করে দিতে হবে। একই সাথে, সামাজিক ব্যবসায়ের প্রয়োজন সর্বত্র সমান হবে এমন আশা করা সরকারের উচিত নয়। সরকারকে অবশ্যই তাদের নিজস্ব কর্মসূচি চালু রাখতে হবে, যেমন- প্রথাগত জনকল্যাণমূলক কর্মসূচির মাধ্যমে দরিদ্র ও বেকারদের সহায়তা, স্বাস্থ্যসেবা এবং সব প্রয়োজনীয় পরিসেবাসহ বিকল্পগুলো চালু রাখতে হবে। তাতে সামাজিক ব্যবসায় ধীরে ধীরে বিস্তার লাভ করবে।
সরকার ‘‘সামাজিক ব্যবসা উদ্যোগ মূলধন তহবিল’’ নামে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় দুইভাবে একটি পদ্ধতি চালু করতে পারে। এছাড়া সরকার বেসরকারী খাত, ফাউন্ডেশন, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বিনিয়োগ তহবিলের সাথে যৌথ বিনিয়োগ করে সামাজিক ব্যবসার উদ্যোগ মূলধন তহবিল গঠন করতে পারে। তাতে প্রচলিত কোম্পানিগুলো সামাজিক ব্যবসার দিকে ঝুঁকবে অথবা তারা সামাজিক ব্যবসা করতে পার্টনারের সন্ধ্যান করবে। পুনর্গঠনের এই কর্মসূচিতে সরকার সামাজিক ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে পারে অথবা যে কোম্পানিগুলো মিটমিট করে চলছে তাদের সামাজিক ব্যবসায়ে রুপান্তর করতে পারে।
বর্তমানে সমাজ ও পরিবেশের সব সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব সরকারের ঘাঁড়ে। এতো বিপুল সমস্যা সমাধানের জন্য বড় বাজেটের প্রয়োজন পড়ছে। আর সামাজিক ব্যবসা চালুর মাধ্যমে নাগরিকদের সামাজিক সমস্যা নাগরিকরাই সমাধান করতে পারবে। এতে সরকারের উপর দায়িত্ব অনেকটাই কমবে। প্রতিটি দেশের সরকারকে প্রতি বছর বাজেট প্রণয়ন করতে যে চাপ নিতে হয় নাগরিকদের নিজেদের সামাজিক সমস্যা নিজেরাই সমাধানের মধ্যে দিয়ে সরকারের চাপ অনেকটাই কমবে।
# মাইনিচি শিম্বুন: সামাজিক বিনিয়োগকারীদের খুঁজে পাওয়া কি কঠিন নয়?
# ড. মুহাম্মদ ইউনূস: সামাজিক ব্যবসায়ের বিনিয়োগকারী কারা? আমরা তাদের কোথায় পাই? তারা সর্বত্র বিরাজমান। আমরা তাদের দেখতে পাই না কারণ আমাদের বিদ্যমান অর্থনৈতিক পাঠ্যপুস্তকগুলো তাদের অস্তিত্বকে স্বীকৃতি দেয় না। তাই আমাদের চোখ তাদের দেখে অভ্যস্ত নয়। সম্প্রতি সামাজিক ব্যবসা, সামাজিক উদ্যোগ, প্রভাব বিনিয়োগ, অলাভজনক সংস্থার মতো কিছু বিষয় অর্থনীতি পাঠ্যক্রমসমূহে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
যতক্ষণ লাভই অর্থনীতির সর্বাধিক নীতি হিসেবে থাকবে, ততক্ষণ সামাজিক ও পরিবেশভিত্তিক কর্মসূচির উপর পুরোপুরি নির্ভর করা যায় না। পুরো কৌশলটি হবে অর্থনীতির বৃদ্ধির সাথে সাথে মোট অর্থনীতির সামাজিক ব্যবসায়ের অনুপাত বাড়ানো।
সামাজিক ব্যবসায়ের সাফল্য কেবল তখনই দৃশ্যমান হবে যখন এটি অর্থনীতির বড় অংশে বৃদ্ধি পাবে; উভয় ধরণের ব্যবসা করে এমন উদ্যোক্তার সংখ্যাও দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। এর পর সামাজিক ও পরিবেশ সচেতনতাভিত্তিক অর্থনীতি পরিচালিত হয়ে নতুন যুগের সূচনা করবে।
