Type Here to Get Search Results !

পুস্তক পর্যালোচনা ।। দেশ বিদেশের নির্বাচিত সেরা গল্প ।। রীণা দাস, আরশিকথা

।। পুস্তক পর্যালোচনা ।।


# দেশ বিদেশের নির্বাচিত সেরা গল্প

প্রকাশনী-- নীহারিকা পাবলিশার্স

সম্পাদনা-- আরশিকথা


পৃষ্ঠা ছেড়ে পৃষ্ঠায় ঘুরে আসা দেশ বিদেশের নির্বাচিত সেরা গল্পকারদের গল্পের পাতা।কালো কালির আঁচড়ের  এই গল্পগুলো সম্পাদিত হয়েছে আরশিকথা বহুমাত্রিক সংবাদ সংস্থা স্বীকৃত একটি গ্লোবাল সাহিত্য ফোরাম দ্বারা।আসলে বই পর্যালোচনা মানে বই সম্পর্কে অন্য পাঠকদের সংক্ষেপে কিছুটা ধারণা দেওয়া।বইয়ের বিষয়বস্তু সম্পর্কে ,তার মধ্যে প্রযুক্ত ভাষা শৈলী,বিষয়ের অভ্যন্তরের পাঠে কি শিক্ষণীয় বিষয় ,মানব মনকে কতটুকু আন্দোলিত বা প্রভাবিত করতে পারে ইত্যাদি বিষয়।সাথে পাঠকের ভালো লাগার বিষয়টিও।সবগুলি বিষয়ের সঠিক অনুধাবন হয়তো পৌঁছাতে পারবো না পাঠক কূলের কাছে।তবে গল্পগুলো পাঠে কতটা অনুভূতি জাগিয়েছে আমার মনে তার শোনাই--

আরশিকথার সাহিত্য সংস্কৃতি বিভাগের সাথে যুক্ত গল্পকারদের নির্বাচিত ১৭ (সতের)টি গল্পঃ নিয়ে ১১৭ পৃষ্ঠার এই বইটিতে গল্পকারের সংখ্যা ১৭ জন।

১৭ টি গল্পে লেখককূল তাদের মনন জগতের বিভিন্ন দিক আলোকপাত করেছেন।মূল্যায়ন করার ধৃষ্টতা নিয়ে নয়,শুধুমাত্র অনুভবকে মিলিয়ে নেওয়ার পালা বইয়ের পৃষ্ঠা ছুঁয়ে পৃষ্ঠায়। সবগুলো লেখাই মে লেখকের ধার ও ভার বহন করবে এমন নয়।তবে তারা তাদের মনোজগতকে কর্ষণ করে চলেছেন সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে তার কদর করতেই হয়।

সতেরটি বাছাইকৃত গল্পের বেশ কয়েকটি মনোমুগ্ধকর ।বাস্তবের সাথেই মিলে মিশে একাকার ।যেন আমাদেরই কারো ঘটে যাওয়া ঘটনা।অবশ্য সাহিত্য তাই বলে।সমাজে ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রবহমানতাই সাহিত্যের অঙ্গনে ঠাঁই দিতে চায় সাহিত্যিকেরা।

*****

গল্পগুচ্ছের গল্পের শুরু ত্রিপুরার প্রতিথযশা লেখক,সাহিত্যিক সুবিমল রায়ের "দান প্রতিদান" কাহিনীর মাধ্যমে।লেখকের গল্পের ভাষা শৈলী সহজ ও সারল্যে পরিপূর্ণ।কঠিন ও গুরুগম্ভীর কোন শব্দ বন্ধন নেই,যা পাঠককে গল্পের গুরুত্ব অনুধাবনে দূরত্ব সৃষ্টি করবে।বিষয়বস্তু সহজেই অনুমেয়।লেখক সুবিমল রায় তার লেখনীর মাধ্যমে মলিনের মা প্রনতির  চরিত্রকে অকৃতজ্ঞতার কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন।প্রনতির বিপদের দিনে প্রদ্যুতের বাবা মায়ের সাহায্যের অবদানকে কূটকৌশলীদের চক্রান্তে প্রনতি পায়ে পিষে দিয়ে কিভাবে তাদের প্রতিদান দিয়েছিলেন তার স্পষ্ট করে দেখিয়েছেন।শিক্ষনীয় বিষয় হলো ,প্রনতির চরিত্র বহনকারী মানুষেরা এভাবেই সমাজের বুকে অকৃতজ্ঞতার ছাপ রেখে যায় কালে কালে।

