Type Here to Get Search Results !

চাঁদের পাহাড়" ...পাড়ি জমিয়েছিলাম আঠারমুড়া রেঞ্জের টপ হিল "মনটাং ভ্যালী"র উদ্দেশ্যে ঃ রীণা দাস, ত্রিপুরা


 চাঁদের পাহাড় ---


দিনটি রবিবার। উইক এন্ড।সে কারনেই এক দল দামাল ছেলে মেয়েদের সাথে আমরা পাড়ি জমিয়েছিলাম আঠারমুড়া রেঞ্জের টপ হিল "মনটাং ভ্যালী"র উদ্দেশ্যে।এর আগের গল্পটা আপনাদের একটু শোনাতে চাই। 
আমি পঞ্চাশোর্ধ মহিলা মানুষ। কিন্ত ঘোরার কথা মনে এলে নদীর বেগবতী জলের মতো চঞ্চল কিশোরী হয়ে উঠতে ইচ্ছে করে।সোশ্যাল মিডিয়ার যেন এই ভাবনাকে আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।একদিন ফেসবুক স্ক্রল করতে করতে "চাঁদের পাহাড়" নামে এক ট্যুর প্রোফাইল নজরে এলো,বিশেষ করে নামটা আরো আকর্ষণ বাড়িয়ে দিলো।লাইক দিয়ে চাঁদের পাহাড়ের গায়ে পা রাখলাম। 

             ওই যে বললাম ঘোরার কথা শুনলে মনটা কেমন চঞ্চল হয়ে উঠে--এর সূত্র ধরেই ফোনে যোগাযোগ হল চাঁদের পাহাড়ের এডমিনের সাথে।উদ্দেশ্যে মহত তাদের।ত্রিপুরার ট্যুরিজমকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে দৃঢ় অঙ্গীকার বদ্ধ এই দামাল ছেলের দল।সাথে পরিবেশ রক্ষা,ট্যুরিস্ট স্নানের স্বচ্ছতা ও জনসচেতনতা বাড়ানো।সেই সাথে সারাদিনের ব্যস্ততা,ক্লান্তি ,অবসাদের হাত থেকে মুক্তির স্বাদ নিতে সপ্তাহান্তে সবাইকে নিয়ে ত্রিপুরার নতুন জায়গাগুলো আবিস্কার করা।

               এদের ভাবনার সাথে সুর মিশিয়ে আমরা আটত্রিশ জনের টিম জোট বাঁধলাম মনটাং ভ্যালীর উদ্দেশ্যে।গতানুগতিক জায়গার বাইরে নতুন জায়গার নাম শুনে মন চনমনে হয়ে উঠেছিল আগে থেকেই। স্থির হলো উজ্জ্বয়ন্ত
 প্যালেসের সামনে সবাই জড়ো হয়ে তারপর সবাই একসাথে চাঁদের পাহাড়ের দল রওনা দেবে।বলতে ভুলে গেছি, দামাল ছেলের দল যাবে বাইক রাইডে।কি দুঃসাহসিক অভিযান!! আমরা তিনজন পঞ্চাশোর্ধ মহিলা চড়ে বসলাম গাড়িতে।ঘড়ির সময় সকাল সাড়ে ছয়টা।প্রথমেই ইউটিউব ব্লগার বিশ্বজিতকে ফুলের তোড়া দিয়ে সংবর্ধনা জানিয়ে যাত্রা শুরু হলো।রাণীর বাজার পৌঁছে চায়ে চুমুক দিলাম সবাই মিলে।তারপর আবার যাত্রা শুরু হলো।চাকমাঘাট পৌঁছলাম সকাল সাড়ে সাতটা।সেখান থেকে স্হানীয় গাইড নিয়ে এবার যাত্রা শুরু হলো মনটাং ভ্যালীর উদ্দেশ্যে।

বড় রাস্তা ধীরে ধীরে সংকীর্ণ হতে লাগলো।দুপাশে জঙ্গলে ঘেরা রাস্তা ধরে এগিয়ে চলেছে বাইক ও আমাদের গাড়ি পাহাড়ের গা ধরে।।হঠাৎই থামতে হলো ।গাড়ি বাইক সব আটকে গেলো পথের দুরবস্হায়। এমন রাস্তায় চলার মজাই আলাদা।হেলেদুলে গাড়ি বাইক আবার চলা শুরু করলো।মাঝে মাঝে থামতে হলো ঠিকই.।চড়াই উতরাই পার হওয়া আর পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে আমরা "চাঁদের পাহাড়ে"র দল অবশেষে পৌঁছে গেলাম "মনটাং ভ্যালী"

পৌঁছে মনে হয়নি আমরা ত্রিপুরার আছি।এর মাঝে নতুন জায়গা আবিস্কারের স্বাদ।প্রকৃতির অপরূপ হাতছানিতে কিছু সময়ের জন্য  বাকরূদ্ধ হয়ে গেলাম। সবাই যে যার মতো নেমে সকালের টিফিন জ্যাম সহযোগে পাউরুটি,আপেল,ডিম সিদ্ধ ইত্যাদি।তারপর মেঘ পাহাড়ের দৃশ্য, জিনিয়া ফুলের মাথায় মাথায় প্রজাপতির দৌড়াত্ব উপভোগ সেরে এবার আবার পাহাড়ের নীচে নেমে আসার পালা।সারাদিনের ছুটাছুটি যেন এক নিমেষেই উধাও হয়ে গেল।পাহাড়ি রাস্তা ,তাই বেলা পরে আসার আগেই পথে নামতে হবে ঘরে ফেরার উদ্দেশ্যে।আবার সারিবদ্ধ ভাবে আমরা নেমে এলাম পাহাড়ি পথ ছেড়ে সমতলে।চাকমাঘাট পৌঁছে শ্রী দুর্গা হোটেলে দুপুরের অনন্য ভোজন শেষে আমাদের দল রওনা হলো ঘরের দিকে।


রীণা দাস, ত্রিপুরা


আরশিকথা ভ্রমণ
১৩ই নভেম্বর ২০২২

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.