Type Here to Get Search Results !

বাগ্দেবী সরস্বতীর উদ্ভব ও ক্রম বিকাশ: ড.আশীষ কুমার বৈদ্য, ত্রিপুরা

বিদ্যার অধিষ্ঠাত্রী দেবী রূপে সরস্বতী শ্রদ্ধালু হিন্দুদের কাছে বাগ্দেবী রূপে সম্পূজিতা।বিশ্বের নানা  দেশে সরস্বতী দেবীর অনুরূপ দেবী আছেন। হিন্দুদের প্রাচীনতম ধর্মগ্রন্হ বেদ-এ সরস্বতীকে জলভারে পরিপূর্ণ একটি নদি রূপে বর্ণনা করা হয়েছে।বৈদিক আর্যগণ  পুণ্যতোয়াএই নদির জলে উর্বর ব্রম্মাবর্ত উপত্যকায় শস্যক্ষেত্র সহ প্রাণ ধারণের যাবতীয় উপকরণ পেয়ে বসবাস ও যাগযজ্ঞের উপযুক্ত স্হান হিসেবে গ্রহণ করেন।সারস্বত জনের সাধনা স্হল রূপে এই নদির নাম হয় সরস্বতী।যাবতীয় জ্ঞানের সারাৎসার অর্জনার্থে এই নদির তীরদেশে নিত্য বেদ মন্ত্র উদ্গীত হতো।সারস্বত ভাবনার অনুকূল পবিত্র বলে,ঋষিগণের আশ্রমে প্রয়োজনীয় জলের-ফলের যোগান দিত এই নদি ও তার তীরভূমি।এই ভাবনা থেকেই প্রকৃতি পুন্জের অন্যতম অংশ এই নদির পূজা প্রচলিত ক্রমে হয়েছিল ,যেমনটি দেখা যায় গঙ্গা-যমুনা বন্দনার মধ্যে।#বাগ্দেবী রূপে কোন দেবীর কথা বেদ গ্রন্হে উল্লেখ নেই।সরস্বতী নদি যাবতীয় কল্যাণমুখী বিদ্যার  ও সকল নদ-নদির অধিষ্ঠাত্রী দেবী রূপে পরিকীর্তিতা।কালক্রমে পৌরাণিক শাস্ত্রে দেবী সরস্বতীর উদ্ভব পরিলক্ষিত হয়।বলা হয়-বিদ্যার অধিষ্ঠাত্রীর কৃপায় বাক্ শক্তির উন্মেষ ঘটে।তাই তাঁর অপর নাম বাগ্দেবী।দেবী রূপে সরস্বতী মনে প্রজ্ঞা-প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেন।মনের মালিন্য দূর করেন।তিনি সদ্ভাবনায় উন্নত ও রুচিশীল অভিমুখে চালিত করেন।অবশ্য এই সব সদ্গুণ লাভের জন্য ভক্তিযুক্ত সাধনা ও উপযুক্ত জীবন চর্যা প্রয়োজন।দেবী যজ্ঞশালিনী ও সত্য-সুন্দরের  উপাসিকা ও সত্যান্বেষী মানব হৃদয়ে জ্ঞান-জ্যোতির সঞ্চারিকা। পৌরাণিক শাস্ত্রে বলা হয়েছে ইনি পরম ব্রম্মের মুখ নিসৃতা।সর্বশুক্লা চতুর্ভুজা দেবী ভগবান শ্রীকৃষ্ণ থেকেই আবির্ভূতা-এমনটাই ব্রম্মবৈবর্ত পুরাণে বর্ণিত হয়েছে।শ্রীকৃষ্ণই তাঁকে প্রথম পূজা করেন বলেও এই পুরাণে লেখা হয়েছে।দেবী ভাগবতে দেবী সরস্বতীকে প্রজাপতি ব্রম্মার পত্নী রূপে বর্ণনা করা হয়েছে।অবশ্য ব্রম্মবৈবর্ত পুরাণে বলা হয়েছে-ধনদেবী লক্ষীর ন্যায় বাগ্দেবী সরস্বতীও পালনকর্তা নারায়নের পত্নী।শুক্লবর্ণা,চতুর্ভূজা দেবীর এক হাতে বীণাযন্ত্র,এক হাতে জ্ঞান-বানী পূর্ণ মহা গ্রন্হ।এক হাতে শুদ্ধ সত্বা ও সৌন্দর্যের  প্রতীক প্রস্ফুটিত কমল।অন্য হাতে আশীর্বাদ জ্ঞাপক তথা বর -মুদ্রা।বিদ্যার অধিষ্ঠাত্রী দেবীর আরাধনার পুণ্য লগ্নে দেবীর পদমূলে প্রণামান্জলি নিবেদন করি।শুধু পূজা-পাঠেই জননী তুষ্ট হননা।চাই শুদ্ধ চেতনা,ভক্তি,নিয়ত অধ্যয়ন,মানসিক শুচিতা, সকল কাজে মঙ্গলমুখী নিষ্ঠাবন্ত নিরন্তর প্রয়াস,অধ্যবসায়।


ড.আশীষ কুমার বৈদ্য

 ত্রিপুরা


১৬ই ফেব্রুয়ারি ২০২১
 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.