*****

প্রবাসী হয়েও লেখক রবীন্দ্র চক্রবর্তী ভারতবর্ষের সুর সাধকদের মনে পোষন করে আছেন।তার লেখায় আকবরের নবরত্ন মিয়া তানসেনের উত্তর পুরুষ মাধবের সাক্ষাৎ পাওয়া যায়।মাধবরাই বংশপরম্পরায় সুর সাধনার দেশ  ভারতবর্ষে বিভিন্ন রকমের বীণা তৈরীর স্রষ্ঠা।তার লেখায় পাওয়া যায় দীপক রাগিনীর সুরে কিভাবে তানসেন আগুন জ্বালিয়ে দিতেন আর মল্লার রাগে বৃষ্টি ঝরাতেন।তানসেনের আত্মজ মাধবের মাঝে সে সুর এখনো বাজে।সুরের কম্পন সৃষ্টি হয় যে স্হানে সে স্হানে সম্ভব অসম্ভবের সীমারেখা ম্লান হয়ে যায়।সুরের বীণে সাধনার দেশ  ভারতবর্ষ আজো বেঁচে আছে।সুরের বাঁধন প্রয়োজন জীবনের প্রতিটি তালে,লয়ে,ছন্দে,লেখক তার লেখায় স্পষ্ট করে দিলেন।

*****

ভিন্ন ধর্মী রচনা "কাঁটাতার" ---গল্পকার ত্রিপুরার স্বনামধন্য লেখিকা স্বপ্না ভট্টাচার্য।তিনি তার লেখায় দেখিয়েছেন কাঁটাতার পার্থিব জগতের দৃশ্যমান হলেও অন্তরে কাঁটাতার বিঁধতে পারে না।দেখিয়েছেন এপারের নাসির মিঞা ও তার পরিবার  ভিন্নধর্মী হয়েও দুর্গার সাথে তাদের যে আচরণ তা মানবধর্মের পরিচায়ক।ধর্ম এখানে গৌন।মানবিক মূল্যবোধের কাছে ধর্মের ঠিকানা অস্তিত্বহীন হয়ে পরে।মানবিক মূল্যবোধ যদি ধর্মের কাছে হার মেনে যায় তবে তা আমাদের সমাজের অগ্রগতির পক্ষে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে তার লেখিকার কলমে ধরা দিয়েছে।বর্তমান সমাজ ব্যবস্হায় এই লেখা পাঠকবর্গকে নিঃসন্দেহে মানবিক দৃষ্টি নিয়ে পথ চলতে সহায়ক হবে বলে ধারণা।

*****

সুদূর ওমানে বসে লিখছেন মৌসুমী ভট্টাচার্য।তার লেখায় সমকালীন বিশ্ব পরিস্হিতির চিত্রের অবতারণা।"এক অন্য ঈদ " ।প্রতি বছর ঈদ যেমন খুশির বার্তা বয়ে আনে এবছর তার মাঝে মেঘের কালো ছায়া।রোজগারে চাপ জীবনে অন্ধকার নেমে আসে রহমত ও তার পরিবারের উপর।ঈদের 'ইফতারের' জন্য বছরভর অপেক্ষায় থাকে রহমতেরা।কিন্তু কোভিড মহামারী সময়ে ঈদের সমস্ত আনন্দ  ম্লান হয়ে যায়।অপেক্ষা আগামী ইফতারের।লেখিকার সাথে আমরাও অপেক্ষা করবো কোভিড কাল কাটিয়ে ধরিত্রী আবারো সুন্দর হবে ,সমৃদ্ধ হবে।

*****

সাদা,লাল, কালো রঙের মোড়কে আবৃত গল্পগুচ্ছে কান পাতলেই শুনতে পাবেন নারীদের "স্বপ্ন ভাঙার গল্প"।ওপারের লেখিকা মাহাবুবা লাকি এমনই এক কাহিনীর বর্ণনা করেছেন।গল্পের শুরুতে পুরুষতান্ত্রিক শব্দটা জুড়ে দিলে বোধহয় লেখার ওজস্বীতা আরেকটু বেড়ে যেত।সৃষ্টির আদি পুরুষ ও প্রকৃতির খেলা হলেও প্রকৃতি বারবার পুরুষের জিঘাংসার কাছে হার মানতে বাধ্য হয়।ময়না ও তার বাপ শুকুর মিয়ার সুখের সংসারে ময়নার জীবন ও যৌবনের প্রতি কুদৃষ্টি সংসারকে বেহাল অবস্হায় দাঁড় করিয়েছিল।নিজের আব্রু রক্ষা করতে গিয়ে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে বিচারের জন্য হন্যে হলেও আদালতের রায় ময়নার বিপক্ষেই যায়।ফাঁসিকাষ্ঠে দাঁড়িয়েও ঘূনে ধরা সমাজের পরিবর্তনের হাহাকার ময়নার হৃদয় জুড়ে। এমনিভাবে ক্ষয়ে ক্ষয়ে চলে আবহমান কাল ধরে।

