সোমবার (১৭ মে) ভোর পাঁচটা থেকে শুরু হচ্ছে করোনা কারফিউ। দশ দিনের জন্য লাগু হওয়া এই কারফিউ চলবে ২৬ মে পর্যন্ত। করোনা সংক্রমণের হার বাড়তে থাকায় রাজ্য সরকার এই সিদ্ধান্ত নেয় বলে রবিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একথা জানান আইনমন্ত্রী রতন লাল নাথ। সমগ্র আগরতলা পুর নিগম এলাকায় করোনা কারফিউ জারি থাকবে। এছাড়াও আটটি এলাকের সম্পূর্ণ কনটেইনমেন্ট জোন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এগুলি হচ্ছে উদয়পুর পুর পরিষদ, বিশালগড় পুর পরিষদ, কৈলাসহর পুর পরিষদ, রানীরবাজার পুর পরিষদ, পানিসাগর, অমরপুর নগর পঞ্চায়েত, শালবাগান বিএসএফ পাড়া এবং নাগিছড়া গ্রাম। শ্রীনাথ বলেন, শনিবার আগরতলা পৌরনিগম এলাকায় পজিটিভিটি হার ছিল ৯.২৫ শতাংশ, তার আগেরদিন ছিল ৭.৬৯ শতাংশ। এই অবস্থায় শনিবার উপমুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে সচিবালয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়। সেখানেই আর দেরি না করে করোনা কারফিউ জারি করার সিদ্ধান্ত হয়। জনগণের অসুবিধা হবে জেনেও সরকারক এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয় বলে জানান মন্ত্রী শ্রীনাথ। করোনা কারফিউ চলাকালীন একমাত্র জরুরী পরিষেবার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরাই রাস্তায় বের হতে পারবেন বলে জানানো হয়। এর মধ্যে ধরা হয়েছে আইন-শৃঙ্খলার সঙ্গে জড়িত জওয়ান বা কর্মচারীরা, পুর নিগম ও জেলা প্রশাসনের কর্মীরা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, পানীয় জল, অগ্নিনির্বাপক, আদালত, খাদ্য ও জনসংভরন বন এবং বিপর্যয় মোকাবেলা বিভাগ। নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকান যেমন খাদ্য, মুদিখানা, ফল, সবজি, দুধ, মাছ, মাংসের দোকান সকাল ৫ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। হকাররা ফল, সবজি, মাছ নিয়ে বের হতে পারবেন। তবে শপিং মল, মার্কেট কমপ্লেক্সগুলি বন্ধই থাকবে। আন্তঃরাজ্য বাস পরিষেবা খোলা থাকলেও অন্য কোন জেলা থেকে যানবাহন আগরতলা পুর নিগম এলাকায় আসতে পারবে না। জরুরি প্রয়োজনের ক্ষেত্রে মানুষ হালকা যানবাহন যেমন অটোরিকশা, ই-রিক্সা ব্যবহার করতে পারবেন। তাছাড়া যোগ্য লোকেরা ন্যূনতম একটি প্রমানপত্র নিয়ে টিকাকরণের জন্য যেতে পারবেন। পেট্রোল পাম্প, সিএনজি স্টেশন, এলপিজি খোলা থাকবে। ব্যাংক,এটিএম খোলা থাকবে। রেস্তোরাঁগুলি খোলা থাকলেও শুধুমাত্র হোম ডেলিভারি করতে পারবে। জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে রাত দশটার মধ্যে ৫০ জন লোকের উপস্থিতিতে বিয়ের অনুষ্ঠান সাড়তে হবে। সব যাত্রায় ২০ জনের বেশি লোক থাকতে পারবেন না। ডাক এবং ক্যুরিয়ার সার্ভিস,টেলিকমিউনিকেশন, ইন্টারনেট পরিষেবা, কেবল পরিষেবাও জরুরী পরিষেবা আওতার মধ্যে থাকছে। করোনা কারফিউর মধ্যে বিনা প্রয়োজনে কোন ব্যক্তি পায়ে হেঁটে বা যানবাহন নিয়ে চলাফেরা করতে পারবেন না। সমস্ত শপিংমল, সিনেমা হল, জিম সেন্টার, স্পোর্টস কমপ্লেক্স, স্টেডিয়াম, সুইমিংপুল, থিয়েটার, অডিটোরিয়াম, পার্ক বন্ধ থাকবে। আমজনতার জন্য সমস্ত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। কোনো রকম রাজনৈতিক, ধর্মীয়, বিনোদনমূলক সাংস্কৃতিক এবং খেলাধুলার অনুষ্ঠান করা যাবে না। পশ্চিম ত্রিপুরার জেলা শাসক এক বিজ্ঞপ্তিতে এই নির্দেশিকা জারি করেছেন। যে সকল ব্যক্তি আইন লঙ্ঘন করবেন তাদের বিরুদ্ধে আইপিসি ১৮৮ ধারা এবং অন্যান্য আইন অনুযায়ী কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরশিকথা ত্রিপুরা সংবাদ
১৬ই মে ২০২১