Type Here to Get Search Results !

সোমবার থেকে রাত ৯টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত রাত্রিকালীন কার্ফু, রাজ্য সরকার কোভিড মোকাবিলায় সম্পূর্ণ প্রস্তুত : তথ্য মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি,আগরতলা,আরশিকথাঃ


রাজ্য সরকার কোভিডের তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত। পর্যাপ্ত ঔষধপত্র, অক্সিজেন প্ল্যান্ট সহ প্রয়োজনীয় সবরকম চিকিৎসা সরঞ্জাম যথেষ্ঠ মজুত রয়েছে। রবিবার মহাকরণে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী কোভিড মোকাবিলায় রাজ্য সরকারে গৃহীত উদ্যোগ এবং বিভিন্ন সতর্কতামূলক ব্যবস্থার সিদ্ধান্ত সমূহ তুলে ধরেন। একইসঙ্গে তিনি রাজ্যবাসীর প্রতি আহ্বান জানান, নিজের পরিবার, সমাজ ও রাজ্যের জনগণের স্বার্থে কোভিড সতর্ক বিধিসমূহ মেনে চলার। তিনি বলেন, গতকাল রাজ্যের মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে এবং আজ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের পৌরহিত্যে অন্যান্য মন্ত্রীদের উপস্থিতি কোভিড পর্যালোচনায় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কোভিড মোকাবিলায় বেশকিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

