Type Here to Get Search Results !

বিসর্জন হলো স্বয়ং সরস্বতীর : পঞ্চভূতে বিলীন হলেন সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর, দু'দিনের রাষ্ট্রীয় শোক

নিজস্ব প্রতিনিধি,আরশিকথাঃ


সুরের অজস্র মণিমুক্তো সম্পদ হিসেবে অনুরাগীদের কাছে গচ্ছিত রেখে পঞ্চভূতে বিলীন হল লতা মঙ্গেশকরের নশ্বর দেহ। মুম্বইয়ের শিবাজি পার্কে রবিবারের সন্ধ্যায় পূর্ণ মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হল সুরসম্রাজ্ঞীর। এদিন শিবাজি পার্কে  ভারতরত্নকে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের মতো বিশিষ্ট রাজনীতিবিদরা। শাহরুখ খান, শচীন তেন্ডুলকর, আমির খান, রণবীর কাপুর, জাভেদ আখতার, শ্রদ্ধা কাপুরদের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রের তারকাদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন গুণমুগ্ধরাও। কোভিডের পাশাপাশি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন কিংবদন্তি। গত ৮ জানুয়ারি থেকে ভরতি ছিলেন মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে। করোনাকে হার মানিয়েছিলেন। নিউমোনিয়ারও আর কোনও লক্ষণ ছিল না বলে খবর। মাঝে ভেন্টিলেশন থেকেও বের করা হয়েছিল শিল্পীকে। কিন্তু ফের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। কোভিড পরবর্তী জটিলতাই কাল হল।

শনিবার বিকেলের পরই পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত রবিবারের সকালে তাঁর প্রয়াণ সংবাদে শোকস্তব্ধ গোটা দেশ। কোভিডবিধি মেনেই শিল্পীর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। ১৯৫০ থেকে দীর্ঘ কয়েক দশক ‘কোকিলকণ্ঠী’র গান মুগ্ধ করেছে দেশবাসীকে। আয়েগা আনেওয়ালা, প্যার কিয়া তো ডরনা কেয়া, আল্লা তেরো নাম, কঁহি দীপ জ্বলে – ছয় ও সাতের দশকে এসব গান জনপ্রিয়তার যে শিখর ছুঁয়েছিল, তা আজও অম্লান। জীবনভর মনপ্রাণ দিয়ে সুরসাধনার পুরস্কারও তিনি কম পাননি। বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা ছাড়াও ঝুলিতে এসেছে সিনে অ্যাওয়ার্ড অফ লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট থেকে শুরু করে পদ্মভূষণ, পদ্মবিভূষণ, দাদাসাহেব ফালকে, ফিল্মফেয়ার লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট, ভারত রত্ন-সহ একাধিক সম্মান। বছর কয়েক ধরে ধীরে ধীরে জনসমক্ষে ফিকে হচ্ছিল লতা মঙ্গেশকরের কণ্ঠ। অসুস্থতার জন্য খুব বেশি কাজ করতে পারতেন না। তবে উরিতে ভারতীয় জওয়ানদের সাফল্য কিংবা পরবর্তী সময়ে দেশে তোলপাড় ফেলে দেওয়া বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে ছোট করেই দিয়েছিলেন সুরেলা বার্তা।কিংবদন্তির প্রয়াণে শোকাহত গোটা দেশ। সুরের সরস্বতীর মৃত্যুতে দেশজু়ড়ে দু’দিন পালিত হবে জাতীয় শোক। ঘোষণা করল কেন্দ্র। ইতিমধ্যে শোকজ্ঞাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি-সহ একাধিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ লেখেন, “স্বর্গীয় সুর। অতুলনীয় মানুষ। একজন ভারতরত্ন। লতাজির কৃতিত্ব অতুলনীয়।” তিনি আরও লেখেন, “লতাজির মৃত্যু হৃদয় বিদারক। তাঁর গানে দেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ফুটে উঠত।”
টুইটারে শোকপ্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি লেখেন, “আমি ব্যথিত। এ যন্ত্রণা ভাষায় ব্যক্ত করতে পারব না। লতা দিদি আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন। তাঁর চলে যাওয়ায় যে শূন্যস্থান তৈরি হল, তা পূরণ করা যাবে না। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তাঁকে ভারতীয় সংস্কৃতির একজন অনন্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে মনে রাখবে, সুরেলা কণ্ঠ দিয়ে মানুষকে মন্ত্রমুগ্ধ করার এক অতুলনীয় ক্ষমতা ছিল তাঁর।”


আরশিকথা দেশ-বিদেশ

৬ই ফেব্রুয়ারি ২০২২