Type Here to Get Search Results !

খুললো পদ্মা সেতুর দুয়ার ঃ বাংলাদেশ

আবু আলী

ঢাকা, আরশিকথা ॥

অবকাঠামোর অনন্যতা কিংবা উন্নয়নের ভিত ছাপিয়ে পদ্মা সেতু বাংলাদেশের কাছে আরও বড় কিছু, সেতুটি উদ্বোধন করে তাই বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি বলেন, আর্থিক, প্রকৌশল এবং রাজনৈতিক ত্রিমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে দীর্ঘতম সেতুটি উদ্ধোধন করার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ আজ তার স্বপ্ন পূরণ প্রত্যক্ষ করছে।

 শেখ হাসিনা রাজধানীর সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এবং অন্যান্য অংশের সাথে সংযোগকারী খরস্রােতা এবং জল প্রবাহ, দৈর্ঘ্য ও আকারের দিক থেকে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী বিবেচিত নদীর উপর এই সেতুটির উদ্বোধন করেন।

শনিবার সকালে মাওয়া প্রান্তে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর ফলক উম্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিান, যেখানে বিদেশী কূটনীতিকসহ হাজার হাজার বিশিষ্ট অতিথি উপস্থিত ছিলেন।

রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দেশের উত্তর-পশ্চিম এবং অন্যান্য অঞ্চলের সংযোগকারী যমুনা নদীর উপর ১৯৯৮ সালে এ যাবত কালের দীর্ঘতম বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতু চালুর ২৫ বছর পরে তিনি আরো দীর্ঘতম পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করলেন।তবে, দেশের নিজস্ব অর্থের ওপর নির্ভর করে সেতু তৈরির ব্যাপারে অনেক অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের সন্দেহকে বাতিল করে সম্পূর্ণরূপে অভ্যন্তরীণ অর্থায়নে নির্মিত পদ্মা সেতু অতিরিক্ত তাৎপর্য বহন করে।

পদ্মা সেতু প্রকল্পটি বিভিন্ন প্রকৌশল বিস্ময়ের পাশাপাশি প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ প্রত্যক্ষ করেছে, শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য একটি বিস্ময়কর কাঠামো হিসেবে আবির্ভুত হয়েছে, যেখানে রাষ্ট্রীয় শিল্প যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়েছে এবং কিভাবে ব্যবহার করা হয় তা জানা যায়।রাজনৈতিক বিবেচনায় সেতুটি নির্মানে বৈদেশিক অর্থায়ন বন্ধ করে কার্যত এই উদ্যোগ বাতিল করার সূক্ষ্ম প্রচারণার মধ্যে এই প্রকল্প বহুমুখী বাধার সম্মুখীন হয়েছিল।বেশ কিছু রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক বিশ্লেষক এমনকি কিছু বিদেশী অংশীদারদেরও অনুমান ছিল যে প্রকল্পটি শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হবে।কিন্তু শেষ পর্যন্ত , শক্তিশালী পদ্মা বিজিত হয় এবং উভয় তীরের মানুষ এখন আর অসহায় থাকবে না, কারণ তারা উভয় পাড়ের সাথে সংযোগ পেয়েছে।

রবিবার থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ সেতুর উপর দিয়ে মাত্র ৬ মিনিটে ফেরি ঘাটের ভয়াবহ দুঃস্বপ্ন ছেড়ে সড়কপথে সরাসরি ঢাকায় যাবেন।স্বপ্নের সেতু শুধু রাজধানী ঢাকা এবং দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত সরাসরি সড়ক ও রেল যোগাযোগই স্থাপনই করবে না এটি এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বৃহত্তর সংযোগ ও বাণিজ্যের দুয়ার খুলে দেবে।এছাড়াও সেতুটি সাধারণভাবে দেশের পাশাপাশি বিশেষ করে ২১ টি জেলার জন্য সমৃদ্ধি আনতে ভ্রমণের সময় এবং অন্যান্য খরচ কমিয়ে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রভাব ফেলবে।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ অন্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।অনুষ্ঠানের শুরুতে থিম সঙ বাজানো হয় এবং পদ্মা বহুমুখী সেতুর উপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।উপ-আঞ্চলিক সংযোগ বাড়াবে পদ্মা সেতু: ভারতীয় হাই কমিশনার পদ্মা সেতুকে দক্ষিণ এশিয়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবন হিসেবে বর্ণনা করে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেছেন, এই সেতু বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এবং উপ অঞ্চলের মধ্যে সংযোগ বাড়াবে। শনিবার মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি।  পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানান ভারতীয় হাই কমিশনার। তিনি বলেন, ঐতিহাসিক এই দিনে বাংলাদেশের ভাই-বোনদের শুভেচ্ছা, অভিনন্দন এবং শুভকামনা জানাই। এই পদ্মা সেতু স্পষ্টতই বাংলাদেশ এবং উপ-অঞ্চলের মধ্যে সংযোগ বৃদ্ধি করবে। বাংলাদেশ সরকার নানা 'প্রতিকূলতার' মধ্যেও প্রকল্পটি 'সফলভাবে' সম্পন্ন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, "এ অঞ্চলে বাণিজ্য বাড়ার পাশাপাশি ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে সহজে যোগাযোগ ও ভ্রমণের সুযোগ দেখতে চাই আমি। দুই বন্ধু রাষ্ট্র বাংলাদেশ ও ভারত আগামীতেও পরস্পরের সঙ্গী হয়ে উন্নয়নের পথ চলবে বলে আশা প্রকাশ করেন ভারতীয় হাই কমিশনার।


আরশিকথা বাংলাদেশ সংবাদ

২৫শে জুন ২০২২

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.
  1. বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী প্রেরিত ৮০০ কেজি আম --- সৌজন্যতার নিদর্শন, বাংলাদেশের আপামর মানুষের ভালোবাসার স্পন্দন। ত্রিপুরা তথা ভারত এবং বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাবের এক বিরল দৃষ্টান্ত হয়ে রইলো। শুভেচ্ছা ও ভালোবাসায় ত্রিপুরা বাসীর পক্ষ থেকে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষকে জানাই হার্দিক অভিনন্দন।

    উত্তরমুছুন