আবু আলী, ঢাকা ॥
দীর্ঘ ৭৭৭ দিন কারাভোগের পর মুক্তি পেলেন বাংলাদেশের প্রক্তন প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বয়স বিবেচনায় শর্ত সাপেক্ষে তাকে মুক্তি দিয়েছে সরকার। ২৫ মার্চ বুধবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতাল থেকে ৬ মাসের জামিনে মুক্তি পান খালেদা জিয়া।
তার দন্ডের কার্যকারিতা স্থগিত করে মুক্তির আদেশের নথি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কারা কর্তৃপক্ষের হাত ঘুরে বিকেল ৩টার পর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে পৌঁছায়। পরে বিকেল সোয়া ৪টার দিকে হাসপাতাল থেকে বের করে আনা হয় খালেদা জিয়াকে।
বঙ্গবন্ধু মেডিকেল থেকে খালেদা জিয়াকে সরাসরি তার গুলশানের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। এর আগে দুপুরে খালেদা জিয়াকে আনতে বিএসএমএমইউতে যান তার পরিবারের সদস্য এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতারা।
এদিকে, খালেদা জিয়াকে এক নজর দেখতে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের সামনে ভিড় করেন শত শত মানুষ। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে খালেদা জিয়াকে বের করার আগে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুলসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের সরানোর চেষ্টা করেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের কারাদন্ড নিয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দী ছিলেন খালেদা জিয়া। তাকে পুরান ঢাকার পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারে বিশেষ কারাগার স্থাপন করে রাখা হয়। গত বছরের এপ্রিল থেকে তিনি বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুটি শর্তে তাকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ২৪ মার্চ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ৩টায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
তিনি জানান, দুর্নীতি মামলায় দন্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দন্ড ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে তাকে দুই শর্তে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১-এর উপধারা ১ ধারা অনুযায়ী বয়সের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে মানবিক কারণে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মুক্তিকালীন খালেদা জিয়াকে ঢাকায় তার নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। তিনি বিদেশ যেতে পারবেন না।
পরে ২৫ মার্চ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘মানবিক বিবেচনায় খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি তার ছোটভাইয়ের জিম্মায় থাকবেন। এ সময় তিনি কেন রাজনীতি করবেন?’
২৫শে মার্চ ২০২০
২৫শে মার্চ ২০২০