সতেরোটা দিন পালিয়ে বেরিয়েছি ছারপোকার মতো
এখন আর খুব ইচ্ছে হয়না নিজেকে দেবার, এই তুলোরাশি হাত ইচ্ছে হয়না কারো হাতে মেলাবার ইচ্ছে হয়না সিগরেট খাওয়া শক্ত কালো ঠোঁটে ঠোঁট মেলাবার, তবু ওসব ঠুনকো ইচ্ছের কি আর মূল্য আছে অভাবের কাছে? সবকিছুই কি দিতে হয় বুঝি জীবন বাঁচার পাছে? সাত মাসের উদরে রেখে শেফালীর বাবা যেদিন পালিয়েছিলো, সেদিন কেউ দাঁড়ায়নি আমার পাশে ছয় বছর আগে মা'টাও মরে গিয়ে বুঝি বেঁচে গিয়েছিলো গেলো অগ্রহায়ণে শেফালীর সাত পেরলো ছানি পরা চোখে বাবাও এখন প্রায় অন্ধো। ভেবেছিলাম, কোন এক চাকরি করে জীবন ঠিক পার করে নিবো নতুন জামায় শেফালীর হাসি মুখ দেখবো, বাবার ছানি পরা চোখে আবার খুশি দেখবো, কে আর জানতো?
ওদের খুশি দেখতে অফিসের স্যারকেও খুশি করা লাগতো?
তিন বছরে সাতবার অফিস বদল করা জীবন, আর কতোক্ষণ....?
এখন আর স্যারকে খুব দূরের কেউ মনে হয়না! আমার মতো আজন্মা পাপীর দূরের আর কাছের নেই, ভাত যে দেবে আমার, ভাতার তো সেই! এই তুলোরাশি দেহ, নিতে চাইলে কেহ, কুড়ি কেজি ভাতের দামে পেতে পারে সেও! মাঝেমাঝে, কি সব ভাবছি আজেবাজে? শেষ ইচ্ছেতো এখনো ঠিক জানা আছে বাবাকে তো পারিনা আমি গলা টিপে মারতে পারিনা মন থেকে "মরে না যে" বলতে। বাবা গেলে দুই সিসি বিষ খাবো পেট ভরে শেফালীকে তার আগে গলা টিপে দেবো মেরে। তারপর শান্তি, চিরদিনের মুক্তি, লাগবে না আর কোনো স্যারের দেহ ভক্তি। .......সোফায় বসে হঠাৎ পায়ের আওয়াজ শুনি স্যার বুঝি এসে গেছে, দিতে হবে শান্তি। চোখ মুছে, কর গুনে ঠিক রাখি আবার, আজ হলে হয় বুঝি তেত্রিশবার......!
মানিক মনোয়ার,বাংলাদেশ
৬ই সেপ্টেম্বর ২০২০