নাটক হলো সাহিত্য সংস্কৃতির প্রতিটি শাখার মিলিত এক গুচ্ছ ফুলের সৌরভ। সঙ্গীত ,কবিতা, হাস্যরস, করুণরস, যে কোন সিরিয়াস বিষয়, খেলাধুলা, কাবুকি ঢং অর্থাৎ মানব জীবনের প্রতিটা মুহুর্তের প্রতিটা অনুভূতি নাটক বা নাট্যরসের মধ্য দিয়ে শ্রুোতা ও দর্শকের হৃদয়কে স্পর্শ করতে পারে। রবীন্দ্রনাথ বলেছেন- পৃথিবীতে দু'ধরনের চাষ হয়। একটি কৃষি চাষ, অপরটি মনের জমি চাষ। আর মনের জমি চাষই হলো সংস্কৃতি । আর নাটক হলো, সংস্কৃতি চর্চার অন্যতম আকর্ষণীয় একটি মাধ্যম ।
সাহিত্যের আলঙ্কারিগণ নাট্য সাহিত্যকে সকল প্রকার কাব্য সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ বলে উল্লেখ করেছেন।নাটক দৃশ্য ও শ্রব্য উভয়ের সমন্বয়ে রঙ্গশালার মাধ্যমে কুশীলবরা মানব জীবনের প্রতিচ্ছবি দর্শক ও শ্রোতাদের সামনে মূর্ত্ত করে তুলে। কুশীলবদের অভিনয় নৈপুণ্য নাটকের কঙ্কালদেহে প্রাণ সঞ্চার করে।
নাটক লোক শিক্ষার বিশাল একটি সরল ও সহজ মাধ্যম ও বটে। সমাজের যে শ্রেণীর কাছে সাহিত্য তার প্রকৃতিগত দুর্বোধ্যতার জন্য পৌঁছতে অক্ষম, সেখানে নাট্যরসের মাধ্যমে সাহিত্যের যে কোন কঠিন বা জটিল বিষয় অতি সহজেই সরল ভাবে পৌঁছে যেতে পারে বা হৃদয়াঙ্গম করে তুলতে পারে সেই শ্রেণীর লোকদের কাছে। তাই একবিংশ শতাব্দীতে ও যেখানে মানুষ মহাশূণ্যে ঘুরে বেড়ানোর দক্ষতা অর্জন করেছে , সেখানেও সাহিত্যের সকল পরিসরে অবাধ গতিবিধির জন্য নাটকের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য ।
আজকের সামাজিক প্রেক্ষাপটে একমাত্র নাটকই পারে হতাশার বিরুদ্ধে জীবনকে তাৎপর্যময় করে গড়ে তোলার প্রেরণা দিতে।
তাই সংস্কৃতির এই শ্রেষ্ঠ মাধ্যমটিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে নিরলস প্রচেষ্টা ও চর্চার মধ্য দিয়ে।
সসীম আচার্য, ত্রিপুরা
সহ-সম্পাদক, সংস্কৃতি বিভাগ
আরশিকথা গ্লোবাল ফোরাম
আরশিকথা হাইলাইটস
১৮ই সেপ্টেম্বর ২০২১