কবির প্রেম...
অরুন রাগের প্রথম আভাস পূব দিগন্ত পানে,
অরুন রাগের প্রথম আভাস পূব দিগন্ত পানে,
বাতাস হয়েছে অনুরণিত প্রভাতী পাখির গানে|
“বিনিদ্র রজনী কাটিল সজনী ভাবিয়া তোমার কথা”,
এই কথা ভেবে কালিদাস চলে, মনেতে অসীম ব্যথা|
মাসের পরেতে বছর ঘুরেছে হয় নি তো চোখে চাওয়া,
কালিদাস ভাবে এহেন সকালে হবে কি প্রিয়া কে পাওয়া|
ক্লান্ত চরণ, নিশি জাগরণ, ক্লেশ কিসে হয় বেশি,
নয়ন সমুখে ভেসে ওঠে শুধু আনন মুক্তকেশী|
সেদিনও এমনি ছিল যে সকাল, ছেড়ে সে প্রিয়ার ভবন,
বাহিরে গেছিল কালিদাস যবে মুছিতে ললাট লিখন|
তাহার পরেতে কেটে গেছে কবে বহু বৎসর কাল,
সরস্বতীর সাধনার বলে জ্বলেছে জ্ঞানের মশাল|
এখন আবার এসেছে সময় বঁধুয়া মিলন লাগি,
সে কথা ভেবে অন্তবিহীন কেটেছে যে রাত জাগি|
প্রাসাদ দুয়ারে প্রহরী শুধায়, “কি বা তব প্রয়োজন?”
কালিদাস কয়, “যাইব ভিতরে, আছে যে আপনজন|”
সংবাদ গেল অন্তঃপুরেতে, এসেছে কে এক জন,
দেখা করিবারে রাজকন্যারে ধনুর্ভঙ্গ পন|
এ খবর শুনে রাজার দুহিতা কৌতুহলের বশে,
প্রহরীরে কয়, “প্রেরণ কর সে আগন্তুকেরে এখনি আমার সকাশে|”
আদেশের পরে প্রহরী কহে, “কালিদাস তুমি যাও,
রুদ্ধ দুয়ার রাজকুমারীর যদিবা খুলিতে চাও|”
ক্লান্ত চরণে কালিদাস যায় রুদ্ধ দুয়ার সমুখে,
হৃদয় আবেগে কন্ঠ বিকল, শব্দ আসে না মুখে|
যার কথা ভেবে কেটেছে অনেক নিদ্রা বিহীন নিশা,
তাকে অবশেষে কহে কালিদাস, “অস্তি কস্চিৎ বাক বিশেষা|”
(কিংবদন্তী বলে কবি প্রিয়া তাকে বলেছিলেন প্রতিটি শব্দ দিয়ে এক একটি মহাকাব্যের রচনা করতে| কুমারসম্ভব শুরু হয় “অস্তি উত্তরাশ্যাং দিশি ....” দিয়ে আর মেঘদূতের শুরু “কস্চিৎ কান্তা....” দিয়ে|)
-- রবিরশ্মি ঘোষ, অস্ট্রেলিয়া
২৪শে আগস্ট ২০১৯