# মাইনিচি শিম্বুন: সামাজিক ব্যবসায়ের ধারণার মূল চাবিকাঠিটি কোথায় থাকে?
# ড. মুহাম্মদ ইউনূস: প্রতিটি মানুষই বিশ্ব পরিবর্তনের ক্ষমতা রাখে এই চিন্তা থেকে সামাজিক ব্যবসায়ের ধারণাটি উদ্ভূত হয়। নিজের দক্ষতা দিয়ে সমাজে পরিবর্তন আনার বিশ্বাস সামাজিক ব্যবসায়ের প্রতি আগ্রহী হওয়া ও এটিকে সফল করার মূল চাবিকাঠি। এই বিশ্বাস প্রত্যেক ব্যক্তির মধ্যে তার পরিবারে তার লালন-পালনের মাধ্যমে ও শিক্ষার মাধ্যমে গড়ে উঠেছে ।
আজ, আমরা পরিবার ও স্কুল উভয় জায়গায় বিপরীতমুখী কাজ করি। আমরা আমাদের সন্তানদেরকে সেরা সংস্থায় সেরা চাকরির সন্ধানের জন্য প্রস্তুত হতে উৎসাহিত করি। একটি চাকরিকে মানুষের নিয়তি হিসাবে ধরে নেওয়া হয়। আমরা সকল জমে থাকা সামাজিক সমস্যাগুলো সরকারের কাঁধে ছেড়ে দেই। সকল সামাজিক সমস্যা সমাধানের জন্য সরকারই একমাত্র দায়িত্ব নেয়। নাগরিকদের ভূমিকা আইন মানা ও কর প্রদান করা। নাগরিকদের কখনই বলা হয় না যে তাদের প্রত্যেকে তাদের চারপাশের সমস্যাগুলো সমাধান করার ক্ষমতা রাখে। এই সচেতনতা সামাজিক ব্যবসায়ের দিকে পরিচালিত করে, যা দিয়ে সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
মহামারী পরবর্তী পুনর্গঠন কর্মসূচি অবশ্যই নাগরিক ও সরকারের মধ্যে কাজগুলো প্রথাগত বিভাজন ভেঙে ফেলবে। এটা বিবেচনা করা হয় যে নাগরিকদের ভূমিকা তাদের পরিবারের যত্ন নেওয়া ও কর প্রদান রা। আর জলবায়ু, চাকরি, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, পানির মতো সকল সম্মিলিত সমস্যাসহ অলাভজনক খাতের দায়িত্বও সরকারের।
সমাজ বিনির্মাণে এই বিভাজন প্রাচীরটি ভেঙে দেওয়া উচিত। সমাজ গঠনে সকল নাগরিককে এগিয়ে আসতে ও সমস্যা সমাধানকারী হিসাবে তাদের প্রতিভা দেখানোর জন্য উৎসাহিত করা উচিত। তাদের শক্তি তাদের উদ্যোগের আকারে নয়, তবে সংখ্যায়। প্রতিটি ছোট উদ্যোগ বৃহৎ সংখ্যা ধারণ করে একটি উল্লেখযোগ্য জাতীয় পর্যায়ের কাজে পরিণত হবে।
করোনা উত্তর হতাশা পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার তাৎক্ষণিকভাবে এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে ও এমন ক্রিয়াকলাপ বাড়িয়ে তুলতে পারে। যা আমরা আগে কখনও দেখিনি। তাতে একদিকে সরকারের নেতৃত্বের পরীক্ষা হবে অন্যদিকে তাতে উৎসাহিত হবে যুবক, মধ্যবয়সী ব্যক্তি ও বৃদ্ধসহ নারী-পুরুষ উভয়। তারা পুরোপুরি অজানা উপায়ে কোন জগতকে কীভাবে পুনর্গঠনে অনুপ্রেরণা দেওয়া যেতে পারে তা শেখাবে।
# মাইনিচি শিম্বুন: কিউবা ও অন্যান্য জায়গায়, সমাজতন্ত্র ভালভাবে কাজ করে না, যা বাজারের নীতিগুলো প্রবর্তনের দিকে পরিচালিত করে। এমন লোক আছে যারা বলে যে তারা আর্থিক পুরস্কার ছাড়া কাজ করবে না । বিষয়টি কিভাবে দেখেন?
