Type Here to Get Search Results !

শহীদ দিবস থেকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসঃ প্রসঙ্গ '৫২ সালের ভাষা আন্দোলনঃ ডঃ মুজাহিদ রহমান, ত্রিপুরা

"আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি

আমি কি ভুলিতে পারি।"


না, আমরা ভুলতে পারিনা; এই ভূমন্ডলের কোন মানুষই ভুলতে পারেনা। আবদুল গফ্ফার চৌধুরী সাহেব ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারির সেই ঘোরতর দুর্দিনে আপনি যে অমূল্য কথামালা রচনা করেছিলেন এবং আলতাফ মাহমুদের সুরে উক্ত কথামালা সমগ্র জাহানের বাংলা ভাষাভাষী নয়, অন্য ভাষার মানুষের মনেও চিরদিনের জন্য গেঁথে গেছে। যতদিন বাংলা ভাষা বাঁচবে ততদিন এই কথা মালা সুর ও ছন্দে আমাদের সকলের হৃদমাঝারে বাজবে। ঐদিন বাংলা ভাষার স্বীকৃতির দাবিতে মিছিল বেরিয়েছিল ঢাকার বুকে। পাক পুলিশ বাহিনী গুলি ছুড়ে। মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে তরুণ ছাত্র যুবক ভাই আব্দুস সালাম, রফিক উদ্দিন আহমেদ, আবুল বরকত এবং আব্দুল জব্বার প্রমুখ। আরো অনেকে হতাহত হয়েছিল। আপনিও ছাত্র ছিলেন। স্বভাবতই গিয়েছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজে। আপনার আমার আত্মার আত্মীয়দের খোঁজ নিতে; মুণ্ডহীন ক্ষতবিক্ষত দেহ দেখে আপনার কলম থেকে ওই ঐতিহাসিক কথাগুলো ঝর্ণাধারার মতো ঝরে পড়ে।

        কেন একুশ রক্তে রাঙানো? কেন তাজা রক্তে ভিজে গেল ঢাকার নরম মাটি? কেন পড়াশোনা বন্ধ রেখে রাজপথে প্রতিবাদ মিছিল? কেন ব্যবসা বাণিজ্য, কাজকর্ম ফেলে সাধারণ মানুষের মিছিলে অংশগ্রহণ? আমাদের যেতে হবে একটু এগিয়ে। ব্রিটিশ ভারতে ১৯৩০ ও ১৯৪০ এর দশক ছিল রাজনৈতিকভাবে উত্তাল। মুসলিম লীগ পাকিস্তানের দাবিতে অনড়। বলা হলো-মুসলমান ও হিন্দু - দু'টি আলাদা জাতি। কাজেই দুটো দেশ লাগবে। এখানেও রক্ত ঝরেছে। এক সাগর রক্ত। দুটো দেশ হলো-১৯৪৭ সালে। পাকিস্তান ও হিন্দুস্থান। কিন্তু পাকিস্তানের দুটি অঙ্গ। পশ্চিম ও পূর্ব। পশ্চিম ভেবেছিল তারাই আসল মুসলমান। পূর্বের বাংলাভাষাভাষী মুসলমান আসলে নকল। তারা হিন্দুদের সহোদর। তাই সংখ্যাগুরু মানুষের বাংলা ভাষা নিয়ে শুরু হয় রাজনীতি। পাকিস্তানের জনক হিসেবে আখ্যায়িত জিন্নাহ সাহেব হুংকার দিলেন-উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। ১৯৪৮ সালের মার্চ মাসে ঢাকায় এসেও তিনি একই কথা বলেন। তাঁর সভাতেই ছাত্ররা No, No বলে প্রতিবাদ ধ্বনিত করে। এই প্রতিবাদ ছিল অকল্পনীয়, তবুও হলো। 

     এদিকে পাকিস্তান Constituent Assembly তে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিনিধি ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত বাংলা ভাষার স্বীকৃতি দাবি করাতে তদনীন্তন পাক প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান ভীষণ রাগান্বিত সুরে বলেন - "Pakistan is a Muslim state ..... And the language can only be Urdu and no other language" (২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৮ সাল)