একইভাবে "মালতী"র হাহাকারও শোনা যায় রীতা আক্তারের কলমে।চিরাচরিত সমাজের খোল নলচেতে মরিচা ধরার নয়,এ যেন শাশ্বত ধারা।পুরুষের লালসার নজর এড়িয়ে মেয়েদের সমাজে টিকে থাকা কঠিন।পাঠকবর্গ সমাজের নারীদের এই কঠিন   অবস্হাকে উত্তোরনের পথ দেখাবেন,এই আশাবাদী।

*****

ঘর থেকে দু পা ফেলে এগিয়ে গেলেই আবার পেছন থেকে ঘরটাই টেনে ধরে।ঘরের প্রতি অমোঘ আকর্ষণেই লেখিকা জবা চৌধুরী সুদূর আমেরিকায় বসে তার "মন খারাপের জাদুঘর"-- এর স্মৃতির ঝাঁপি খুলে দিয়েছেন।শ্রাবনের মেঘলা আকাশ হোক  আর শরতের ঝকঝকে রোদ্দুর সব স্মৃতি আগলে রাখতে চায় সবাই।পাঠকদের অনেকেই এমন স্মৃতির আকড় নিয়ে বেঁচে থাকেন নীরবে ,নিভৃতে।মানুষ যখন একা থাকে তখন ফেলে আসা স্মৃতিগুলো একাকীত্ব কাটানোর শক্তিশালী খাম্বা হিসাবে দুরন্ত গতিতে কাজ করে।এমন ছোট ছোট অনুভূতিগুলো পড়লে বুঝা যায় ,এ তো আমার আপনার অনুভূতি ।

*****

এবারের এই গল্প সংকলনে বিশ্ব ত্রাস করোনা ভাইরাস অনেকটাই জায়গা করে নিয়েছে স্বমহিমায়।ওপার বাংলার লেখক আরিফ মজুমদারের লেখায় ভেসে উঠেছে মারনঘাতি করোনা ভাইরাস রাকিব ও মিমির জীবনে কি দুর্দন্ড প্রতাপশালী মারণ যন্ত্রনা বয়ে এনেছিল,যা পাঠ করলে শরীর শিউরে উঠে।

মনিরুজ্জামান রনির চোখ দিয়ে দেখা যাবে "পতাকা রঙের চোখ"।যে চোখ স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখে,আত্মবিভোর হয় ফাঁসীর মঞ্চেও।স্বদেশের জন্য আত্ম বলিদানেও যেখানে কোন বাঁধা মানে না।

*****

গল্প সংকলনে গল্প  এবার নিজেদেরই অনুভবের প্রকাশ।প্রতিদিনকার চালচিত্র ফুটে উঠেছে প্রায় প্রত্যেকেরই কথায়।বিষয়বস্তু ভিন্ন মাত্রার হলেও বিষয় একই।সময়টা কোভিডকাল।হয়তো মননে ও চিন্তায় সমকালীন বিষয় ভাবনার বিস্তারে সহায়ক হয়ে উঠে।এমনি আরেকটি লেখা " মধ্যবিত্ত পরিবারের লক আউটের পরের দিন" --লিখেছেন মোঃ হেদায়েত উল্লাহ তুর্কী।তার আকরে চিত্রায়িত হয়েছে মধ্য আয়ের মানুষের জীবনযাত্রার হাল হকিকত।করোনা পরিস্হিতি উগড়ে গিয়ে রেখে গেছে তার ছাপ সমাজের এক স্তর থেকে অন্য স্তরে।যা সাধারণ নাগরিককে স্বস্তিতে দিন যাপন করতে দেয় না।নাভিশ্বাস উঠার উপক্রম পরিবার থেকে বাইরের জগতেও।এত হাঁসফাঁস অবস্হাযর বিপাকে পরে গল্পের নায়ক মিঃ হেদায়েত আল্লাহর শরনাপন্ন হন ।যেন অনন্তকাল পৃথিবী লকডাউনেই পরে থাকে।লেখার পাড়ে পৌছালে আপনারও মনে হবে এ তো আমারই কথা।হেদায়েত ভাই সবার কথা এক সূতায় গেঁথেছেন মাত্র।

