Type Here to Get Search Results !

ভেঙে পড়ল বাংলাদেশ বিমানের দরজা

প্রভাষ চৌধুরী, ঢাকা ব্যুরো এডিটর: বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে যুক্ত হওয়া সর্বাধুনিক উড়োজাহাজ বোয়িং-৭৮৭ আকাশবীণার জরুরি দরজার একটি বিশেষ অংশ (র্যাফট) ভেঙে পড়েছে। মঙ্গলবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে ফ্লাইটের আগে এই ঘটনা ঘটে। এ কারণে ঢাকা থেকে সিঙ্গাপুরগামী ফ্লাইটটিতে দেড় ঘণ্টা দেরি হয় বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় বিমানের প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমানকে তত্ক্ষণাৎ সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিমানের প্রকৌশল শাখার পরিচালক সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ‘এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দায়ী যেই হোক কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন মোসাদ্দিক আহমেদ বলেন, ‘এই ঘটনায় যে বা যারাই দায়ী হবে তাদের বাড়ি পাঠানো হবে। কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। তবে এ পার্টসটি লন্ডনে পাওয়া গেছে। তিন দিনের মধ্যে তা এনে সংযুক্ত করা হবে।’ বিমানের একটি সূত্র জানায়, বিমানটি জরুরি অবতরণের পর জরুরি দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে বাইরের দিকে বেলুনের মতো একটি স্লাইডিং সিঁড়ি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বেরিয়ে আসে। যেখানে যাত্রীরা লাফিয়ে পড়ে উড়োজাহাজের বাইরে বেরিয়ে আসতে পারে। সেটাকেই র্যাফট বলা হয়। আর এই র্যাফট একবার ব্যবহারযোগ্য। দরজা থেকে ভেঙে নিচে পড়ে যাওয়ায় এটি আর ব্যবহার করা যাবে না। ওই ফ্লাইটের এক যাত্রী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, অনেক শখ করে শুধু ড্রিমলাইনারে চড়ার জন্য সিঙ্গাপুর যাচ্ছিলাম। কিন্তু এটা কল্পনাও করতে পারিনি এমন একটা নতুন ফ্লাইটের দরজা ভেঙে যাবে। প্রকৌশল শাখার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ৮টায় ড্রিমলাইনার দিয়ে সিঙ্গাপুর ফ্লাইট করার প্রস্তুতি চলছিল। এটি বোর্ডিং ব্রিজে সংযুক্ত অবস্থায় বিএফসিসি থেকে যাত্রীদের জন্য ড্রিমলাইনারে খাবার তোলা হচ্ছিল। এ সময় প্রকৌশল বিভাগের মোস্তাফিজুর রহমান হঠাৎ দরজা অন করতে গিয়ে ভুল বাটনে চাপ দেন। এতে আসল দরজা না খুলে ইমারজেন্সি ডোরের র্যাফট ভেঙে পড়ে যায়। এতে উপস্থিত সবাই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যান। তারা এটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ম্যানুয়ালি জোড়াতালি দিয়ে লাগানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ব্যর্থ হওয়ার পর বিষয়টি ফাঁস হয়। এরপর অন্য প্রকৌশলীরা গিয়ে র্যাফট সংগ্রহ করে নিয়ে যায় প্রকৌশল বিভাগে। তারা সিঙ্গাপুর ফ্লাইট বিলম্বে হলেও অপারেট করার সিদ্ধান্ত দেন। প্রকৌশল বিভাগ নিশ্চিত করে রাফট ছাড়াই ড্রিমলাইনার দিয়ে ফ্লাইট অপারেট করা সম্ভব হবে। গত ৫ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন করা হয় বোয়িং-৭৮৭ ড্রিমলাইনার, যার নাম দেওয়া হয় আকাশবীণা। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বলছে, এটিই সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সংবলিত উড়োজাহাজ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করেন। ওই দিনই সন্ধ্যায় ছিল আকাশবীণার প্রথম ফ্লাইট, গন্তব্য ছিল মালয়েশিয়া। বহুল কাঙ্ক্ষিত বোয়িং ড্রিমলাইনার ৭৮৭ ‘আকাশবীণা’ দেশে আনা হয় গত ১৯ আগস্ট। ওই দিন বিকেল ৫টা ১৯ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে উড়োজাহাজটি। যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলের বোয়িং কার্যালয় থেকে রওয়ানা হয়ে এদিন বিকেলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ল্যান্ড করে ড্রিমলাইনারটি।

১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ইং

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.