রাজ্য সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রীকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন। তাই তিনি মনিপুরের সিজা ফাউন্ডেশনকে হাসপাতাল নির্মাণের জন্য কেবিনেটকে না জানিয়ে জমি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। কিন্তু এই বিষয়টি মিথ্যা। সুদীপ রায় বর্মনের এটি অপপ্রচার বলে দাবি করলেন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী।
সম্প্রতি সুদীপ রায় বর্মন সাংবাদিক বৈঠক করে অভিযোগ করেছেন মনিপুরের সিজা ফাউন্ডেশনকে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জমি প্রদান করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী উদ্যোগী হয়ে এই জমি প্রদান করেছেন। কিন্তু জমি প্রদানের ক্ষেত্রে কেবিনেটের সিদ্ধান্ত নেননি তিনি। নিয়ম-নীতির ঊর্ধ্বে উঠে ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করতে তিনি নিজের মর্জি মতো কাজ কারবার চালাচ্ছেন এবং সরকার পরিচালনা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন সুদীপ বাবু। কিন্তু এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে পাল্টা সাংবাদিক বৈঠক করলেন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। তিনি ঘোষণা দিলেন, এই ধরনের কোন অনৈতিক কাজ হয়নি। তাছাড়া রাজ্য সরকারের পলিসি রয়েছে, রাজ্যের সার্বিক পরিকাঠামগত উন্নয়নে, বিশেষ করে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, শিল্প ক্ষেত্রে কেউ যদি ইনভেস্ট করতে এগিয়ে আসে, তবে রাজ্য সরকার তাকে সাহায্য সহযোগিতা করবে। পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারও রাজ্যের উন্নয়নের এই পলেসি নিয়ে চলেছিল। সেক্ষেত্রে আগরতলাতে আইএলএস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জমি দিয়েছে সরকার। পূর্বতন বাম সরকারের সেই নীতিকে রাজ্য সরকার এখনো ফলো করে চলছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে ধর্মনগরে কাছাড় ক্যান্সার হসপিটালকে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ১৫ একর জমি দেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে মনিপুরের সিজা হাসপাতাল এন্ড রিসার্চ সেন্টার ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে রাজ্য সরকারের কাছে জমি দেবার জন্য আবেদন করেছিল। এই প্রস্তাব পাওয়ার পর সিজা ফাউন্ডেশনের ব্যাপারে অনেক খোঁজখবর নিয়েছে রাজ্য সরকার। তথ্য অনুসন্ধানে দেখা গেছে সিজা হাসপাতাল এন্ড রিসার্চ সেন্টার মনিপুরের ইম্ফলে ১৯৮৫ সাল থেকে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল চালাচ্ছে। উত্তর পূর্বাঞ্চলে অঞ্চলের বছর ধরে এই ধরনের হাসপাতাল চালানো এক বিশাল ব্যাপার। তাই তারা যখন রাজ্য সরকারের কাছে জমি চেয়েছে হাসপাতাল নির্মাণের জন্য তখন রাজ্য সরকার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেছে। যার জন্য এই সিজা হাসপাতাল এন্ড রিসার্চ সেন্টার কর্তৃপক্ষকে জমি দেবার জন্য অনেক জায়গায় জমি খোঁজাখুঁজি করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত আরকে পুরে এআরডিডি অধীনে অবব্যবহারযোগ্য জমির সন্ধান পাওয়া যায়। সেখান থেকে ২৮ একর জমি সিজা ফাউন্ডেশনকে দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কিন্তু জমি হস্তান্তর করার আগে যে সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া এবং অনুমোদন গুলো প্রয়োজন সেগুলি এখনো সম্পন্ন হয়নি। এআরডিডি থেকে শুধুমাত্র নো অবজেকশন সার্টিফিকেট পাওয়া গেছে। অর্থাৎ রাজ্যের উন্নয়নমূলক কাজে এই জমি কে ব্যবহার করা যেতে পারে।
সুশান্ত চৌধুরীর দাবী নো অবজেকশন সার্টিফিকেট পেলেই জমি হস্তান্তর হয়ে যায় না। এই জমি হস্তান্তরের বিষয়টি এর পরে যাবে রেভিনিউ সেকশনে। সেখানে জমির মূল্যায়ন করা হবে। পরে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মন্ত্রীর স্বাক্ষর হবে এবং সেটা কেবিনেটে পাস করা হবে। তারপরেই এই জমি হস্তান্তর করা সম্ভব হবে সিজা হাসপাতাল এন্ড রিসার্চ সেন্টার কে। কিন্তু সঠিকভাবে তথ্য না নিয়ে তড়িঘড়ি করে মিথ্যে অভিযোগ এনেছেন সুদীপ রায় বর্মন। ক্যাবিনেটের সিদ্ধান্ত ছাড়াই জমি হস্তান্তর হয়ে গেছে বলে তিনি প্রচার শুরু করেছেন।তার এই অভিযোগ সরকারকে কালিমা লিপ্ত করা এবং মুখ্যমন্ত্রীকে বদনাম করার জন্য। এক্ষেত্রে মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরীর দাবি, সম্পূর্ণ আইন-কানুন এবং রীতিনীতি মেনে জমি হস্তান্তর করা হবে। এক্ষেত্রে সুদীপ বাবুর এই নেগেটিভ ভূমিকার তীব্র নিন্দা জানান মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী।
৬ই অক্টোবর ২০২৪