Type Here to Get Search Results !

শেখ হাসিনা ও ভারতবর্ষ - মৈত্রীর সেতুবন্ধ

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঊষালগ্নে সপরিবারে নিহত হন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহান স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এই সময় তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা স্বদেশে না থাকায় তাঁরা প্রাণে বেঁচে যায়। না হলে সেদিন তাঁদেরকেও হত্যা করা হতো। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী রাজাকারেরা ব্রাসেলসে অবস্থানরত বঙ্গবন্ধুর কন্যাদ্বয় কে অনুসরণ করতে করতে পশ্চিম জার্মানিতেও তাঁদের ধাওয়া করেছিল। সাতাশ বছরের শেখ হাসিনা ও কুড়ি বছরের শেখ রেহানা সেদিন প্রাণে তো বেঁচে গিয়েছিলেন ঠিকই কিন্তু মৃত্যেদূতেরা সেদিনও তাঁদের পিছু নিয়েছিল।

অন্যদিকে, ভারতবর্ষের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী শেখ মুজিবুরকে ভ্রাতৃসম স্নেহ করতেন। আচমকা শেখ মুজিবুরের নিধনে তিনিও বিচলিত হয়ে পড়েন। শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার জীবন রক্ষায় তিনিও চিন্তিত হয়ে পড়েন। তাঁদের জীবন সম্পত্তি রক্ষায় শ্রীমতি গান্ধী তৎপর হয়ে জার্মানিস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনকে যত দ্রুত সম্ভব দুই বোনসহ পরিবারকে ভারতে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেন। সেই মতো ভারত সরকারের ব্যবস্থাপনা ও ভারতীয় রাষ্ট্রদূত এম. আতাউর রহমানের তত্ত্বাবধানে শেখ হাসিনা, বোন শেখ রেহানা, হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ, কন্যা সাইমা ওয়াজেদ ও স্বামী ওয়াজেদ মিঞা ২৫ আগস্ট পালাম বিমানবন্দরে অবতরণ করলে ভারতীয় অফিসারগণ তাদের উষ্ণ অভ্যর্থনায় গ্রহণ করে কঠোর নিরাপত্তায় দিল্লির একটি ফ্ল্যাটে দিয়ে রাখেন। তৎকালীন ক্যাবিনেট মন্ত্রী প্রয়াত শ্রীযুক্ত প্রণব মুখার্জি ও উনার স্ত্রীকে ওদের দেখভালের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। শেখ হাসিনার পরিবার প্রায় ছয় বছর ভারতবর্ষে অবস্থান করে। ১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে চলে গেলে বোন শেখ রেহানাও লন্ডনে চলে যায় শিক্ষা পর্ব শেষ করার জন্য। সেখানে ব্রিটিশ প্রশাসনের নিরাপত্তা তিনি এক আত্মীয়ের তত্ত্বাবধানে ছিলেন।

