Type Here to Get Search Results !

ভ্যাকসিনে চীনকেই গুরুত্ব দিল বাংলাদেশ, কী বলছে ভারত

প্রভাষ চৌধুরী, ঢাকা ব্যুরো অফিস,আরশিকথাঃ বাংলাদেশ করোনা ভ্যাকসিন ট্রায়ালের জন্য বেশ আগ্রহ দেখিয়েছিল ভারত। মাত্র এক সপ্তাহ আগে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বাংলাদেশ সফরে এসে জানিয়েছিলেন, ভারত করোনা ভাইরাসের টিকার ব্যাপারে এক কদম এগোলে বাংলাদেশ তার সুফল পাবে। অর্থাৎ, ভারতে ভ্যাকসিন এলে তা বাংলাদেশেও আসবে। কিন্তু এর আগেই চীন তাদের ভ্যাকসিন বাংলাদেশে ট্রায়ালের জন্য প্রস্তাব দেয়। লাদাখ সীমান্তে চীন-ভারত বিবাদের সূত্র ধরে বাংলাদেশ দুই দেশই কাছে টানার চেষ্টা করছে বলে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা গেছে। এদিকে, বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, আইসিডিডিআরবি’র সঙ্গে যৌথভাবে চীনের সিনোভ্যাক বায়োটেক তাদের ভ্যাকসিনের হিউম্যান ট্রায়াল চালাবে যারা করোনায় আক্রান্ত হয়নি তাদের ওপর। এ ব্যাপারে সরকারি ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে বলে জাহিদ মালেক জানান। বাংলাদেশের এ সিদ্ধান্তে ভারতে গভীর বিস্ময় ও হতাশা তৈরি হয়েছে বলে কলকাতাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্যা টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, অনেকেই মনে করছেন শ্রিংলার ‘ভ্যাকসিন ডিপ্লোম্যাসি’ ব্যর্থ হয়েছে। লাদাখ সংঘর্ষের পর চীন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও নিবিড় করেছে। সংকটের মোকাবিলায় এই করোনা পরিস্থিতিতেও ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বাংলাদেশ সফর করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও নরেন্দ্র মোদির দূতের সঙ্গে আলোচনা করেন। তারপর বাংলাদেশের এই পদক্ষেপ ভারতকে সার্বিকভাবে বিস্মিত করেছে বলে সূত্রের বরাতে খবর প্রকাশ করেছে টেলিগ্রাফ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি কূটনৈতিক মহলের কেউ কেউ বিষয়টাকে শ্রিংলার ঢাকায় নিয়ে আসা 'ভ্যাকসিন ডিপ্লোম্যাসি'র ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন। পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সূত্রটি টেলিগ্রাফকে বলেছে, গত জুলাইয়ের মাঝামাঝিতে বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল চাইনিজ ভ্যাকসিনের ট্রায়ালের বিষয়টি পরিস্কার করার পরেও ভারতের রিজার্ভেশনের কথা জানানোর পর এতদিন তা থমকে ছিল। তবে বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সামনে এগিয়ে যাওয়া প্রমাণ করে ভারতের রিজার্ভেশনের বিষয়টি উপেক্ষিত হয়েছে। ওই সূত্রের মতে, বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং চীনা অ্যাম্বাসেডরের বৈঠকে ভ্যাকসিন ট্রায়ালের বিষয়টি পরিস্কার হওয়ায় বাংলাদেশে ভ্যাকসিন রেসে ভারতকে পেছনে ফেলে দিল চীন। তবে এ বিষয়ে ভিন্ন মতও দিয়েছেন কোনো কোনো কূটনীতিক। তাদের মতে, বাংলাদেশে চীনা ভ্যাকসিন ট্রায়ালের অনুমোদন ভারতের কূটনৈতিক ব্যর্থতা হিসেবে দেখা ঠিক নয়। ভারতীয় একটি সূত্র বলছে, 'এটি একটি মানবিক ইস্যু যেখানে মানুষের জীবনের প্রশ্ন জড়িত... অন্য দেশের জন্য ভারতের ভ্যাকসিন রিজার্ভেশনের বিষয়টিকে অতিরঞ্জন এবং ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তিনি যোগ করেন, গত সপ্তাহের শ্রিংলার সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজনের পর মোমেন তার ব্রিফিংয়ে স্পষ্টভাবে বলেন যে, বাংলাদেশ চীন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্য দেশের সঙ্গে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের বিষয়ে যোগাযোগ রাখছে। 'কোনো একটি পক্ষকে 'হ্যাঁ' বলার মানে এই নয় যে অন্যদের জন্য দরজা বন্ধ করে দেবে... অন্য সকল দেশের মতোই বাংলাদেশও দ্রুত ভ্যাকসিন পেতে চাইছে।' বলেন তিনি। চীনা কোম্পানির ভ্যাকসিন ট্রায়ালে সবুজ সংকেত দেয়ার বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, আমরা এক লাখ ভ্যাকসিন ফ্রি পাবো। এছাড়া কোম্পানিটি থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভ্যাকসিন পেতে বাংলাদেশ প্রাধান্য পাবে।

২৯শে আগস্ট ২০২০

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.