*****

বাংলাদেশ স্বাধীনতার দেশ।ওখানকার মানুষ চোখ রগড়ে স্বাধীনতার স্বাদ চেখে দেখতে চায়।ঠিক এমনি স্বাধীনতা প্রেমী খোরশেদ আলম বিপ্লব।তার নামের সাথেই জুড়ে আছে বিপ্লব শব্দটি।লাল সবুজের পতাকা তলে এরা শান্তিতে ঘুমায়।সেই "লাল সবুজের পতাকায় রক্তে ভেজা শার্ট" গায়ে জড়িয়ে তুহিন দেশের স্বাধীনতার জন্য আত্ম বলিদান দিয়েছিল।পরাধীন দেশকে মুক্ত করার জন্য তার বাবা আবদুর রবও বুলেটের সন্মুখীন হয়েছিলেন।দেশের জন্য রক্তিম সূর্য আনতে বাংলাদেশের কত শত সোনার  তুহিন বুকে বুলেট নিয়েছে তার খবর কতজনেই বা জানে।বাবাকে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ফিরিয়ে আনতে গিয়ে এমন অনেক তুহিন মায়ের কোল হারা হয়েছে।গল্পটি তারই বাহক।শিউরে উঠার মত কাহিনী স্হান করে নিয়েছে গুচ্ছ পাতায়।

*****

গল্প সংকলনের  পরিক্রমা সেরে এবারে একেবারে শেষের পৃষ্ঠায় চেতন স্তর আটকে যাওয়ার মত।সবগুলো লেখাই লেখকদের নিজস্ব চিন্তা চেতনার ফসল।এর মধ্যে কিছু ব্যক্তি অনুভব ব্যক্ত হয়েছে,কিছু লেখা সমাজকে কেন্দ্র করে উঠে এসেছে,কিছু লেখা রাজ্য রাজনীতিকে ছুঁয়ে এসেছে,দু একটি লেখা সাম্প্রতিক বিশ্বের চলমান করুণ কাহিনী ,সাথে স্বাধীনতার উস্কানী।সব মিলিয়ে জমজমাট।

তবে একেবারেই নতুন আঙ্গিকের বিষয় " পরাণ কথা" ।পড়তে পড়তে মনে হয়েছে ,পরাণ কথা যেন প্রাণের কথা।জীবনদায়ী সব কথা।লেখক ত্রিপুরার শান্তনু শর্মা।একটা জীবনের গল্পে মাত্র লিখেছেন।কিন্তু তার মাঝেই আরেকটা মানুষের জীবন সুধা লুক্কায়িত আছে।লেখক শান্তনু শর্মা হাঁটাচলার পথ থেকেই কুড়ায়ে পেয়েছেন পরাণদাকে।মে পরাণদার জীবন ছুঁয়ে আসলে  ভোঁতা জীবন সুচারু রূপে প্রাণ পেতে পারে।এমন মানুষের জীবন যাপনের অর্থ (meaning)দিয়েই পাশে চলা মানুষটি তার জীবনের ইমারত গড়তে পারে,যেখানে ইট,বালি,কংক্রিটের কোন আদিখ্যেতা নেই।মানুষের পূর্ণতা প্রাপ্তির হয়‌।এমন একটি চরিত্রের সন্ধান দিয়েছেন লেখক।পড়তে গিয়ে মনে হয়েছে পুরো গল্পটাই এখানে তুলে দেই।একে আর বিশ্লেষণের কিছু নেই,পর্যালোচনা মে অর্থে তার নিছকই হেঁয়ালী।প্রতিটি শব্দের সাথেই জুড়ে আছে জীবন যাপনের অমোঘ সত্য সূত্র।যার কোন বিকল্প হতে পারে না।জীবনে চলার পথে সবারই এমন কিছু লোকের হাতে পরিচয় হয়।এরা  জীবনের হাসি ,কান্না,বিরহ,বেদনা,সব অনুভূতি বিছিয়ে যান। আমরা সেগুলোর মূল্য দেই না,বুঝিও না।দূরে সরে যায় আবছায়া হয়ে ।প্রযুক্তির দৌলতে মুক্তি তক্কো সব বেপাত্তা হয়ে যায়,হাসিতে ঠাঁই পায় এমন যুক্তিজাল।এমন একটা জীবনদায়ী লেখাতে বিচরণ করতে পারলে নতুন প্রান পাবে পাঠককূল।এ হলফ করে বলা যায়।জীবনকে ভেঙেচূড়ে বিশ্লেষণ করেছেন গল্পের নায়ক পরাণদা, যা জীবনের প্রয়োজনকে পেছনে ফেলে প্রিয়জনকে পাশে নিয়ে পথ চলতে শেখায়।পাঠ করুন ।আর জীবনের আনন্দ উপভোগ করুন।


প্রচ্ছদ-- অনিমেষ মাহাতো

পেজ সংখ্যা--১১৭ 

প্রথম প্রকাশ-- ফেব্রুয়ারী ২০২১

প্রকাশনী-- নীহারিকা পাবলিশার্স

সম্পাদনা-- আরশিকথা

বাঁধাই-- বি- প্রিন্ট

মূল্য--২৫০ টাকা




রীণা দাস, ত্রিপুরা 


আরশিকথা হাইলাইটস

২৬ মার্চ ২০২৩

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.