অবশ্য শেখ হাসিনার জন্যই যে শুধু ভারতবর্ষ বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল এমন নয়। বাংলাদেশ সৃষ্টির ইতিহাসেও শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। এ কথা অনস্বীকার্য যে, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ভারত বিভিন্নভাবে বাংলাদেশকে সহায়তা করেছে। তারমধ্যে যেমন ছিল প্রায় এক কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় ও খাদ্য সরবরাহ, সামরিক ও কূটনৈতিক সাহায্য, আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা সুশ্রূষা করা তেমনি যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করা। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ দেশদ্রোহিতার অভিযোগে যখন বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পাকিস্তান সরকার প্রহসনমূলক বিচারে ফাঁসি কাষ্ঠে ঝুলাতে চেয়েছিল ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সেই দুঃসময়ে তাঁর মুক্তির দাবিতে বিশ্ব জনমত গঠন করেন। প্রায় নয় মাস পরে সেই বছরেরই ১৬ ডিসেম্বর মুক্তি ফৌজ ও ভারতীয় সৈন্য বাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার কাছে যখন পাকিস্তানি সেনাদক্ষ নিয়াজী প্রায় ৯৩ হাজার সৈন্যসহ নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করেন, একটি স্বাধীন রাষ্ট্র রূপে লাল সবুজ পতাকা উড্ডিয়ান হয়, পাকিস্তান সরকার বাধ্য হয় শেখ মুজিবুরকে মুক্তি দিতে। কিন্তু এই ক্ষেত্রেও পাকিস্তান দূরভিসন্ধির আশ্রয় নিয়েছিল। শেখ মুজিবুরকে সরাসরি বাংলাদেশের না পাঠিয়ে ১৯৭২ সনের ৮ জানুয়ারি লন্ডনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। শেখ মুজিবুর সেখান থেকে ভারতবর্ষের জনগণকে কৃতজ্ঞতা জানাতে রয়েল এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে দিল্লিস্থিত পালাম বিমানবন্দরে অবতরণ করেন (১০ জানুয়ারি ১৯৭২)। শ্রীমতি গান্ধী তখন লখনৌ তে থাকা অবস্থাতেই শেখ মুজিবুরের সাথে কথা বলেন। এই কথাকালে বঙ্গবন্ধু বলেন, আমি আপনার কাছে কৃতজ্ঞ, ভারতের জনগণের কাছে কৃতজ্ঞ। জবাবে শ্রীমতি গান্ধী বলেন, ২৩ বছরের অন্ধকার সময় কাটিয়ে আপনি আলোর দিশা দেখিয়েছেন, সেজন্য আমরাও আপনাকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। এভাবেই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সৌভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

দেশে পৌঁছেই শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে দেশকে গড়ে তুলতে সচেষ্ট হন। অবশ্য ভারতবর্ষে থাকাকালীনই ১৯৮১ সনে তাঁকে আওয়ামী লীগের সভাপতি ঘোষণা করা হয়েছিল। অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে ১৯৯৬ এর জুন মাসের সাধারণ নির্বাচনে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে এবং তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তিনি হলেন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী যিনি পূর্ণ সময়ের জন্য (২০০১ সন অর্থাৎ পাঁচ বছর) তার দায়িত্বভার পালন করেন। এই সময়কালেই তিনি ভারত সরকারের সঙ্গে গঙ্গা জল বন্টন চুক্তি স্বাক্ষর করেন (১২ ডিসেম্বর ১৯৯৬)। এই চুক্তি অনুসারে পরবর্তী ৩০ বছরের জন্য - 

ক) ৭৫ হাজার কিউসেকের উপর প্রবাহিত জলের ৪০ হাজার কিউসেক জল পাবে ভারত এবং অবশিষ্টাংশ বাংলাদেশ

খ) ৭০ হাজার কিউসেক জলের অর্ধেক ভারত এবং বাকি অর্ধেক বাংলাদেশ ও

গ) ৭০ হাজার-৭৫ হাজার কিউসেক জলের ৩৫ হাজার কিউসেক জল পাবে বাংলাদেশ এবং অবশিষ্টাংশ ভারত।

        তাছাড়া এই চুক্তি অনুসারেই বাংলাদেশের কুষ্টিয়াতে একটি বাঁধ নির্মাণ ও কৃষিক্ষেত্রে জলসেচের সম্মতি দেওয়া হয়। তাছাড়া এই সময়কালে আরো একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো আওয়ামী লীগ সরকারের তৎপরতায় ১৯৯৯ সালের ৩০ নভেম্বর ইউনেস্কোর ৩০তম সাধারণ সম্মেলনে একুশে ফেব্রুয়ারিকে 'আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস' হিসাবে ঘোষণা করা। এই বছরই বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় শেখ হাসিনাকে 'দেশিকোত্তম' সম্মানে সম্মানিত করে। ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচনে রঙ বেরঙে ভরা এই সরকারের পতন হলে শেখ হাসিনাকে বিরোধী নেত্রীর ভূমিকা দেখা যায়।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দলীয় সরকার গঠিত হলে শেখ হাসিনা দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি শপথ গ্রহণ করেন। এরপর ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচনেও শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। বর্তমানে তিনি চতুর্থ বারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলাচ্ছেন।