# ড. মুহাম্মদ ইউনূস: মানুষ কেন আর্থিক সুবিধা পেতে চায়? কারণ আমরা নিজের ঘর, স্কুল ও কর্মক্ষেত্র সর্বোত্র এই শিক্ষা পেয়েছি। আর্থিক সুবিধা পাওয়া ছাড়া কাজের জন্য অন্য অভিজ্ঞতা আমাদের নেই। সিনেমায় অনেক কিছু দেখা যায় তবে সিনেমা শেষে কিন্তু আমাদের আবার বাস্তব জীবনে ফিরে আসতে হয়। অর্থনীতির তত্ত্বও বাস্ববিক হতে হবে। অর্থনীতির পুনর্গঠন প্রয়োজন। এটি করতে হবে বাস্তব মানুষের জন্য কৃত্রিম অর্থনৈতিক মানুষের জন্য নয়।
মানুষ কেন আর্থিকভাবে লাভবান হতে চায়? কারণ আমরা নিজের ঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্র থেকে এটাই শিখেছি। এর বাইরে আমাদের আর কোনো অভিজ্ঞতা নেই। বিশ্বজগতকে আরও উন্নততর স্থানে পরিণত করার জন্য আশ্চর্যজনক ত্যাগ স্বীকার করে বিশ্বজুড়ে এমন অনেক দৃষ্টান্ত রয়েছে।
# মাইনিচি শিম্বুন: সার্বজনীন বেসিক ইনকামের সাথে আমি একমত নই। এটি বিশেষ সময়ের জন্য হতে পারে তবে সব সময়ের জন্য হতে পারে না। বিশেষ অবস্থায় যেমন- দুর্যোগকালে আবার বিশেষ প্রয়োজনে অসুস্থদের বেলায় হতে পারে। এটি সব নাগরিকের জন্য সব সময় হতে পারে না। সার্বজনিন বেসিক ইনকাম একদিকে আত্মনির্ভরশীলতা কমিয়ে অন্যদিকে নির্ভরশীলতার দিকে ধাবিত করে। কর্মক্ষম সমাজ গঠনে নাগরিকদেরকে নিজস্ব সম্ভাবনাকে আবিস্কার করতে উৎসাহ দিতে হবে।
সার্বজনিন বেসিক ইনকাম মানুষের ব্যক্তি উদ্যোগকে ম্লান করে দেয়। কর্মসংস্থান তৈরি সহায়ক অর্থনীতি নির্মাণ করতে হবে। কারো যদি কাজ না থাকে তখন সে রাষ্ট্রীয় সহায়তা নিতে পারে। মানুষের জন্ম হয়েছে উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য চাকরি করার জন্য নয়। নিজের যোগ্যতাকে আবিস্কার করতে হবে। চাকরি মানুষের সৃজনশীলতা বিনাশ করে দেয়। তাই আমি মনে করি সরকারের বেসিক ইনকামের চেয়ে কর্মসংস্থানের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ।
# মাইনিচি শিম্বুন: আমরা বিশ্বকে পুনর্গঠন করতে ব্যর্থ হলে কী হবে?
# ড. মুহাম্মদ ইউনূস: আমরা যদি করোনা উত্তর কোনও সামাজিক ও পরিবেশগত সচেতনতা পুনর্নির্মাণ কর্মসূচি গ্রহণ করতে ব্যর্থ হই তাহলে করোনার যে পরিমাণ পরিস্থিতি নিয়ে এসেছে তার থেকে বহুগুণ খারাপ বিপর্যয়ের দিকে বিশ্বকে যেতে হবে। আমরা করোনা ভাইরাস থেকে নিজেদেরকে বাড়িতে লুকিয়ে রাখতে পারছি, তবে ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক সমস্যাগুলো সমাধান করতে ব্যর্থ হলে, বিশ্বজুড়ে প্রকৃতি জননী রুদ্ধমূর্তি ধারণ করবে তখন মানুষ নিজেদেরকে আড়াল করার কোনও জায়গাই পাবে না।
সৌজন্যেঃ বিবেক বার্তা, জাপান
১৩ই মে ২০২০