Type Here to Get Search Results !

কোনো শীর্ষক নেই

বিশেষ প্রতিনিধি, আগরতলা,আরশিকথাঃ


১৬ মে বৃহস্পতিবার আগরতলা মহাকরণে রাষ্ট্রীয় বাল স্বাস্থ্য কার্যক্রমের উপর একটি সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এই কার্যক্রমের বিভিন্ন বিষয়ের উপর বিস্তারিত আলোচনা হয়।

এই সাংবাদিক বৈঠকে জানানো হয়েছে,২০১৪ সালে রাষ্ট্রীয় বাল স্বাস্থ্য কার্যক্রম চালু হয়েছিল। রাষ্ট্রীয় শিশু স্বাস্থ্য কার্যক্রম-৯৮৫২০ পর্যন্ত যে সব শিশুদের জন্মগত শারীরিক অসঙ্গতি ঠোঁট কাটা, বাঁকা পা ইত্যাদি রোগ, শারীরিক

আভ্যন্তরিণ অপরিপূর্ণতা, বিকাশগত ত্রুটি এবং শারীরিক প্রতিবন্ধকতা এবং অন্যান্য অসুস্থতায় আক্রান্ত ছিল সেই সমস্ত শিশুদের বিনামূল্য চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে।রাষ্ট্রীয় বাল স্বাস্থ্য কার্যক্রমে মোট ৪৮ টি ডেডিকেটেড মোবাইল হেলথ্ টিম সারা রাজ্যে কাজ করছে। এই ডেডিকেটেড মোবাইল হেলথ্ টিম অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্রে শূণ্য থেকে ৬ বছর বয়স পর্যন্ত ছেলেমেয়েদের স্ক্রিনিং করছে এবং সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত বিদ্যালয়গুলিতে ৬ থেকে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত ছেলেমেয়েদের স্ক্রিনিং করছে। রাষ্ট্রীয় বাল স্বাস্থ্য কার্যক্রমের অন্তর্গত রাজ্যে গোমতী, ধলাই এবং উনকোটি জেলায় তিনটি ডিস্ট্রিক্ট আরলি ইন্টারভেনশন সেন্টার আছে যেখানে বিশেষজ্ঞ প্রশিক্ষিত চিকিৎসক এবং প্যারামেডিক্যাল স্টাফ জন্মগত এবং বিকাশগত ত্রুটিজনিত রোগে আক্রান্ত ছেলেমেয়েদের চিকিৎসা প্রদান করে।

শুধু তাই নয় রাষ্ট্রীয় বাল স্বাস্থ্য কার্যক্রম ত্রিপুরায় জন্মগত হৃদরোগ, শ্রবণজনিত প্রতিবন্ধকতা, বাঁকা পা, দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতা, নিউরাল টিউব ডিফেক্টের মতো বিভিন্ন জন্মগত ত্রুটি নিয়ে জন্ম নেওয়া শিশুদের জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা এবং প্রয়োজনে অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা নিয়েছে। এরজন্য রাষ্ট্রীয় বাল স্বাস্থ্য কার্যক্রম ত্রিপুরা রাজ্যে এবং বর্হিরাজ্যের একাধিক হাসপাতালের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে নিয়মিত প্রয়োজনীয়ভিত্তিক বিশেষ ক্যাম্পের মাধ্যমে চিকিৎসা পরিসেবা প্রদান করছে। এই সাংবাদিক বৈঠকে আরো বলা হয়

শিশু জন্মগ্রহণ করার পর জন্মগত হৃদরোগে আক্রান্ত কোন শিশু শনাক্ত হলে, শিশুদের অভীভাবকরা তালিকাভুক্ত যেকোন হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে চিকিৎসা নিতে পারবেন। অস্ত্রোপচারের খরচ সরকার কর্তৃক সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে প্রদান করা হয়। চিকিৎসা করিয়ে ফিরে আসার পর সরকারের তরফ থেকে ভ্রমণ খরচ হিসেবে দশ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। সাংবাদিক বৈঠকে জানানো হয়েছে,২০১৫ সাল থেকে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৯০০ টির উপর ঠোঁট কাটা এবং তালু কাটা, ৬০০ টি জন্মগত হৃদরোগ, ৩৫০ টি বাঁকা পা, ১০০ টি দৃষ্টি প্রতিবন্ধকর্তাজনিত রোগে আক্রান্ত ছেলেমেয়েদের এবং ৪০০ টি ক্লাবফুট রোগে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা এবং প্রয়োজনে সফল অস্ত্রোপাচার করা হয়েছে। তারা প্রত্যেকেই এখন সুস্থ। রাজ্যে জন্মগত শ্রবণজনিত প্রতিবন্ধকতা রোগে আক্রান্ত শিশুদের ৮০০ টি শ্রবণযন্ত্র বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্রে ৪ লক্ষ ৫ হাজার ৫২১ জন শিশু জন্মগত ত্রুটি, বিভিন্ন শারীরিক ঘাটতি, বিকাশজনিত ত্রুটি এবং শৈশবজনিত রোগ রয়েছে তা সনাক্তকরণ করা হয়েছে।  সনাক্তকরণের জন্য ৪ লক্ষ ৬ হাজার ১৬১ জন স্কুল পড়ুয়াদের পরীক্ষা করা হয়। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রাজ্যে এবং বর্হিরাজ্যের একাধিক হাসপাতালে মোট ১১ জন জন্মগত হৃদরোগে আক্রান্ত শিশুদের বিনামূল্যে অস্ত্রোপচার করা হয়। সেইসঙ্গে ১৪১ টি ঠোঁট কাটা এবং তালু কাটা রোগের অস্ত্রোপচার করা হয়েছে, ১০৫ টি ক্লাব ফুট-এ আক্রান্ত রোগীর পা ঠিক করা হয়েছে, ৭৩ টি শ্রবণযন্ত্র বিতরণ করা হয়েছে, ৪ জন নিউরাল টিউব ডিফেক্ট শিশুদের অস্ত্রোপচার করা হয়েছে, ৬৭ জন অটিজম রোগে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা করা হয়েছে। অন্যান্য রোগে আক্রান্ত আরও ৩২ হাজার ৭৮৭ রোগে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা করা হয়েছে। ধলাই উনকোটি এবং গোমতী জেলার ডিস্টিক্ট ইন্টারভেনশন সেন্টারগুলিতে ২ হাজার ২০৩ জন শিশুর চিকিৎসা করা হয়েছে।

এই সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিকারের অধিকর্তা ডাঃ সঞ্জীব দেববর্মা, পরিবার পরিকল্পনা ও রোগ প্রতিরোধক অধিকারের অধিকর্তা ডা: অঞ্জন দাস, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের মিশন অধিকর্তা শ্রী রাজীব দত্ত, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের যুগ্ম অধিকর্তা শ্রী বীনয় ভূষণ দাস সহ অন্যান্য আধিকারিকেরা।


আরশিকথা ত্রিপুরা সংবাদ

১৬ই মে ২০২৪

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.