        এই সময়কালে শেখ হাসিনার উদ্যোগে ও একাগ্রতায় ভারতবর্ষ ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক আরো গভীর হয়েছে। ২০১৫ সালের পর থেকে অধ্যাবদি প্রায় বারবার এই দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীগণ বিভিন্ন ইস্যুতে মিলিত হয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ২০২২ সালের ৫ সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চার দিনের ভারত সফর। এই সফরে শুধু প্রধানমন্ত্রী পর্যায়েই নয়, অন্যান্য মন্ত্রী পর্যায়, সচিব পর্যায়, বণিক পর্যায়েও শেখ হাসিনা মিলিত হন। বাংলাদেশের উন্নতিকল্পে ভারতকে কিভাবে যুক্ত করা যায় তার জন্য তিনি সব দিক বিচার বিবেচনা করেই পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তিনি আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানির সঙ্গেও দেখা করেন। এই সাক্ষাতের বিষয়ে গৌতম আদানি তার ট্যুইট বার্তায় লিখেন, বাংলাদেশের উন্নতিকল্পে শেখ হাসিনার ভূমিকা তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা পাওয়ার প্রজেক্ট থেকে ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ করেন। তাছাড়া এই সফরকালে নিরাপত্তা, ব্যবসা বাণিজ্য, পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিজ্ঞান প্রযুক্তিবিদ্যা, নদী পরিকল্পনা প্রভৃতি সাতটি বিষয়ে চুক্তি সম্পাদিত হয়। সফরের প্রথম দিনেই তিনি দিল্লির নিজামুদ্দিন আউলিয়া দরগা পরিদর্শন করেন। দক্ষিণ এশিয়ার সুস্থিতিকরণে ভারত ও বাংলাদেশ যৌথভাবে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণের উপর তিনি জোর দেন।

        ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে দিল্লি ও ঢাকা সহ বিশ্বের প্রায় ২০টি রাজধানীতে মৈত্রী দিবস উদযাপন করা হয়। ওই সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদীজিও ঢাকা সফর করেন। এইতো মাত্র কয়েকদিন আগে, ২০২৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ভারতের বিদেশ সচিব বিনয় খাতরা দুই দিনের বাংলাদেশ সফরের শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকারে বলেন, তার নেতৃত্বের প্রতি ভারতের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। তিনি বলেন, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন যাত্রায় ভারত বাংলাদেশের পাশে থাকবে। তিনি আগামীর ৯-১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিতব্য জি-২০ এর ১৮তম সম্মেলনেও শেখ হাসিনাকে উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। 

