আরশিকথা ফরিদপুর ডেস্কঃ
ফরিদপুরে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন-২০২৩ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফরিদপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আয়োজনে,(১ সেপ্টেম্বর) শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে শহরের শ্রীধাম শ্রীঅঙ্গন প্রাঙ্গণে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনকে সফল ও স্বার্থক করার লক্ষ্যে সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন উপজেলার পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক সহ সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতা-কর্মীরা মিছিল ও শোভাযাত্রা করে এই সম্মেলনে আসতে শুরু করেন।
সম্মেলনের শুরুতেই জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বেদমন্ত্র- গীতা পাঠ ও মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করা হয়। সম্মেলনের প্রথমে আশীর্বাদক হিসাবে ধর্মীয় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মহানাম সম্প্রদায়ের সভাপতি শ্রীমৎ কান্তিবন্ধু ব্রহ্মচারী।
ফরিদপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ড. যশোদা জীবন দেবনাথ (সি.আই.পি) এর সভাপতিত্বে, সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন পূজা উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রী জে.এল ভৌমিক। প্রধান অতিথি তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের একের পর এক হামলা করা হয়েছিল এবং অনেকেই দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল।
স্বাধীনতার বিরোধী শক্তি এখনো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপরে সাম্প্রদায়িক হামলার পরিকল্পনা করছে৷ এইদেশ কোন সাম্প্রদায়িক অপশক্তির দেশ নয়৷ তিনি বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আশ্রয়স্থল বর্তমান সরকার প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ পুজা উদযাপন পরিষদ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় একটি সংগঠন। আমরা সনাতন ধর্মাবলম্বীরা শতভাগ মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি। আমরা বিশ্বাস করি বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের সরকার। বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িক, উদারচিন্তার, কল্যান রাষ্ট্রে পরিনত করার চেষ্টা করছে। তাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি আমাদের যে আস্থা আছে তা পুনরায় ভোটের মাধ্যমে প্রকাশ করা হবে। তিনি আরো বলেন, আমরা এইদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিসেবে বসবাস করতে চাই না এবং অন্য দেশে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করবো না। কারণ স্বাধীন সার্বোভৌম একটি রাষ্ট্র দিয়ে গেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান৷ তারই আদর্শের প্রতি সন্মান ও শ্রদ্ধা রেখে আমরা বাংলাদেশের সকল ক্ষেত্রে অগ্রনী ভূমিকা পালন করতে চাই। তিনি, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। এই উৎসবে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় ছুটিসহ সরকারের কাছে বিভিন্ন দাবী বাস্তবায়নের আহবান জানান।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি শ্রী জয়ন্ত কুমার দেব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্রী শুভাশিষ বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক বিপ্লব দে, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ড. ছায়া ভট্টাচার্য, গণসংযোগ সম্পাদক এ্যড. বিনয় ঘোষ, সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়ন্তী রায়, সদস্য মিহির হাওলাদার, সদস্য ধ্রুব কুমার লস্কর, সদস্য মিহির কান্তি ঘোষাল, ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শ্রী শ্যামল কুমার ব্যানার্জী, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও ফরিদপুর পৌর মেয়র অমিতাভ বোস, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শ্রী সুবল চন্দ্র সাহা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলন চাকমা, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক অসীম কুমার সাহা, চৌধুরী গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ ব্যাবস্থাপনা পরিচালক সুধীর চৌধুরী।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ও পূর্বের আয়-ব্যয়ের হিসাব সম্মেলনে তুলে ধরেন ফরিদপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ননী গোপাল রায়। পূর্বের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে ড. যশোদা জীবন দেবনাথ (সি.আই.পি)কে পুনরায় সভাপতি পদে এবং সহ-সভাপতি পদে নদী গোপাল রায় ও পৌর ১৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিধান কুমার সাহাকে সাধারণ সম্পাদক এবং অজয় কুমার রায়কে যুগ্ন সম্পাদক পদে নির্বাচন করা হয়। এই কমিটি আগামী দুই বছরের জন্য দায়িত্ব পালন করবে।পরবর্তীতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে। সম্মেলনে জেলার বিভিন্ন উপজেলা ইউনিয়নের পূজা উদযাপন পরিষদের প্রতিনিধিসহ বিপুল সংখ্যক সনাতনী ভক্তবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সবশেষে মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হয়।
আরশিকথা বাংলাদেশ সংবাদ
৩রা সেপ্টেম্বর ২০২৩