রাজ্য সফরে এসে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার শুরু করে দিয়ে গেলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বললেন, চার বছর হয়ে গেছে। সামনে নির্বাচন আসছে, আবার আসবেন। আরও পাঁচ বছরের জন্য যেন ত্রিপুরাবাসী সুযোগ দেন। প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেলেন ত্রিপুরাকে দেশের মধ্যে এক নম্বর রাজ্য হিসেবে গড়ে তুলবেন। অমিত শাহ মঙ্গলবার দুপুরে স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে তার ভাষণে বিগত ২৫ বছরের বাম আমলের সঙ্গে বর্তমান সরকারের চার বছরের তুলনা করেন। বলেন, ২০১৫ সালে বিজেপির সভাপতি হিসেবে যখন এসেছিলেন, তখন মানুষের মধ্যে ছিল ভয়, আতঙ্ক। প্রশাসনের মধ্যে ছিল ক্যাডার রাজ।রাজনৈতিক সন্ত্রাস যেখানে থাকে সেখানে উন্নয়ন হয় না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে অষ্টলক্ষ্মীর মর্যাদা দিয়ে বিকাশে নজর দিয়েছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব নেশামুক্ত ত্রিপুরা গড়ার যে অভিযান শুরু করেছেন তার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, ত্রিপুরায় এখন মাথাপিছু আয় ৩০ শতাংশ বেড়েছে। অপরদিকে খুন, সন্ত্রাস, ধর্ষণের মতো অপরাধ ৩০ শতাংশ কমেছে। ত্রিপুরার উন্নয়নে তিনি মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব ও উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা দুজনেরই নাম উল্লেখ করেছেন। ত্রিপুরা এখন আত্মনির্ভরতার দিকে এগোচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় আড়াই লক্ষ লোককে ঘর প্রদান, বিমানবন্দরের নাম মহারাজা বীর বিক্রম বন্দর করা, ৩৭ হাজার ব্রু রিয়াং শরণার্থীদের সমস্যার সমাধান, আয়ুষ্মান যোজনা, মুখ্যমন্ত্রী শ্রমিক কল্যাণ কার্ড, কোভিড পরিস্থিতির দরুন প্রত্যেক গরিব ব্যক্তিকে মাথাপিছু ৫ কেজি করে খাদ্য শস্য প্রদান, রেলপথে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও দেশের বিভিন্ন শহরের সঙ্গে ত্রিপুরার যোগাযোগ স্থাপন, বিদ্যুতায়ন এসমস্ত বিভিন্ন প্রকল্পের কথা উঠে আসে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে। ত্রিপুরা ছাড়াও তিনি জাতীয় ইস্যু নিয়েও কথা বলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেন মোদীজি ভারতকে সুরক্ষিত রেখেছেন। কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। তাই ৩৭০ ধারা বিলোপ করা প্রসঙ্গ তোলেন। আর এতদিন কংগ্রেস সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি ৩৭০ ধারাকে শিশুর মতো কোলে নিয়ে রেখেছিল।এদিন সমাবেশে বিশিষ্টদের মধ্যে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব, উপ মুখমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক, প্রদেশ বিজেপির সভাপতি ডা: মানিক সাহাসহ রাজ্যের মন্ত্রী-বিধায়করা। মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপির সভাপতির ভাষণ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মঞ্চে আসার পর।তারা খুব সংক্ষিপ্ত আকারে ভাষণ রেখেছেন। তার আগে বক্তব্য রাখেন প্রতিমা ভৌমিক যীষ্ণু দেববর্মণ সহ অন্যান্যরা। সমাবেশে বক্তারা প্রত্যেকেই অমিত শাহকে ত্রিপুরার মুক্তিদাতা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। শাসক দলের সমাবেশ বলে কথা। এসেছেন কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপির সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অমিত শাহ। তাই প্রত্যাশিতভাবেই ব্যাপক লোকসমাগম হয়। রাজ্যের প্রতিটি মহকুমা থেকে দলীয় কর্মী সমর্থকরা আসেন। উদয়পুর ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে পুজো দিয়ে অমিত শাহ আসেন স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে। সেখান থেকে যান আনন্দনগরে ফরেনসিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি পূজনে।আরশিকথা ত্রিপুরা সংবাদ
৯ই মার্চ ২০২২