          ২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। ত্রিপুরবাসীর পক্ষ থেকে তাঁকে উষ্ণ-অভ্যর্থনা প্রদান করা হয়। এই অনুষ্ঠানে তিনিও ত্রিপুরাবাসীর প্রতি তাঁর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। তিনি তাঁর ভাষনে বারবার মুক্তিযুদ্ধ ও ত্রিপুরার ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের জন্য ত্রিপুরার মাটি অতি পবিত্র। এই স্থানে মুক্তিযোদ্ধারা আশ্রয় শিবিরে থেকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধেই শুধু অংশগ্রহণ করেনি, এই ভূমির প্রায় প্রতিটি ঘরেই মুক্তিযোদ্ধারা অতিথিসেবা পেয়েছে। আত্মীয়ের বন্ধনে আবদ্ধ থেকেছে। তিনি বঙ্গবন্ধু ও প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী শচীন্দ্র লাল সিংহের গভীর সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেছেন। তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টাতেই চোত্তাখোলার মৈত্রী উদ্যান ও সাব্রুমের ফেনী নদীর উপর মৈত্রী সেতু আজ বাস্তবের রূপ পেয়েছে। মৈত্রী উদ্যান আমাদেরকে যেমন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কথা স্মরণ করায় তেমনি মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পর্কে জানতেও সহায়তা করছে। আর মৈত্রী সেতু দুই দেশের মধ্যে খুলে দেবে অবারিত দ্বার যার মাধ্যমে শুধু বাণিজ্যই নয়, দুই দেশের মধ্যে গড়ে উঠবে সাংস্কৃতিক ও সামাজিক আদান-প্রদান। আর মাত্র কয়েক দিনের অপেক্ষা, তারপরই হয়তো সেই ঈপ্সিত প্রতীক্ষার অবসান হবে। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম আর ভারতবর্ষের উত্তর পূর্বাঞ্চলের মধ্যে মৈত্রী সেতুই হবে মৈত্রীর বন্ধন। এতে বাংলাদেশ যেমন উপকৃত হবে তেমনি উপকৃত হবে আমাদের ভারতবর্ষও-এই আশা এখন থেকেই গড়ে উঠেছে। তাছাড়াও ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সুসম্পর্কের ফলে ইতিমধ্যেই ত্রিপুরার জনগণের সাথে বাংলাদেশের জনগণের হৃদয়ের সম্পর্কের গভীরতা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের আশুগঞ্জ বন্দর ব্যবহার করে ভারী যন্ত্রপাতি, সিমেন্ট প্রভৃতি ভারতবর্ষের অন্য প্রদেশ থেকে ত্রিপুরায় আসছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে পালাটানা বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ভারী ভারী যন্ত্রপাতি সরাসরি ত্রিপুরাতে আনতে গেলে তা ছিল যথেষ্ট কষ্টসাধ্য ও ব্যয়সাপেক্ষ কিন্তু বাংলাদেশ এক কদম এগিয়ে এসে এই সুবিধা প্রদান করা তা অনেকটাই সহজ হয়ে গিয়েছিল। তাছাড়া দুই দেশের যুগ্ম প্রচেষ্টায় সীমান্তে অনেকগুলো হাট খোলা হয়েছে যেগুলি দুই দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে পরস্পরকে জানা ও বোঝার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা গ্রহণ করছে। তাছাড়া ইতিমধ্যেই ভারতের ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের ঢাকার মধ্যে রেলপথ সম্প্রসারণ এর কাজ এগিয়ে চলছে। হয়তো দু-এক বছরের মধ্যে তাও সমাপ্ত হয়ে যাবে, আর তখন ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন আরো এক ধাপ এগিয়ে যাবে এ কথা জোর দিয়ে বলা যায়।

          পরিশেষে এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে গড়ে ওঠা সৌভ্রাতৃত্বমূলক সম্পর্ক শুধুমাত্র মধ্য এশিয়াই নয়, সমগ্র বিশ্বে এক আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর তা সম্ভব হয়েছে দুই দেশের নেতৃত্বের সুদূরপ্রসারী চিন্তাধারা ও তাঁর প্রয়োগের মাধ্যমেই। বঙ্গবন্ধুর অর্ধসমাপ্ত স্বপ্নগুলির বাস্তবায়ন তাঁর সুযোগ্যা কন্যা শেখ হাসিনা জান প্রাণের পড়োয়া না করে যেভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, অচিরেই হয়তো দেখা যাবে বিশ্ব আসনে বাংলাদেশের নাম স্বকীয়তায় জ্বলজ্বল করছে। মাঝখানের দুই বছর মহামারি করোনাতে যখন সমগ্র বিশ্ব আক্রান্ত ও অর্থনীতি প্রায় ভেঙে পড়ার উপক্রম তখনো বাংলাদেশ ও ভারতের সুসম্পর্কের ফলে এই দুই দেশ মাথা তুলেই চলতে পেরেছে। তাইতো বর্তমানে প্রায় ১৮ কোটি জনগণের বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ২২২৭ ডলার, শিক্ষার হার ৭২.৩ শতাংশ এবং প্রবৃদ্ধির হার ৮.১৫ শতাংশ। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারও ২০১৯ থেকে বর্তমানে ০.০৮ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।আর তা সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার সুদক্ষ পরিচালনার মাধ্যমেই। এই পৃথিবীতে কিছু মানুষ আসে যারা নিজের থেকে নিজের দেশকে বেশি ভালোবাসে। শেখ হাসিনা তাঁদের মধ্যে অন্যতম। আগামী দিন আমাদের মধ্যে এই সম্পর্কের গভীরতা আরো বৃদ্ধি পাবে এই আশা করতেই পারি।


টিংকু রঞ্জন দাস

আগরতলা, ত্রিপুরা


আরশিকথা হাইলাইটস

২৪ মার্চ ২০২৩

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.