প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সরকা প্রয়াস এবং সরকা বিশ্বাসের দৃষ্টিভঙ্গিকে পাথেয় করে সমাজের সব অংশের মানুষের উন্নতি সাধনে রাজ্য সরকার সচেষ্ট। রাজ্যের ওবিসি ও সংখ্যালঘু জনগণের আর্থসামাজিক অবস্থার মান্নোয়নে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক প্রকল্পসমূহ রাজ্যে রূপায়িত হচ্ছে। উভয় সম্প্রদায়ের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে তাদেরকে আর্থিকভাবে সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে কাজ করছে রাজ্য সরকার। শনিবার সচিবালয়ের প্রেস কনফারেন্স হলে আহুত এক সাংবাদিক সম্মেলনে একথা জানান ওবিসি ও সংখ্যালঘু কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী রাম প্রসাদ পাল। তিনি বলেন, সমাজের প্রতিটি পিছিয়েপড়া ও সংখ্যালঘু অংশের জনগণ আর্থিকভাবে সমৃদ্ধ হলে সমাজ উন্নত এবং শক্তিশালী হবে। আর সমাজ শক্তিশালী হলে উন্নত রাষ্ট্র এবং রাজ্য গঠন করা সম্ভব হবে। সাংবাদিক সম্মেলনে ওবিসি ও সংখ্যালঘু কল্যাণ দপ্তরের সচিব তাপস রায় ওবিসি ও সংখ্যালঘু কল্যাণ দপ্তরের বিভিন্ন জনকল্যাণমুখী প্রকল্পগুলির গত সাড়ে চার বছরের সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরে জানান, ওবিসি ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত ছেলেমেয়েদের বিদ্যালয়মুখী করে রাখার পাশাপাশি ঐ সম্প্রদায়ভুক্তদের আর্থসমাজিক মানোন্নয়নে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক প্রকল্প রূপায়িত হচ্ছে। তিনি ওবিসি কল্যাণ দপ্তরের সাফল্য তুলে ধরে জানান, ২০১৮-১৯ থেকে ২০২১-২২ অর্থবর্ষ পর্যন্ত মোট ১,৭৬,৫৭২ জন ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্ত ছাত্রছাত্রীকে প্রি-মেট্রিক এবং ৬৮,০৫৪ জন ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্ত ছাত্রছাত্রীকে পোস্ট মেট্রিক স্কলারশিপ দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, ২০১৮-১৯ থেকে ২০২১-২২ অর্থবর্ষ পর্যন্ত মোট ৫৩ জন ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্ত শিক্ষার্থী যারা মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রথম থেকে দশম স্থান অর্জন করেছেন তাদের ড. বি আর আম্বেদকর মেমোরিয়াল গোল্ড মেডেল অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে। ২০১৮-১৯ থেকে ২০২১-২২ অর্থবর্ষ পর্যন্ত ১১,৩৫৭ জন ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্ত ছাত্রছাত্রীকে ড. বি আর আম্বেদকর মেধা পুরস্কার প্রদান করা হয়। সচিব আরও জানান, ২০১৮-১৯ থেকে এখন পর্যন্ত আর্থিকভাবে দুর্বল এমন ২৮০ জন মেধাবী ওবিসি ছাত্রছাত্রীকে বি এড এবং ডি এল এড কোর্স, ১০ জন মেধাবী ওবিসি ছাত্রছাত্রীকে জি এন এম কোর্স এবং ৯০ জন মেধাবী ওবিসি ছাত্রছাত্রীকে প্যারা মেডিকেল কোর্স করার জন্য এককালীন আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। তাছাড়াও তিনি ওবিসি কল্যাণ দপ্তরের উদ্যোগে সম্প্রতি একটি মার্কেট স্টলের উদ্বোধনের কথাও উল্লেখ করেন। সাংবাদিক সম্মেলনে ওবিসি ও সংখ্যালঘু কল্যাণ দপ্তরের সচিব সংখ্যালঘু কল্যাণ দপ্তরের ২০১৮-১৯ থেকে ২০২১-২২ পর্যন্ত সংখ্যালঘুদের কল্যাণে রূপায়িত বিভিন্ন প্রকল্প সমূহের সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরেন। তিনি জানান, গত ৪ বছরে প্রায় ৭৭ হাজার ৬৭৩ জন সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীকে বিভিন্ন প্রকল্পে স্কলারশিপ প্রদান করা হয়েছে। এরজন্য বায় হয়েছে প্রায় ৪৯ কোটি ২৪ লক্ষ টাকা। সংখ্যালঘু এলাকাগুলিতে পরিকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় রাখতে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক প্রকল্প রূপায়িত হচ্ছে। ওয়াকফ সম্পত্তি রক্ষনাবেক্ষনেও সংখ্যালঘু কল্যাণ দপ্তরের মাধ্যমে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি নাবার্ডের আর আই ডি এফ স্কীমেও বিভিন্ন কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে বলে সচিব জানান। তাছাড়াও আত্মনির্ভর ত্রিপুরা প্রকল্পেও সংখ্যালঘু সুবিধাভোগীদের ঋণ প্রদানের মাধ্যমে সহায়তা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।সচিব সংখ্যালঘু ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য কেন্দ্র এবং রাজ্যের যে সমস্ত স্কলারশিপ প্রকল্প চালু রয়েছে সে সম্পর্কেও সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন। সাংবাদিক সম্মেলনে ওবিসি কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা নির্মল অধিকারী এবং সংখ্যালঘু কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা দশরথ দেববর্মা উপস্থিত ছিলেন।
আরশিকথা ত্রিপুরা সংবাদ
৫ই নভেম্বর ২০২২