        নভেম্বর, ১৯৪৭। করাচি। National Education Summit প্রস্তাব পাস করে বলল উর্দু এবং ইংরেজি হবে রাষ্ট্রভাষা। সংখ্যাগুরু পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের মাতৃভাষা উপেক্ষিত। পূর্ব বাংলার মানুষ এই অবহেলা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারে না। প্রতিবাদ মুখর ঢাকা; প্রতিবাদে সমগ্র পূর্ব বঙ্গ। ভাষাসংগ্রামী আবুল কাসেমের নেতৃত্বে তমাদ্দুন মজলিস এর তীব্র প্রতিবাদ জানায়। এর মধ্যে পাক্ পাবলিক সার্ভিস কমিশন তাদের অনুমোদিত সাবজেক্ট লিস্ট থেকে বাংলা ভাষাকে বাতিল করে। মুদ্রা ও স্টাম্প থেকে সংখ্যাগুরুর ভাষা বাতিল হয়। কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রী জনাব ফজলুর রহমান উর্দুকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেওয়ার জন্য সমগ্র পরিকল্পনা তৈরি করেন।

         ডিসেম্বর ৮, ১৯৪৭। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দান এর জন্য সমগ্র পূর্ব বাংলায় প্রতিবাদ আন্দোলন হয়। এই মাসেই তৈরি হয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ। অধ্যাপক নুরুল হক ভূঁইয়া এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেন। জনাব শামসুল হক (এম. পি) অন্য একটি কমিটি গঠন করে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেওয়ার জন্য জনমত তৈরি করেন।

        মার্চ ১১, ১৯৪৮। ছাত্রদের নেতৃত্বে সারা পূর্ববঙ্গে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেয়। সরকার স্বীকৃত ভাষার মধ্যে বাংলা ভাষার অন্তর্ভুক্তি, মুদ্রা, স্টাম্প এবং নৌবাহিনী পরীক্ষায় বাংলাকে অন্তর্ভুক্ত করার জোরালো দাবি ওঠে। এই মাসেই পাকিস্তানের জনক জিন্নাহ সাহেব ঢাকায় আসবেন সরকারি সফরে। কাজেই পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন তড়িঘড়ি ছাত্রদের ডাকলেন একটা রফা করার উদ্দেশ্যে।

      মার্চ ১৫,১৯৪৮। মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্রে ছাত্র নেতাদের বৈঠক সফল হল। মুখ্যমন্ত্রী ছাত্রদের ৮ দফা দাবি মেনে নিলেন। কিন্তু পাঞ্জাবি মুখ্য সচিব ও আমলা কুল এই ধরনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে বাধা হয়ে দাঁড়ালেন। দুর্দণ্ড প্রতাপশালী জিন্নাহ সাহেবও ছাত্রনেতা ও পূর্ব বাংলার প্রগতিশীল মানুষকে ধর্মের নামে পোষ মানাতে পারলেন না। বরঞ্চ ঘটনা উল্টো খাতে বইতে শুরু করল। বাঙালি জাতীয়তাবাদ মাথাচাড়া দিতে শুরু করে এবং ভাষা স্বীকৃতির ব্যাপারটা সংঘর্ষের রূপ নিতে শুরু করে।

         অক্টোবর, ১৯৫১। পাক প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান আততায়ীর হাতে নিহত হলে খাজা নাজিমুদ্দিন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন এবং ছাত্রদের কাছে দেওয়া তাঁর প্রতিশ্রুতি তিনি ভুলে যান। শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী হয়েই তিনি উর্দুর পক্ষে সওয়াল শুরু করেন। স্বাভাবিক কারণেই পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্রসমাজ অস্থির হয়ে পড়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা লাগাতার হরতালের ডাক দেয়। জনগণও এতে ব্যাপক সাড়া দেয়। ভাষা আন্দোলন গণআন্দোলনের রূপ নেয়।

        ফেব্রুয়ারি ২১, ১৯৫২। পাক সরকার নিষ্ঠুর দমন নীতি গ্রহণ করে। মিছিলে চলে গুলি। রাস্তায় পড়ে লাশ -রক্ত ও মাংস। তাই একুশের রঙ লাল। ফুটে লাল পলাশ। রক্তরাঙ্গা জমিন আসমান। রক্ত যখন ঝরে, প্রাণ যখন ঝরে, তখন তার শেষ পরিণতির জন্য বাঙালি মন ধীরে ধীরে এককাট্টা হয়। ধর্ম তখন তাদের কাছে বড় নয়, বড় হলো ভাষা ও সংস্কৃতি। তাই দিকে দিকে ওঠে আওয়াজ-আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো.....।

       পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী তখন নুরুল আমিন। বিরোধী ও সরকারপক্ষ তাঁকে প্রবল চাপ দেয়। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে তিনি বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দানের জন্য Assembly তে প্রস্তাব পাশ করান এবং পাক Constituent Assembly ১৯৫৪ সালের ৭ই মে বাংলাকে উর্দু সঙ্গে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দান করে। ওই মর্যাদা দান কখনোই আন্তরিক ছিল না। উল্টো পাক সরকার বাংলা ভাষাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য জঘন্য ষড়যন্ত্র শুরু করে। ঢাকা বিমানবন্দর ও বিমানে যে ঘোষণা করা হতো সেখানে উর্দু ও ইংরেজি  ব্যবহৃত হতো। পাক পাসপোর্টে বাংলা ভাষার চিহ্ন ছিল না। সরকারের দলিলপত্র সব উর্দু ও ইংরেজিতে লেখা হতো। সরকারি গেজেট, Constituent Assembly এর সিলে কোন বাংলা হরফ ব্যবহৃত হতো না।

       সমগ্র পাকিস্তানে উর্দু ভাষা ছিল আবশ্যিক; অথচ বাংলা ভাষা নয়। রেডিও ও দূরদর্শনে যেভাবে উর্দুর জয় গান হত, সেভাবে বাংলার নয়। পূর্ববঙ্গের সাইনবোর্ডে উর্দু, ইংরেজি, বাংলা স্থান পেলেও পশ্চিম পাকিস্তানে শুধু উর্দু ও ইংরেজি, বাংলা বাদ। উর্দু ভাষার উন্নয়নে যে টাকা বরাদ্দ হত, বাংলার জন্য তা অনেক কম।১৯৫৪ সালের পর পাক সরকার যেমন তৈরি করেছিল Central Development Board of Bengali অন্যদিকে পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক সরকার করেছিল বাংলা একাডেমি। তবে সবই ছিল বাঙালির চোখে ঠুলি পরাবার প্রয়াস-নগ্ন প্রতারণা। অন্যদিকে পশ্চিম পাকিস্তানের সংবাদপত্রে অনবরত বাংলা ভাষা সম্পর্কে অবমাননাসূচক সংবাদ পরিবেশিত হত।

      পশ্চিম পাকিস্তানীরা ভাবতো যে তারা সাচ্চা মুসলমান-আরবীয় রক্ত তাদের ধমনীতে প্রবাহিত; বাঙ্গালীদের ভাবা হতো নিকৃষ্ট কারণ তারা হিন্দুদের থেকে ধর্মান্তরিত। তারা পবিত্র মুসলমান নয়।

       বাঙ্গালীদের পয়লা বৈশাখ ও প্রাণের কবি রবীন্দ্রনাথকে পাক সরকার কোনভাবেই হজম করতে পারছিল না। বাংলা ভাষাকে আরবি হরফে লেখার দুর্দমনীয় প্রয়াস তারা নিয়েছিল। এমনকি বাংলা হরফ বাদ দিয়ে সেখানে আরবি হরফ ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। বাংলা ভাষা নাকি সংস্কৃত ভাষার দোসর। তাই বাংলা ভাষাকে যেনতেন প্রকারেন ধ্বংস করাই ছিল পাক সরকারের নীতি। কারণ, বাংলা অপবিত্র ভাষা।

        কাজেই পূর্বপাকিস্তানে প্রতিরোধের আগুন জ্বলেছে দিকে দিকে। বাঙালি তখন ধীরে ধীরে জাতীয় সত্তা খুঁজে বেড়াচ্ছে। তারা ধর্মে নয়, ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে বাঁচতে স্বৈরাচারী সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে পহেলা বৈশাখ উদযাপন শুরু করে। ১৯৬১ সালে সামরিক শাসনের শত বাধাকে  পদদলিত করে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের জন্ম শতবর্ষ পালন করে। বাঙ্গালীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা যায়। একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস হিসেবে উদযাপিত হতে শুরু করে। শহীদ স্মরণে লক্ষ লক্ষ মানুষের ঢল নামে সমগ্র পূর্ববঙ্গের রাজপথে, আলপথে। ইতিমধ্যে রাজনৈতিক সংগঠনগুলো এই শহীদ দিবসকে তাদের কর্মসূচির অঙ্গ করে নেয়। শেখ মুজিবর এর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ একটা অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশে বিশাল পদক্ষেপ গ্রহণ করে। যে সামরিক শাসক আইয়ুব খানের শাসনে বাঘে গরুতে এক ঘাটে জল খেত, সেখানে বাঙালি মানস তীব্র ভাবাবেগে শত অত্যাচার, নির্যাতন সহ্য করেও বাঙালি জাতীয়তাবাদ গড়ে তোলে।

