মিথুন রিবেরু,জাপান,আরশিকথাঃ
লকডাউনের আগে জাপানে বসবাসরত অনেক বিদেশি দেশটির বাইরে গিয়ে করোনার কারণে আটকে পড়েছে। সম্প্রতি আটকে থাকা বিদেশি নাগরিকদের পুনরায় জাপানে প্রবেশ করার অনুমতি দিয়েছে জাপান। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে দেশটিতে করোনার সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে গত ২২ জুলাই সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেন। সরকারী এই বৈঠকের সংবাদ জাপানের বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচার হলে দেশের বাইরে গিয়ে আটক থাকা বিদেশি এবং দেশের নাগরিকদের মনে স্বস্থি ফিরে আসে।
জাপানের বাইরে গিয়ে আটকে থাকা বিদেশিদের বেশিরভাগ ছাত্র, গবেষক, চাকুরীজীবি এবং ব্যবসায়ী। করোনার ভয়াবহতার কারণে জাপানের বিভিন্ন শহরে জরুরী অবস্থার ঘোষণা করলে এই সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়।
আশিয়ার ১২টি দেশের মধ্যে ব্রুনাই, কম্বোডিয়া, হংকং, লাওস, ম্যাকাও, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের নাগরিকদের জাপানে ভ্রমণের উপর যে নিষেধাজ্ঞা ছিল তা প্রত্যাহার করা হয়েছে তবে সে ক্ষেত্রে করোনা প্রতিরোধে অতিরিক্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে যার মধ্যে অন্যতম হলো পরীক্ষা।
সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে জানান, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও তাইওয়ানসহ ১২ আশিয়ান দেশের নাগরিকরা নিরাপদে জাপানে প্রবেশ করতে পারবে। বিদেশি বাসিন্দাদের ধীরে ধীরে নির্দিষ্ট ভিসা দেওয়া হবে। আর যারা বাইরে আটকে আছে তারা পুনরায় দেশে প্রবেশ করতে পারবে।
বর্তমানে ২ লাখ ৮ হাজার বিদেশি জাপানের বাইরে আটকে আছে। এর মধ্যে ৮৮ হাজার শিক্ষার্থী ও দক্ষ কর্মীই বেশি। তারা ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আগে বিভিন্ন কারণে জাপানের বাইরে গিয়েছিলেন। ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা কাযকরের পর তারা জাপানে আসতে পারেননি। তাদের বেলায় বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এছাড়া নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম অনুসরণ করলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের কিছু দেশের মতো অন্যান্য দেশ থেকে অল্প সংখ্যক ব্যবসায়ীকে জাপান প্রবেশে অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছে জাপান সরকার। এ ক্ষেত্রে কেবলমাত্র বেসরকারী বিমানে করে এসে বিমানবন্দরে ৭২ ঘন্টা অবস্থান করার পর শহরে প্রবেশ করার অনুমোদন মিলতে পারে।
তবে জাপান প্রবেশে এখনো ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হয়নি। যারা নতুন ভিসা পেয়েছেন বা যারা ভিসা পাওয়ার অনেক পরে জাপান প্রবেশ করবেন তাদেরও জাপানে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে বলে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এর বাইরে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের নাগরিকদের জাপান প্রবেশের জন্য আলোচনা চলছে। থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের নাগরিকদেরও জাপানে প্রবেশ ও বাহির হতে অনুমতি দেওয়া হবে তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।
জার্মানি ও ফ্রান্সের মতো ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপকারী আরও অনেক দেশ পুনরায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে দেশি ও বিদেশী নাগরিকদের মধ্যে বৈষম্য রাখেনি।
জাপানে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার মধ্যে ১২৯ টি দেশ ও অঞ্চল রয়েছে। গত ১৭ জুলাই থেকে নতুন করে এ তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে নেপাল ও কেনিয়াসহ আরো ১৭ টি অঞ্চল। বিদেশি ভ্রমণকারীদের মধ্যে যারা ১৪ দিনের মধ্যে এর যে কোনও একটিতে ভ্রমণ করেছেন তাদের প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।
তথ্যসূত্র: জাপান টাইমস
২৯শে জুলাই ২০২০