তথ্যমন্ত্রী শ্রী চৌধুরী জানান, রাজ্যে কোভিড সংক্রমণের প্রভাব বৃদ্ধির ফলে সার্বিক অবস্থার বিবেচনা করে সোমবার অর্থাৎ ১০ জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৯টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত রাত্রিকালীন কার্ফু বলবৎ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী ২০ জানুয়ারি, ২০২২ পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। তিনি বলেন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অভিমত অনুযায়ী জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি এই দুইমাস সংক্রমণ হার দ্রুত বাড়তে পারে। তাই সেই সংক্রমণ মোকাবেলিয় জনসাধারণকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী শ্রী চৌধুরী আহ্বান জানান। এক্ষেত্রে মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহার এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা তিনি ব্যক্ত করেন। কোভিড মোকাবিলায় রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের পরিকাঠামো এবং বিভিন্ন ব্যবস্থাদির উল্লেখ করে তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী শ্রী চৌধুরী জানান, রাজ্যে মোট কোভিড চিকিৎসার বেড রয়েছে ২৫৬২টি। তারমধ্যে গুরুতর রোগীদের জন্য ৭০০টি বেডের ব্যবস্থা রয়েছে। এরমধ্যে ৩৩০টি বেড রয়েছে পশ্চিম জেলায়। যদি প্রয়োজন হয় তবে সেই বেডের সংখ্যা আরো বাড়ানো হতে পারে। রাজ্যে অক্সিজেনের কোন ঘাটতি নেই। ২২টি অক্সিজেন প্ল্যান্ট চালু রয়েছে। তাছাড়া অক্সিজেন সিলিন্ডার কনসেনট্রেটর, পালস অক্সিমিটার, ভেন্টিলেটর যথেষ্ঠ মজুত রয়েছে। প্রয়োজন অনুসারে তা বাড়তে পারে। তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই এয়ারপোর্ট, রেলস্টেশন, চোরাহবাড়ি, আখাউড়া চেকপোস্টের মাধ্যমে বহি:রাজ্য থেকে আগত সকলকে কোভিড পরীক্ষা করা হচ্ছে। রাজ্যের প্রতিটি জেলাতেই কোভিড চিকিৎসার জন্য ৫০টি করে বেড থাকবে সমস্ত সুবিধা সহ। তাছাড়া প্রতিটি জেলাতেই কোভিড কলসেন্টার এবং গ্রিভেন্স রিড্রেশাল সেল চালু করা হচ্ছে। জেলাতেই যাতে রোগী চিকিৎসার সুযোগ পেতে পারেন এবং আগরতলায় যাতে চাপ না পড়ে সেদিকে লক্ষ্য রেখেই জেলা সমূহে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে শক্তিশালী করা হয়েছে বলে শ্রী চৌধুরী জানান। তিনি বলেন, কোভিড পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করার জন্য জরুরী ভিত্তিতে কন্ট্রাক হিসেবে ডাক্তার, নার্স, এমপিডব্লিউ, ল্যাব টেকনিশিয়ান এবং সুইপিং স্টাফ সহ প্রায় ৫০০ জনকে নিযুক্ত করা হবে। শ্রী চৌধুরী বলেন, সারা দেশের সাথে রাজ্যেও কোভিডের প্রভাব বাড়ছে, তবে বিশেষজ্ঞদের অভিমত ও প্রোজেশন অনুসারে রাজ্যেও সংক্রমিতের সংখ্যা প্রায় ৩২ হাজার ছাপিয়ে যেতে পারে। এরমধ্যে শিশুরাও আক্রান্ত হতে পারে। তাই কোভিড চিকিৎসা পরিষেবায় আগরতলাতে আইসিইউ সুবিধা সহ ২১৬টি বেড শিশুদের জন্য রয়েছে। তিনি বলেন, রাজ্যে ঔষধের মজুত যথেষ্ঠ রয়েছে। ১৫-১৮ বছর বয়সীদের টিকাকরণের বিষয়ে তিনি জানান, গত ৩ জানুয়ারি থেকে এই বয়সীদের টিকাকরণ শুরু হবার পর এখন পর্যন্ত ৭৭০৫৭ জনকে প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে। সাফল্যের হার ৩৬ ১৮ শতাংশ। লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ২ লক্ষ ১৩ হাজার। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর তিনি জানান, যে সমস্ত স্কুলে পরীক্ষা চলছে সেই সমস্ত স্কুল ছাড়া বাকি সব স্কুল, কলেজ বন্ধ থাকবে। এ বিষয়ে শিক্ষা দপ্তর থেকে বিশদ জানিয়ে দেওয়া হবে। বেসরকারি গাড়িসমূহ যাতে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে না চলে সে বিষয়েও পরিবহণ দপ্তর প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে। পৌষ সংক্রান্তি মেলা প্রসঙ্গে মন্ত্রী শ্রী চৌধুরী জানান, এবছর তীর্থমুখে লোক সমাগমের জন্য সরকারিভাবে আগের মতো কোন গাড়ি দেওয়া হবে না। যাতে ভীড় এড়ানো যায়। এছাড়া আগরতলা পুর নিগম এলাকায় যেহেতু সংক্রমণের হার বেশি তাই এই এলাকা থেকে কোন ব্যবসায়ী বন্ধুরা যাতে তীর্থমুখ মেলায় না যান সেজন্য মন্ত্রী শ্রী চৌধুরী অনুরোধ জানান। বিগত দু'দিনের সংক্রমণের হার বৃদ্ধির প্রবণতা আগরতলা পুর নিগম এলাকা এবং পশ্চিম জেলায় সবচেয়ে বেশি। সারা রাজ্যে পজেটিভিটির হার ৫ শতাংশ। তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী শ্রী চৌধুরা আশা ব্যক্ত করে বলেন, সতর্কতা অবলম্বন করলে সংক্রমণ হার কমিয়ে আনা সম্ভব। সংক্রমণ কমলে সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর নিয়মবিধি লাগু করার প্রয়োজন নেই।
সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্য সরকারের অতিরিক্ত সচিব অনিন্দ্য ভট্টাচার্য এবং স্টেট সার্ভাইলেন্স অফিসার ডা. দীপ কুমার দেববর্মা উপস্থিত ছিলেন।


আরশিকথা ত্রিপুরা সংবাদ


ছবিঃ সুমিত কুমার সিংহ

৯ই জানুয়ারি ২০২২
 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.