জাতিস্মর
-------------
একটি জন্মের অবসানে আরেকটি জম্ম।
জন্মের শতক্রোশ দূরে আরও একটি জন্মান্তর।
হ্যাঁ, আমি জাতিস্বর।
বিশ্বাস করো,আমার মস্তিষ্কের প্রতিটি শিরা-উপশিরার রন্ধ্রে রন্ধ্রে আমানতি আছে সব স্মৃতি, সব দুঃখ জ্বালা, সব আবেগ -অনুভূতি,
সব নেক্কারজনিত কলুষতা।
ফিরে এল এক বিবাগী জাতিস্মর।
আত্মাকে বন্ধক রেখে বলছি,
এইখানেই ছিল আমার শেষ ঠিকানা,
ভিটেমাটি ঘর,
এইখানেই শেষ দেখা
এক দুখীনির ক্রোধ শিহরণ।
রহিম ছিলাম, আত্মবিশ্বাসে নামাজ আদায় করা সেই অন্ধ ফকিরের ভিটেতে।
এ জন্মে ইতিহাসহীন রাম হয়েছি
কৌপীনধারী বামুনের ঘরে।
সবই তো অহং-এর আত্মপ্রকাশ।
শহরের বুক চিরে ঐ যে নদীটা গেছে শেষ প্রান্তে,
তার তীর ঘেষে দেখেছি শাণিত তলোয়ারের লড়াইয়ের ঝংকার ।
নদীর স্রোতে ভেসে গেছে লাল রক্তের নীরবতা ।
ধর্মের নামে এক পৈশাচিক রক্ত খেলা,
রাম-রহিমের রক্ত মিলেমিশে একাকার,
সবকিছুর সাক্ষী ছিলাম।
এই তো সেই রাজপথ, যাকে সাক্ষী রেখে শহর তোলপাড় করা অহংকার আর অর্থ লোলুপতার পদাঘাত দেখেছিলাম ।
অভিমানী দুর্বল প্রাণগুলো নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছিল আত্মহননের অন্ধকার কক্ষে ।
অন্ধকার আর আগুনকে পাশাপাশি ভালোবেসেছিলাম।
সেই আগুনে নিজের সত্তাকে একদিন বিসর্জন দিয়েছিলাম অন্ধকারের সেই দুর্বল প্রাণগুলোর দেখা পাবো বলে।
ঘূর্ণাবর্তে আবারও আলোয় ফিরে এলাম ।
এবার আলোক দিশারীর শরীরে জন্ম নিয়েছি।
ফিরে এলাম আমি জাতিস্মর।।
-সুপর্ণা মজুমদার রায়
১৩ই আগস্ট, ২০২২