ঈশ্বরের দুরবিন ।। কবিতা ।। স্বপন তালুকদার, বারাসত

আরশি কথা

।। ঈশ্বরের দুরবিন ।।


ছোটো ছেলে--একটি ব্যাগ নিয়ে,

 হাঁটছিল জোরে।

 ছেলেটার  হাত থেকে সেই ব্যাগ--

এক চোর---

আচমকা নিলো কেড়ে।

চোরটি দৌড়ে পালালো তারপরে।।


পালিয়ে, তাড়াতাড়ি করে--

ব্যাগটি,  খোলার চেষ্টা করে---

ভেবেছিলো, মূল্যবান কিছু আছে,

ব্যাগের ভেতরে..।।


কিছু কাপড়, শ্বাসকষ্টের যন্ত্র, ছিলো, তাতে পড়ে।

 ভাবলো মনে মনে----

 কেন এটা,---আনলাম,চুরি করে?


দামী কিছু না পেয়ে,  চোর, হতাশ হয়ে যায়।

 সঙ্গে সঙ্গে সেই ব্যাগটি, ফেরত দিতে চায়।।


সন্তর্পণে চোরটি, ছেলেটির কাছে আসে।

মৃত একটি লাশ দেখে, ছেলেটির পাশে।।


মৃত লাশটি ছিলো, ওই ছেলেটির মা'র।

 দুচোখ দিয়ে জলের ধারা--

 পড়ছে ছেলেটার।।


শ্বাসকষ্টে, ছেলেটির মায়ের, যখন প্রাণ যায়।

ঠিক তখন, ব্যাগ নিয়ে,  চোরটি পালায়।।


চোরটি যদি ব্যাগটি, চুরি না করতো ছেলেটার।

 তবে হয়তো শ্বাসকষ্টে, প্রাণ যেতো না মা'র।।


এসব দেখে চোরটি, পালাতে যখন যায়--

 পিছন থেকে, আসা এক বাসে,---

 সজোরে ধাক্কা খায়।

 সঙ্গে সঙ্গে বাসের ধাক্কায়, চোরের প্রাণ যায়।।


দুটি অজানা মৃতদেহ, পাশাপাশি থাকে পড়ে।

 কিছুক্ষণ আগেও তারা,  জীবিত ছিলো--

 কেউ যায় নি মরে।।


 কিছু  কিছু ব্যাগের মধ্যে টাকা-পয়সা,

 দামি গহনা, থাকে না, শুধু পড়ে।

 কারও কারও জীবন বাঁচানোর---

 শেষ সম্বল টুকু, থাকে, ভিতরে।।


 অন্যের ক্ষতি করে হয়তো, আজ বেঁচে যাবে।

এর ফল  হাতেনাতে---

 একদিন ঠিক পাবে।।


 মানুষের চোখকে,অতি সহজেই--

 ফাঁকি দেওয়া যায়।

উপরওয়ালা কিন্তু, কোনোভাবেই--

ছাড় দেবে না, তোমায়।।


তাঁর চোখকে, ফাঁকি দেওয়া--

সম্ভব নয় কোনদিন।

 উপর থেকে দেখছেন তিনি,--দিয়ে দুরবিন।। 


তাঁর দুরবিনে ধরা পড়বো, তুমি, আমি, সবাই।

পাপের থেকে এখানে কিন্তু---

 কারো নিষ্কৃতি নাই।।

 সঠিক সময়ে, সঠিক সিদ্ধান্ত, ঠিক তিনি নেবেন।

 যার যতটুকু শাস্তি প্রাপ্য--

 তাকে, ততটুকুই দেবেন।।


- স্বপন তালুকদার, বারাসত


ছবিঃ সৌজন্যে ইন্টারনেট

১৪ই মে ২০২৩

 

3/related/default