পি.আর. প্ল্যাসিড, জাপান:
প্রতিবছর মার্চ মাসের শেষ ভাগে জাপানে চেরী (সাকুরা) ফুল ফোটে। এই চেরী ফুল ফোটার সাথে সাথে জাপান তার রূপ বদলে মনোরম এক রূপ ধারণ করে। এ সময় জাপানের বিভিন্ন এলাকার পথঘাট ও পার্ক সমূহে চোখ ধাঁধাঁনো দৃশ্য উপভোগ করতে প্রচুর পর্যটকের সমাগম হয় দেশের অভ্যন্তর থেকেই। মার্চের শেষ প্রান্তে শুরু হয়ে এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত জাপানে বলা যায় যে সকল স্থানে চেরী ফুল বেশী থাকে ওসব স্থান গুলোয় ভ্রমণ বিলাসীদের ভীর থাকে উল্লেখযোগ্য ভাবে।
জাপানের অভ্যন্তরে দেশী বিদেশী পর্যটক বা ভ্রমণ বিলাসীদের পাশাপাশি বাইরের দেশ গুলো থেকেও একই রকম পর্যটকের আগমন প্রতি বছরই বেশ জমজমাট হয়। বিশেষ কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ এই হানা মি বা চেরী ব্লোসোম দেখার জন্যই সাধারণত পর্যটকদের জমে উঠে এই ভীড়। এসময় জাপানের হয় সিজনাল ব্যবসা। যার উপর অর্থনৈতির সূচকও করে উঠানামা।
এবছর শুরুতে অর্থাৎ জানুয়ারী মাসের শুরুর দিকে জাপানে করোনা ভাইরাস (কভিড-১৯)-এ আক্রান্ত রোগী প্রথম শনাক্ত করণ করা হয়। এরপর থেকেই বিদেশীদের জাপান আগমণ এবং পর্যটকদের বিষয় ভাবতে শুরু করে দেশটির সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্তৃপক্ষ।
সারা পৃথিবীতে করোনা ভাইরাস (কভিড-১৯) এর সংক্রমন এবং ভয়াবহতার কারণে বাইরের দেশ গুলো থেকে পর্যটকদের উপর কিছুটা নিষেধাজ্ঞা জারি বা নিয়ন্ত্রণ করলে মার্চ মাসে পর্যটকের পরিমান কমে যায় যা বিগত বছরের তোলনায় ৯৩%। ১৫ এপ্রিল ২০২০, বুধবার, দেশটির পর্যটন বিভাগ (ট্যুরিজম এজেন্সি) এক ঘোষণায় তথ্যটি জানায়। কমে যাওয়া পর্যটকের সংখ্যা ১৯৩,৭০০ জন বলে উল্লেখ করা হয়।
প্রতি বছর যে বিশটি দেশ থেকে পর্যটক বেশী আসে তাদের মধ্যে একমাত্র চিন এবং তাইওয়ান থেকেই সবচেয়ে বেশী পর্যটক জাপানে আসে ঘুরতে। যে কারণে দেখা গেছে এবছর কমে যাওয়া পর্যটকদের মধ্যে ৯৮.৫% পর্যটকই কেবল চিন থেকেই আসে নি।
১৯৬৪ সনে শুরু করা মার্চ মাসে জাপানে চেরী ফুল দেখার জন্য আসা বিদেশী পর্যটকদের হিসাব সংরক্ষণ নথি অনুযায়ী এবারেই সব চেয়ে কম সংখ্যক বিদেশী পর্যটকের আগমন ঘটে। ২০১১ সনের মার্চ মাসে জাপানে ঘটে যাওয়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ সুনামীর পর এই সংখ্যা কমে গিয়ে হয়েছিল ৬২.৫%।
শুধু বিদেশী পর্যটকই নয়, জাপানের ভ্রমণ বিলাসীদের মধ্যেও এবছর ৮৫.৯% অর্থাৎ ২৭২,৭০০ জন দেশের বাইরে ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকার কারণে, এমন কি দেশের অভ্যন্তরেও জাপানিদের ভ্রমণ করা বন্ধ থাকায় ট্যুরিজম ব্যবসায় লাভের পরিমান অনেকটাই কমে গেছে যার ফলে ইতিমধ্যে অনেক ট্যুরিজম ব্যবসার সাথে জড়িত ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসা গুটিয়ে ফেলার পরিকল্পনা করছেন।
১৭ই এপ্রিল ২০২০
১৭ই এপ্রিল ২০২০