উজ্জ্বল কুমার দাস,বাগেরহাট, বাংলাদেশঃ
গোয়াল ভরা গরু পুকুর ভরা মাছ আর মাঠ ভরা ফসল সবটুকু জুড়েই বাঙ্গালীআনা আর এই বিষয়কে বাস্তবে রুপ দিয়ে দেখিয়েছেন এমন একজন উদ্যোক্তা যিনি একদিকে ক্রিয়া ব্যাক্তিত্ব সমাজসেবক একজন সফল জনপ্রতিনিধি অন্যদিকে একজন বিচক্ষণ রাজনৈতিক সংগঠক। তিনি ইতিমধ্যে সমাজে বিভিন্ন স্তরে অবদান রাখায় পেয়েছেন স্বর্ণপদকসহ নানা ধরনের সম্মাননা।যিনি বর্তমানে নিজ শ্রমে গরুর খামার ও মিশ্র মাছের চাষ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।তিনি বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শিকদার হাদিউজ্জামান।
শখ আর সচেতনতা থেকে চলমান উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় অংশীদারিত্বের লক্ষ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে বিগত ২০২২ সালের মাঝামাঝি মহুয়া মানহা এগ্রো পার্ক গড়ে তোলেন।একই সাথে নিজ বাড়ির পাশে ৪০ বিঘা জমির উপর মিশ্র মাছের চাষ শুরু করেছেন তিনি।ঘেরের চারিপাশে নাটোরের ৬ শত সবরি জাতীয় কলার চারা রোপণ করেছেন, রয়েছে বিভিন্ন ফলের গাছ। চাষ করেছেন জারা-১ ও পাকচং জাতীয় ঘাস।শুধু তাই নয় বাড়িতে রয়েছে বিভিন্ন জাতের কবুতর ঘরের সামনে সুদৃশ্য বাহারি ফুলের সাথে সোভা পাচ্ছে গাছে আলু বোখারা নিচে রয়েছে এলোভেরা গাছ।সব মিলিয়ে বলাই যায় তিনি একজন সফল খামারি।
তার গড়ে তোলা মহুয়া মানহা এগ্রো ফার্মে বর্তমানে ১২ টি গবাদি পশু রয়েছে।আসন্ন কোরবানির ঈদ সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন খামরের দায়িত্বে থাকা মোঃ বেদার শেখ।তিনি বলেন,আমাদের খামারের গরুর খাবারের জন্য দেশীয় কাঁচাঘাস ও খরকুটো ছাড়াও অন্যান্য সব খাবার ভেজালমুক্ত অবস্থায় নিজ হাতে তৈরি করি।এ বছর কোরবানিতে ৭ টি গরু বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।যদি ভালো গবাদি পশু কেউ কিনতে চায় তবে নিঃসন্দেহে আমাদের খামারে আসতে পারেন।
এবছর কোরবানিতে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ফ্রিজিয়ান সহ বিভিন্ন জাতের মোট ৭ টি গবাদি পশু। তার খামারে বিক্রির জন্য এধরণের আরো ৬ টি গবাদি পশু প্রস্তুত রয়েছে।কোন ধরনের ক্ষতিকর মোটাতাজা করন পদ্ধতি ছাড়াই সম্পূর্ন দানাদার খাবার ও তার নিজস্ব উৎপাদিত ঘাস খাইয়ে দেশীয় ভাবে তৈরি করা হয়েছে পশু গুলোকে।স্থানীয় সহ দূরদূরান্তের ক্রেতারা তার খামারে এসে পছন্দ সই কোরবানি উপযোগী গবাদিপশু ক্রয় করতে পারবেন ও সরেজমিনে ওজন মেপে দেখার জন্য রাখা হয়েছে সুব্যাবস্থা।
এ বিষয়ে ফার্মের মালিক চেয়ারম্যান শিকদার হাদিউজ্জামান বলেন,বর্তমানে আমার ফার্মে ১২ টি গরু রয়েছে।যার দেখাশোনার জন্য নিয়মিত ৩ জন শ্রমিক মাসিক বেতনে কাজ করেন।এছাড়াও খন্ড কালিন ১৫ জন শ্রমিক চুক্তি ভিত্তিক কাজ করে থাকেন এতে করে ফার্মের উন্নয়নের পাশাপাশি তৈরি হয়েছে তাদের কর্মসংস্থান।
জনপ্রতিনিধি থেকে খামার তৈরির পরিকল্পনা তার মাথায় কেন আসলো এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখার জন্য আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন তারই একটা অংশ বিশেষ এই এগ্রো ফার্মটি করা।কৃষক পরিবারের সন্তান হয়ে আমি গর্বিত আমি ছোট কাল থেকেই দেখে আসছি আমার বাপ-দাদারা কৃষি কাজকে প্রাধান্য দিয়ে আসছে। আর আমি সেই পরিবার থেকেই বেড়ে উঠেছি সে কারনেই মূলত আমার আগ্রহ এছাড়া ছোটকাল থেকেই আমি পশুপাখিকে খুব ভালোবাসতাম এ কারনেই চিন্তা করলাম শখের পাশাপাশি যদি বারতি কিছু আয় হতো এবং দেশ ও জাতির জন্য কিছু করা যায় এ কারনেই এই ফার্মের দিকে আমার ঝোঁক।তিনি আরো বলেন, আমাকে দুই-দুই বার নৌকা মার্কায় মনোনয়ন দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী ও শেখ পরিবারের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি এবং আমৃত্যু যেন আওয়ামী লীগের জন্য কাজ করতে পারি।নিজের অভিজ্ঞতা ও বাস্তবতার নিরিখে তিনি বলেন যদি কেউ এ ধরনের খামার করতে চায় তবে অবশ্যই লাভবান হওয়া সম্ভব তবে এজন্য অবশ্যই ঘাসের কোন বিকল্প নেই।বানিজ্যিক চিন্তা করলে প্রথমে তাকে ঘাসের জমি আবাদ করতে হবে।
স্থানীয়রা জানান, চেয়ারম্যান শিকদার হাদিউজ্জামান গরুর খামারে গরু মোটাতাজা করে উজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।একজন জনপ্রতিনিধি হয়েও নিজের খামারে শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন,তৈরি করেছেন কৃষি খামার একি সাথে চাষ করছেন মিশ্র মাছ।তার এ সফলতা দেখে এলাকার অনেকেই গরু পালনে আগ্রহী হবে।
আরশিকথা বাংলাদেশ সংবাদ
ছবিঃ সৌজন্যে BMF টিভি
৫ই জুন, ২০২৩