Type Here to Get Search Results !

২০২২ এর জাতীয় বিজ্ঞান দিবস ও আমরা ঃ শৈবাল রায়, ত্রিপুরা

১৯২১ সাল । ইংল্যান্ড থেকে ফিরছিলেন এক ভারতীয় যুবক। সে সময়ে সাধারণ মানুষেরা উড়োজাহাজে চড়তেন না। তারা চড়ার সুযোগ পেতেন জাহাজে। জলপথে ভ্রমণ করার সময় যুবকটির মাথায় একটি প্রশ্ন এলো – সাগরের জলের রং কেন নীল ? আমরা জানি যে, কখনও কোনো বিশেষ বিশেষ মানুষদের মাথায় যদি এধরণের তথাকথিত সাধারণ প্রশ্ন একবার ঢুকে যায় তাহলে যুগান্তকারী আবিষ্কার হয়ে যেতে পারে। আপেল কেন মাটিতে পড়ে ? এই প্রশ্নের কথা সারা দুনিয়ার মানুষ জানে। 

    এবারও তার ব্যতিক্রম হলো না। সেদিনের সেই যুবকটির নাম ছিল চন্দ্রশেখর ভেঙ্কটারমন। সংক্ষেপে সারা দুনিয়া যাকে সি ভি রমন নামেই চেনে। ১৯০৭ সালে মাদ্রাজের প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ১৯ বছর বয়সে পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পেয়ে গিয়েছিলেন। তিনি তখন আলোকবিদ্যা এবং ধ্বণিবিদ্যা নিয়ে গবেষণা করছিলেন। “সাগরের জলের রং কেন নীল ?” এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতে ১৯২৮ সালের ২৮শে ফেব্রুয়ারী  তিনি দুনিয়াকে উপহার দিলেন তাঁর গবেষণার ফল “রমণ এফেক্ট”। এটা বিজ্ঞানীদের কাছে এতটাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে ১৯৩০ সালে তাঁকে এই আবিষ্কারের জন্য পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। 

১৯৮৬ সালে ভারতের ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি কমিউনিকেশন সিদ্ধান্ত নেয় ১৯২৮ সালের ২৮শে ফেব্রুয়ারী সি ভি রমণের এই আবিষ্কারের ঘটনাকে স্মরণীয় করে রাখতে ২৮শে ফেব্রুয়ারী দিনটিকে ভারতের জাতীয় বিজ্ঞান দিবস হিসাবে পালন করা হবে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৯৮৭ সাল থেকে ২৮শে ফেব্রুয়ারী জাতীয় বিজ্ঞান দিবস হিসাবে পালিত হয়ে আসছে। এবছর তাই ৩৬তম বিজ্ঞান দিবস। 

প্রতি বছরই বিজ্ঞান দিবসে একটি থিম ঘোষণা করা হয়। যে থিমকে ভিত্তি করে সারা বছর দেশে বিজ্ঞান সচেতনতার কাজ করে যাবার কথা। এবছরের থিম হলো “Integrated approach in science and technology for a sustainable future” বাংলায় বলা যেতে পারে -  "টেকসই ভবিষ্যতের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সমন্বিত পদ্ধতি বা পন্থা"। 

প্রতি বছর ঘটা করে বিজ্ঞান দিবস পালন করা হলেও সংবিধানে লিখিত বিজ্ঞান সচেতন মানুষ গড়ে তোলার কাজ থেকে আমরা শত শত যোজন পেছিয়ে আছি। কি সরকারি স্তরের বিভিন্ন সিদ্ধান্তে , কিংবা ব্যক্তিগত আচার আচরণে আমরা বিজ্ঞান মানসিকতা গড়ে তোলার কাজে কতটা এগিয়ে যেতে পেরেছি বিজ্ঞান দিবস প্রতিপালন করার পর থেকে – এই মূল্যায়ন যে আজ আমাদেরকেই করতে হবে ।  ভাবতে হবে , কেন পারছি না ।


শৈবাল রায়, ত্রিপুরা


আরশিকথা অতিথি কলাম

২৮শে ফেব্রুয়ারি ২০২২

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.