Type Here to Get Search Results !

সচিবালয়ে প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের সাংবাদিক সম্মেলন ।। রাজ্যের ৩০,৫২৬টি পরিবারকে প্রাণীপালনে সহায়তা

নিজস্ব প্রতিনিধি,আগরতলা,আরশিকথাঃ



মুখ্যমন্ত্রী স্বনির্ভর পরিবার যোজনায় ২০২১-২২ অর্থবছরে রাজ্যের ৩০,৫২৬টি পরিবারকে প্রাণীপালনের জন্য সহায়তা করা হয়েছে। শুক্রবার সচিবালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের প্রধান সচিব বি এস মিশ্রা দপ্তরের সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরে এই সংবাদ জানান। তিনি জানান, এরমধ্যে ৬০৩৩টি পরিবারকে শুকর, ৩, ১৩৩টি পরিবারকে ছাগল, ৪১৭৭টি পরিবারকে হাঁস এবং ১৭, ১৮৩টি পরিবারকে মোরগ পালনে সহায়তা করা হয়েছে। এরজন্য ব্যয় হয়েছে মোট ১০ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা। তিনি আরও জানান, এই প্রকল্পে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৪১ হাজার ৬০টি পরিবারকে প্রাণীপালনে সহায়তা করা হবে। এরজন্য ব্যয় হবে ১১ কোটি ৩৪ লক্ষ টাকা। তিনি জানান, ২০২০-২১ সাল থেকে রাজ্যে 'মুখ্যমন্ত্রী উন্নত গো-ধন প্রকল্প' চালু করা হয়েছে। এই প্রকল্প ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত চলবে। রাজ্যের ৮টি জেলায় 'মুখ্যমন্ত্রী উন্নত গো-ধন প্রকল্প রূপায়ণের কাজ চলছে। এই প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্য রাজ্যে দুধের উৎপাদন বৃদ্ধি করা। এতে রাজ্যে দুধের চাহিদা যেমন মিটবে তেমনি কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরী হবে বলে প্রধান সচিব আশা ব্যক্ত করেন। এই প্রকল্পে প্রতি ডোজ হিমায়িত লিঙ্গ নির্ধারিত বীর্যের জন্য সরকারি ভর্তুকীর পরিমাণ ৫০৪ টাকা। ভর্তুকী বাবদ সরকার মোট ১৫ কোটি ৭২ লক্ষ ৪৮ হাজার টাকা ব্যয় করবে। প্রকল্প রূপায়ণের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ৩,১২,০০০ ডোজ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, এই প্রকল্পে শুরু থেকে এবছর ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজ্যে ৮২,৬৭৮টি গাভীর কৃত্রিম প্রজননের জন্য ১,৪১,৬৯৭টি ডোজ হিমায়িত লিঙ্গ নির্ধারিত বীর্য ব্যবহৃত হয়েছে। উল্লিখিত সময়ে রাজ্যে এই প্রকল্পে ১৭,১৭৮টি স্ত্রী বাছুর জন্ম নিয়েছে, সাফল্যের হার ১০ শতাংশের কাছাকাছি। প্রধান সচিব জানান, হাঁস পালন প্রকল্পে ২০২২- ২৩ অর্থবছরে ২০০ জন তপশীলি জাতিভুক্ত মহিলা সুবিধাভোগীকে বিনামূল্যে ৩০টি করে উন্নত প্রজাতির হাঁসের বাচ্চা, খাদ্য, যাবতীয় ঔষধপত্র বিতরণ করা হবে। সমস্ত সুবিধাভোগীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিকাকরণ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করা হবে। মোট ১৮,০০০টি হাঁসের বাচ্চা সুবিধাভোগীদের মাঝে বিতরণ করা হবে। তপশীলি জাতি কল্যাণ দপ্তর থেকে এর জন্য ব্যয় হবে ৬০ লক্ষ টাকা। তিনি আরও জানান, বর্তমানে ঊনকোটি জেলার চন্ডীপুর আরডি ব্লক অধীনস্ত সমরুরপার গ্রাম পঞ্চায়েতে ও কুমারঘাট ব্লকের দুধপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে এবং গোমতী জেলার মাতাবাড়ী ব্লকের সুখসাগর এলাকায় এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করার কাজ চলছে। এছাড়াও প্রধান সচিব গবাদি পশুর ফুট এন্ড মাউথ বা বুড়াপিড়া রোগের উপর আলোকপাত করেন।

তিনি জানান, এটি গবাদি পশুর একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ। এই রোগ সংক্রমনের ফলে প্রতি বছর দুগ্ধ উৎপাদন হ্রাস পাওয়ার সাথে সাথে কৃষকদের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। এই রোগ টিকাকরণের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। তিনি জানান, রাজ্য প্রথম পর্যায়ে এই টিকাকরণ শুরু হয় ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে। প্রথম পর্যায়ে ৬ লক্ষ ৩২ হাজার ৬২৩টি গবাদি পশুকে টিকা দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ৭ লক্ষ ৪৬ হাজার ১৬২টি টিকাকরণের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এখন অব্দি এই পর্যায়ে ৩ লক্ষ ২২ হাজার ৭১০টি গবাদি পশুর টিকাকরণ সম্পন্ন হয়েছে। তিনি জানান, এই কর্মসূচিকে রূপায়িত করতে প্রাণী সম্পদ দপ্তরের সমস্ত কর্মী ও ট্রেনিং প্রাপ্ত ভ্যাকসিনেটরদের নিয়োজিত করা হয়েছে। ট্রেনিং প্রাপ্ত ভ্যাকসিনেটরদের জন্য প্রতি ভোজ পিছু সাম্মানিক ২৩ টাকা ধার্য করা হয়েছে। প্রধান সচিব জানান, প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের অধীনস্ত কলেজ অফ ভেটেরিনারী সায়েন্স অ্যান্ড এ.এইচ, আর কে নগর, আগরতলায় ১৭টি শাখায় চুক্তির ভিত্তিতে এক বছরের জন্য ১৭ জন প্রফেসর নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও অবসরপ্রাপ্ত প্রাণী সম্পদ বিকাশ সহায়কদের মধ্য থেকে ৩৮ জনকে এআরডি অ্যাসিস্টেন্ট (প্যারাবেট) হিসেবে ১১ মাসের জন্য চুক্তিবদ্ধ নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের বিশেষ সচিব ড. শশী কুমার এবং অতিরিক্ত অধিকর্তা ড. বি কে দাস।


আরশিকথা ত্রিপুরা সংবাদ


ছবিঃ সুমিত কুমার সিংহ

১১ই নভেম্বর ২০২২ 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.