বানভাসি শহর ও আমরা
***""''''''''''''***
বড় রাস্তার দু'পাশে
কোন রকমে নাক ভাসিয়ে দাঁড়িয়ে আছে
আমার চেনা শহর।
না, এই শহরে কোন ব্যস্ততা নেই
নেই কোন কোলাহল
হাকডাক, চিৎকার চেঁচামেচি
সব আজ বদলে গেছে আর্তনাদে।
যেদিকে চোখ যায় শুধু জল আর জল
তবুও একটু জলের জন্য কতো হাহাকার
তৃষ্ণার্ত ঘর থেকে সমানে ডেকে যাচ্ছে
আমাদেরকে ত্রাণ দাও
চিড়া গুড় বিস্কুট যা খুশি দাও
তৃষ্ণা নিবারণের জন্য পানীয় জল দাও
কিন্তু কে দেবে?
বানভাসি এ শহরের
সবার ঘরেই যে একই ক্রন্দন রোল।
কারও ঘরেই উনুন জ্বলে নি
মুখে পড়েনি কোন দানা
নিরন্ন মানুষদের এমন ভয়ার্ত চেহারা
দেখতে অভ্যস্ত নয় এ শহর
ভারতবর্ষের মানচিত্রের একটা টুকরো ছবি
চোখের সামনে ভাসছে
নিরুপায়ের মতো আমরা দেখছি
আর বুঝতে পারছি মানুষ কতোটা অসহায়।
আলোহীন রাতের আকাশের তারাদের সাক্ষী রেখে
মৃত্যুলীন জলে
সবিনয়ে ভেসে যায় প্রাণীদের মৃতদেহ
আর তারই সাথে সলিল সমাধি প্রাপ্ত প্রাণ।
অ-সাতারু দেহগুলি ভাসতে ভাসতেই বলে যায়
যদি পারো হাত বাড়াও
মৃতপ্রায় যে দেহগুলো এখনও বেঁচেবর্তে আছে
এগিয়ে এসে তাদের হাত ধরো
আমাদের মতো ওদেরকে ভেসে যেতে দিও না
নিয়ে যাও ওদেরকে মৃত্যুর ওপারে।
বরাকের জলে ভাসমান ওই দেহগুলি
হৃদয়ের ঘরে প্রদীপ জ্বেলে দিয়ে বলে যায়
আমরা মানুষ
সময় হয়েছে সেই পরিচয়ে
নিজেকে আবার নিজের কাছেই জবাবদিহি করার।
- টিংকু রঞ্জন দাস, আগরতলা
৩রা জুলাই, ২০২২
বানভাসি শহর ও আমরা --- বাস্তব চিত্র, সুন্দর উপস্থাপনা।
উত্তরমুছুন