আরশি কথা

আরশি কথা

No results found
    Breaking News

    জাতীয় প্রেস দিবস পেশাজীবি সাংবাদিকদের কাছে আত্মসমীক্ষার দিনঃ ডঃ বিশ্বেন্দু ভট্টাচার্য, ত্রিপুরা

    আরশি কথা


    সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় লড়াই জোরদার করা ও নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার অঙ্গীকার নিয়ে ১৬ নভেম্বর দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে ৫৫ তম জাতীয় প্রেস দিবস। ভারতবর্ষের প্রেক্ষাপটে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার মূল্যায়ন অবশ্যই বর্নময়। জরুরি অবস্থার সময় সংবাদমাধ্যম সরকারি নিয়ন্ত্রণে এসেছিল ক্ষমতাললুপ তদানীন্তন শাসকগোষ্ঠির রাজনৈতিক স্বার্থে। পরবর্তীকালে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যম নানাভাবে শাসকের রোষানলে পড়েছে, তবে স্বকীয়তা হারায়নি। সম্প্রতি, সংবাদ বিপননের মানসিকতায় নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ওয়াদা যেমন নীতিভ্রষ্ট হয়েছে, তেমনি পেশার বানিজ্যকরনও ভারতীয় ব্যবস্থায় লক্ষ্য করা  যাচ্ছে। রাজনৈতিক ব্যক্তি, শিল্পপতি থেকে শুরু করে প্রভূত্ববাদে বিশ্বাসীরাও সংবাদমাধ্যমকে লগ্নিক্ষেত্র হিসেবে বেছে নিচ্ছেন যা আজ স্বাধীন সাংবাদিকতার সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

     
    ১৯৫৬ সালে প্রথম প্রেস কমিশন ভারতীয় সংবাদপত্রের নীতি নিয়ন্ত্রিক স্বাধীন সংস্থার সুপারিশ করেছিল মূলতঃ স্বাধীনতা আন্দোলনে সংবাদমাধ্যম ও জনমত গঠনকারী সংগ্রামীদের আত্মনিয়োগ উপলব্ধি করে। সেই অনুলিপি থেকেই ১৯৬৬ সালের আজকের দিন "প্রেস কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া" যাত্রা শুরু করে। ধরেই নেওয়া হয়েছিল, সংবাদমাধ্যম স্বনিয়ন্ত্রিত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান। যেখান নীতিগত বিষয়ে পরামর্শ ছাড়া আর কোন পরিচালনগত সাহায্য প্রয়োজন নেই। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে সেই চিন্তার মূল্যায়ন করলে নির্দ্বিধায় বলা যায় আক্ষরিক অর্থেই তা সঠিক ছিল না। তাই, নখদন্তহীন প্রেস কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া -কে আইনি ক্ষমতা দেওয়া এবং সংবাদমাধ্যমের প্রকৃত বিচারক করার দাবি উঠেছে। কিন্তু মানা হবে কেন? সংবাদমাধ্যমের পোশাককে যখন নিজস্ব কায়দায় প্রয়োজন মতো ব্যবহারের সুযোগ আছে। তখন প্রেস কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া -র ক্ষমতা বাড়ানো অপেশাদারিদের কাছে নিশ্চিত বিপদের হাতছানি। তাই, এই দাবী আজও বিলাপ।

    সাংবাদিকতার মতো গুরুত্বপূর্ণ পেশায় অবাদ অনুপ্রবেশ ঘটেছে প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ন্ত্রণহীনতা এবং পুঁজি বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টির ফলেই। এই সুযোগে অনেক বিনিয়োগকারী সংবাদমাধ্যমে লগ্নি করছেন স্রেফ বানিজ্যিক লাভালাভ ও অবাঞ্চিত ক্ষমতা উপভোগের জন্য যা গোটা পেশাকে দ্ব্যর্থহীন সমালোচনার মুখোমুখি করে দিয়েছে। ক্ষমতা লিপ্সু রাজনৈতিক নেতা ও দল, কিয়দাংশ অপেশাদারি সাংবাদিক ও সংবাদ সংস্থার মাধ্যমে নিরপেক্ষ শব্দটি হাস্যকর করে দিয়েছে। প্রতিদিন যে সাংবাদিকরা নতুন শব্দ ছন্দে নতুন নতুন খবর নতুন আঙ্গিকে উপস্থাপন করেন ও জনমত গঠনে নিয়ামক ভূমিকায় থাকেন, তাদের একাংশ আজ রাষ্ট্রশক্তির হাতের পুতুলে রূপান্তরিত হয়েছেন শুধুমাত্র স্বল্পকালীন সুযোগ গ্রহন করে; কিংবা অপেশাদারিত্বের কারনে। অন্য যেকোন পেশার চাইতে সাংবাদিকতায় মেধার অভিযোজন সর্বাধিক, কিন্তু সেই চিরন্তন সত্য অনুরণনের সুযোগ ক'জন পাচ্ছেন।

    তাই, জাতীয় প্রেস দিবস পেশাজীবি সাংবাদিকদের কাছে আত্মসমীক্ষার দিন মাত্র।






    ডঃ বিশ্বেন্দু ভট্টাচার্য,ত্রিপুরা

    ত্রিপুরা প্রধান, ইউ এন আই

    রাজ্য প্রতিনিধি,টাইমস্ অব ইন্ডিয়া



    ছবিঃ সৌজন্যে ইন্টারনেট

    ১৬ই নভেম্বর ২০২০



     

    3/related/default