তারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায় বিংশ শতাব্দীর একজন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক। শরৎচন্দ্রের পর কথাসাহিত্যে যারা জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তারাশঙ্কর ছিলেন তাদের অন্যতম। মহান এই কথাসাহিত্যিক আঠার'শ আটানব্বই খ্রীষ্টাব্দের চব্বিশে জুলাই পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার লাভপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর সামগ্রিক সাহিত্যকর্মের মধ্যে রয়েছে পয়ষট্টিটি উপন্যাস, তিপ্পান্নটি গল্প গ্রন্থ, বারটি নাটক, চারটি প্রবন্ধের বই, চারটি আত্মজীবনী এবং দুটি ভ্রমণ কাহিনী। তারাশঙ্করের প্রথম গল্প 'রসকলি' সেকালের বিখ্যাত পত্রিকা 'কল্লোলে' প্রকাশিত হয়। এছাড়াও 'কালি কলম', 'বঙ্গশ্রী' , 'শণিবারের চিঠি', 'প্রবাসী', 'পরিচয় " প্রভৃতি প্রথম শ্রেণীর পত্রিকায় তাঁর লেখা প্রকাশিত হতে থাকে। বীরভূম,বর্ধমান অঞ্চলের মাটি ও মানুষ, স্বাধীনতা আন্দোলন, যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ, অর্থনৈতিক বৈষম্য, ব্যক্তির মহিমা, বিদ্রোহ ইত্যাদি তাঁর উপন্যাসের বিষয়বস্তু ছিলো।
তিনি সব মিলিয়ে প্রায় দুশো গ্রন্থ রচনা করেছেন। তার মধ্যে বিশেষভাবে উল্খেযোগ্য 'জলসাঘর ', 'কালিন্দী ', 'গণদেবতা ', 'পঞ্চগ্রাম', 'কবি ', 'আরোগ্য নিকেতন' ইত্যাদি। তারাশঙ্করের উপন্যাস, নাটক ও গল্প নিয়ে চল্লিশটিরও বেশী চলচিত্র নির্মাণ করা হয়েছে। সত্যজিত রায় তাঁর 'জলসাঘর ' এবং 'অভিযান ' উপন্যাসের সফল চিত্রায়ন করেছেন।
উনিশ'শ ছেষট্টি খ্রীষ্টাব্দে তিনি ভারত সরকারের 'পদ্মশ্রী" এবং উনিশ'শ আটষট্টি খ্রীষ্টাব্দে 'পদ্মভূষণ ' উপাধিতে ভূষিত হন। এছাড়াও এই মহান কথাসাহিত্যিক 'রবীন্দ্র পুরস্কার ', ' সাহিত্য একাডেমী পুরস্কার ', জ্ঞানপীঠ পুরস্কার' এ পুরস্কৃত হন। উনিশ'শ একাত্তর সালের চৌদ্দই সেপ্টেম্বর তিনি পরলোক গমন করেন।
মৌসুমী কর
সম্পাদক, সাহিত্য বিভাগ
আরশিকথা গ্লোবাল ফোরাম
১৪ই সেপ্টেম্বর ২০২১