‘ভবিষ্যতের ভারত’-কি রকম হবে তা দেশের যুব শক্তিকেই বিচার করতে হবে। আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের অমৃতকালে দেশের যুব শক্তিকে ভারতবর্ষের সামগ্রিক উন্নয়নে একাত্ম যোগদান দিতে হবে। একুশ শতকের ভারতবর্ষকে বিশ্বগুরুর আসনে আসীন করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের যুব শক্তির উপরই ভরসা করছেন। দেশের উন্নয়নে যুবদের বলিদান নয় যোগদান দিতে হবে। দূষণ, অশিক্ষা, নেশা, বৈরী কার্যকলাপ প্রভৃতির বিরুদ্ধে দেশের যুব সমাজকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। দেশের লোকতান্ত্রিক কাঠামোকে মজবুত করার জন্য সর্বোত প্রয়াস করতে হবে যুব সমাজকে। শুক্রবার নেহেরু যুব কেন্দ্র ত্রিপুরা শাখার উদ্যোগে রবীন্দ্র শতাবার্ষিকী ভবনে আয়োজিত যুব সমবাদ- ইন্ডিয়া @ ২০৪৭ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে একথা বলেন কেন্দ্রীয় যুব বিষয়ক এবং ক্রীড়া মন্ত্রী অনুরাগ সিং ঠাকুর। অনুষ্ঠানে সারা রাজ্যের বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদগণ, এন এস এস, এনসিসি, স্কাউটস এন্ড গাইডস, নেহেরু যুব কেন্দ্র সংস্থানের স্বেচ্ছাসেবীগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া মন্ত্রী অনুরাগ সিং ঠাকুর বলেন, রাষ্ট্র নির্মাণে যুব শক্তিই ভরসা। এই ভরসাকে পাথেয় করে আগামীদিনে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দিশা দেখাতে হবে। প্রথমবারের মতো ভারতে আয়োজিত জি-২০ সম্মেলনে ভারতের গৌরবজ্জ্বল ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতিকে যুব শক্তির মাধ্যমে সারা বিশ্বের সমুখে তুলে ধরতে হবে। বর্তমান দেশের যুব শক্তি ভারতবর্ষ এবং পৃথিবীর অগ্রগতিকে নিয়ে কি চিন্তা ভাবনা করে তা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে আয়োজিত ওয়াই-২০ টকস এবং ওয়াকসের মাধ্যমে ফুটে উঠা ভাবধারাকে তথ্যচিত্রের মাধ্যমে জি-২০'র দেশগুলির সামনে তুলে ধরা হবে। এক্ষেত্রে তিনি ত্রিপুরা রাজ্যেও এই ধরণের কর্মসূচি আয়োজনের আশ্বাস দিয়ে যান।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জলবায়ুর দূষণ থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুরক্ষিত রাখার জন্য ইতিমধ্যেই গ্রীন ন্যাশনাল হাইড্রোজেন মিশনের সূচনা করেছেন। এরফলে দেশে ৮ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে। সরাসরি রোজগার সৃষ্টি হবে ৮ লক্ষ মানুষের। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে দেশে ১ লক্ষ কোটি টাকার কাঁচা তেল আমদানি হ্রাস করা হবে। তিনি আরও বলেন, ২০২৪ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি বাড়িতে নলের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ৩ লক্ষ ৬০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। রাজ্যের খেলাধুলার মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়ার জন্য তিনি রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরীর ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মানের ক্রীড়াবিদ তৈরির জন্য প্রয়োজন গুণমান সম্পন্ন ক্রীড়া পরিকাঠামোর। এক্ষেত্রে রাজ্যের ৮টি জেলার প্রত্যেকটিতে ১৫ থেকে ২০টি বিভিন্ন ধরণের খেলার পরিকাঠামো যুক্ত ইন্ডোর স্টেডিয়াম বানিয়ে দেওয়া হবে বলে আজকের অনুষ্ঠানে তিনি আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের আমলে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ ৮৯ শতাংশ এবং এই কারণে সাধারণ মানুষের মৃত্যু ৯০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। কোভিডকালীন সময়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে সারা দেশে প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী সহ কোভিড ভ্যাকসিনও বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে। আজ দেশ ডিজিট্যাল ইন্ডিয়াতে পরিণত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আগামী ২৫ বছর একটি টিম হয়ে সর্বস্তরের মানুষকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করে যেতে হবে। অনুষ্ঠানে আলোচনা করতে গিয়ে রাজ্যের যুব বিষয়ক ও ক্রীড়ামন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি জীবন ও সমাজকে বদলাতে সক্ষম। স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শকে ভিত্তি করে বর্তমান কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার যুব শক্তিকে দেশকে নতুনভাবে গড়ার কাজে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানাচ্ছে। ২০৪৭ সালে দেশ যখন স্বাধীনতার একশ বছর পালন করবে সেই সময়ের মধ্যে দেশকে স্বর্ণিম যুগে নিয়ে যেতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দিক নির্দেশনায় এ দেশের যুব সমাজকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হবে। রাজ্যের ক্রীড়া পরিকাঠামো বিগতদিনের চাইতে অনেকটাই উন্নত। রাজ্য সরকার চায় খেলো ইন্ডিয়া, ন্যাশনাল গেমসের মত ইভেন্ট এই রাজ্যেই আয়োজন করতে। তাই ক্রীড়া পরিকাঠামোর উন্নয়নে ব্যাপক প্রচেষ্টা করা হচ্ছে।অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন নেহেরু যুব কেন্দ্র ত্রিপুরা শাখার অধিকর্তা জবা চক্রবর্তী। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের অধিকর্তা সুবিকাশ দেববর্মা, স্টেট এনএসএস অফিসার ড. চিত্রজিৎ ভৌমিক, পদ্মশ্রী ড. দীপা কর্মকার। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্রীড়া সংগঠনের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।অনুষ্ঠান শেষে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ সিং ঠাকুর হলে আগত সকলের মাঝে উপস্থিত হয়ে মতবিনিময় করেন এবং ছাত্রছাত্রীদের সাথে সেলফি তুলেন।আরশিকথা ত্রিপুরা সংবাদ
ছবিঃ সংগৃহীত
১৩ জানুয়ারি ২০২৩