      পূর্ববাংলার এই শহীদান আসামের শিলচরেও আছড়ে পড়ে। ভাষার দাবিতে সেখানেও ১১ টি তাজা প্রাণ নিথর হয়ে যায়। আমাদের ছোট্ট রাজ্য ত্রিপুরা। ১৯৭৮ সালে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হলে সেখানে সাংস্কৃতিক জগতে নীরব বিপ্লব ঘটে যায়। ঘরে ঘরে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, সুকান্ত প্রমুখ সাহিত্য বিশারদদের চিন্তাধারা পৌঁছে দেবার কর্মসূচি নেওয়া হয়। তৎকালীন সংস্কৃতিমন্ত্রী অনিল সরকার ত্রিপুরার সকল অংশের মানুষের সংস্কৃতিকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরার ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এই প্রেক্ষাপটে সকল ভাষার সম্মানে, সকল ভাষার বিকাশে ত্রিপুরাতে "মাতৃভাষা দিবস" উদযাপনের আয়োজন করেন। সালটা ছিল ১৯৯৪। এর পেছনে অবশ্যই প্রেরণা ছিল পূর্ববঙ্গের "শহীদ দিবস"। বাংলাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন একটি প্রবন্ধে ত্রিপুরা সরকার ও রাজ্যবাসীর এই উদ্যোগকে ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন যে একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করে ১৯৮৯ সালে; পশ্চিমবঙ্গে একুশে সংসদ গঠিত হয় আর ত্রিপুরায় তা মাতৃভাষা দিবস হিসেবে উদযাপিত হয়। (জনকন্ঠ, একুশে ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৫)

     জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন মঞ্চ, কুমিল্লা জেলা শাখার সভাপতি ও সম্পাদক যথাক্রমে শান্তনু কায়সার ও সমীর মজুমদার তাঁদের সংগঠনের একটি প্রস্তাবে অনিল সরকার ও ত্রিপুরা সরকারকে সাধুবাদ জানান; কারণ, মাতৃভাষার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির বহু আগেই তা মাতৃভাষা দিবস হিসেবে উদযাপিত হচ্ছিল। এক্ষেত্রে ত্রিপুরার এই মহান উদ্যোগ নিশ্চয়ই ঐতিহাসিক।

      সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সেক্রেটারী জেনারেল কফি আন্নান এর কাছে Mother Language Loverers of the World এর সদস্য এবং ১০জন স্বাক্ষরকারীর অন্যতম রফিকুল ইসলাম তখন কানাডার ভাংকুভারে বাস করতেন। তাঁর পৈতৃক বাড়ি কুমিল্লা শহরে।১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তিনি তাঁর সোনামুড়াস্থিত জামাইবাবুর বাড়িতে আশ্রয় নেন এবং মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যোগদান করেন। তিনি গোকুলনগর, হাপানিয়া ক্যাম্পে ট্রেনিং গ্রহণ করেন এবং দেরাদুনেও ট্রেনিং নেন। ২৯ মার্চ, ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে ওই সংস্থার মাধ্যমে কফি আন্নান চিঠি পান। দাবি একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। পরে বিভিন্ন ঘটনা ক্রমে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের তরফে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পেশ হয় জাতিপুঞ্জে। এই সংস্থার উপযুক্ত শাখা UNESCO ১৭ নভেম্বর ১৯৯৯ এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার মর্যাদা দান করে। বিশ্ব রঙ্গমঞ্চে বাংলা ভাষা!শহীদ দিবস!! মাতৃভাষা দিবস ইতিহাসের স্বর্ণ-খচিত পাতায়!!! ভাষা আন্দোলনে এর থেকে বড় প্রাপ্তি আর কিছুই হতে পারে না। জয় হোক মাতৃভাষার-জয় হোক পৃথিবীর ভ্রাতৃভাষার। কারণ, "মাতৃভাষা মাতৃদুগ্ধ সম" (বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)।


তথ্যসূত্রঃ The Emergence of Nationalism in Bangladesh - Nehal Karim, University of Dhaka, Bangladesh, 1992

২) Tripura in the Liberalization Movement of Bangladesh (1947-1971 AD)- Md. Mojahid Rahaman, Akangsha Publication House, New Delhi, Guwahati, 2016

৩) Internet.


ডঃ মুজাহিদ রহমান, ত্রিপুরা


আরশিকথা হাইলাইটস

২১শে ফেব্রুয়ারি ২০২২

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.