Type Here to Get Search Results !

৩০ ঘণ্টা পর সুন্দরবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে

আবু আলী, ঢাকা, আরশিকথা ॥

দীর্ঘ ৩০ ঘণ্টা পর বাংলাদেশর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবনের পূর্ব বনবিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের দাসের ভারানি এলাকার আগুন নিভেছে। ফায়ার সার্ভিস, বনবিভাগ, সিপিজি সদস্য ও স্থানীয়দের সম্মিলিত চেষ্টা এবং বৃষ্টির পানিতে ওই এলাকার আগুন সম্পূর্ণ নিভেছে। এর আগে সোমবার বেলা ১১টার দিকে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বাগেরহাটের শরণখোলা রেঞ্জের দাসের ভারানি এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানে সোমবার সন্ধ্যায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বন বিভাগ। তদন্ত কমিটিকে আগামী ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মাদ বেলায়েত হোসেন বলেন, ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় আমরা আগুন নেভাতে সক্ষম হয়েছি। এরপরেও কোথাও কোনো সুপ্ত আগুন থাকলে, তা নেভানো হবে। প্রয়োজনে আবার ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতা নেওয়া হবে। ঘটনাস্থলে বনরক্ষীদের টহল জোরদার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টে যদি এ অগ্নিকাণ্ডকে মানবসৃষ্ট কলা গয়, তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কমিটির প্রধান এবং সহকারী বন সংরক্ষক মোঃ জয়নাল আবেদিন ধারণা করছেন, অনেকে ধারণা করছেন মৌয়ালদের (যারা বন থেকে মধু সংগ্রহ করেন) কারণে আগুন লেগে থাকতে পারে। অথবা কারোর বিড়ি সিগারেটের আগুন ফেলে রাখা থেকে আগুন জ্বলতে পারে। শুকনো পাতা জমে যাওয়া এবং অনেকদিন বৃষ্টি না হওয়ার কারণে আগুনটি অনেকক্ষণ জমছে বলে তিনি ধারণা করছেন। তদন্ত কমিটি আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি বের করবে বলে তিনি জানান। আগুনে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা এখনো জানাতে পারেনি বনবিভাগ। তবে ফায়ার সার্ভিস বলছে, আগুনে অন্তত তিন একর বনভূমি পুড়ে গেছে। যদিও পুড়ে যাওয়া বনভূমির পরিমাণ আরও বেশি বলে দাবি করেছে স্থানীয়রা। এর আগে ৮ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবনের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্চের ধানসাগর স্টেশনের টহল ফাঁড়ি এলাকায় অগ্নিকাণ্ডে তিন শতাংশ বনভূমি পুড়ে যায়। এ নিয়ে গেল ২০ বছরে সুন্দরবনে ২৫ বার অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। সুন্দরবনে একের পর এক আগুন লাগার ঘটনায় ক্ষোভ ও হাতাশা প্রকাশ করেছেন স্থানীরা। স্থানীয়বাসিন্দা হাবিব, মান্নানসহ কয়েকজন বলেন, সোমবার আগুনের ধোঁয়া দেখেই আমরা বনবিভাগকে খবর দেই। পরে বনবিভাগের কর্মকর্তারা এলে তাদের সঙ্গে আমরা বনের মধ্যে ঢুকি। লোকালয় থেকে অনেক দূরে গহীন বনে আগুন লাগায় ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে আমাদের দেরি হয়েছে। বনরক্ষী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সঙ্গে আমরাও আগুনের চারপাশে ফায়ার বেজ কাটার কাজ করেছি। দু’দিনের অক্লান্ত পরিশ্রমে আজ সুন্দরবনের আগুন নেভাতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু এসময়ে সুন্দরবনের অন্তত পাঁচ একর বনভূমি পুড়ে গেছে।
বনবিভাগের সহয়তাকারী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কমিউনিটি পেট্রোলিং গ্রুপের (সিপিজি) সদস্য মো. ফিরোজ ও সগির হোসেন বলেন, আগুনের খবর পেয়ে আমরা বনবিভাগের সঙ্গে এসে গাছের ডাল কেটে, ফায়ার সার্ভিসের মালপত্র বহন করে এবং ফায়ার বেজ কেটে আগুন নেভাতে সহযোগিতা করেছি।


আরশিকথা বাংলাদেশ সংবাদ

৪ঠা মে ২০২১


 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.