বিএসএফ ত্রিপুরা আন্তঃসীমান্ত অপরাধ এবং অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বহুমুখী কৌশল গ্রহণ করেছে। বিশেষ করে পাচার বাণিজ্যে ও অনুপ্রবেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে সীমান্তে সেনা বাড়ানো হয়েছে। নজরদারি জোরদার করা হয়েছে এবং অত্যাধুনিক পরিষেবা এবং ড্রোন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে এই বিষয়টি জানালেন ত্রিপুরা বিভাগের বিএসএফ আইজি প্যাটেল পীযূষ পুরুষোত্তম দাস। সাংবাদিকদের তিনি জানান, সমস্ত ফিল্ড কমান্ডারদের গোয়েন্দা তথ্য ভাগ করা এবং ত্রিপুরা পুলিশ, টিএসআর, জিআরপি, আরপিএফ, কাস্টমস, আরআই, বন বিভাগ এবং অন্যান্য সহকারী সংস্থাগুলির সাথে সমন্বয় বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অবৈধ অনুপ্রবেশকারী এবং সীমান্ত পাচারকারীদের বিরুদ্ধে সীমান্ত এবং এবং রাজ্যের ৫ কিলোমিটারের ভেতরে উভয়স্থানেই যৌথ অভিযান চালানোর নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতি বিচার করে বিএসএফ আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমনে সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে জানালেন আইজি। তিনি আরো জানান,
ত্রিপুরা পুলিশ এবং টিএসআর বাহিনীর সাথে সমন্বয় সাধন করে একসাথে রেলওয়ে স্টেশন, বাস স্ট্যান্ড, আন্তঃরাজ্য চেকপোস্ট ইত্যাদিতে মোবাইল চেকপোস্ট স্থাপন করা হচ্ছে বিএসএফের তরফ থেকে।বাংলাদেশে চলমান পরিস্থিতির কারণে, বিএসএফ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং বিভিন্ন পর্যায়ে বিজিবির সাথে নিবিড় সমন্বয় বজায় রাখছে বলেও তিনি জানান। তিনি বলেন,২০২৪ সালের জুলাই মাসে, আইজি বিএসএফ- অঞ্চল কমান্ডার স্তরের সম্মেলন ছাড়াও, ৪টি কমান্ড্যান্ট স্তরের পতাকা বৈঠক এবং বিজিবির সাথে ১৫০কোম্পানি কমান্ডার বিওপি স্তরের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল।যেসব সীমান্ত এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ সেগুলোতে বিএসএফ ও বিজিবি যৌথভাবে বিশেষ সমন্বিত টহল চালিয়ে আধিপত্য বিস্তার করছে এবং ২০২৪ সালের জুলাই মাসে এ ধরনের ১০০টিরও বেশি টহল চালানো হয়েছে। এতে দুই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক আস্থা আরও জোরদার হয়েছে। তার বক্তব্য অনুযায়ী,
সাম্প্রতিক সময়ে ত্রিপুরা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ থেকে শিক্ষার্থীদের নিরাপদভাবে ভারতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বিএসএফ এখন পর্যন্ত ৯০০ জনের বেশি শিক্ষার্থীকে নিরাপদে ভারতের প্রবেশ করাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
২০২৪ সালের জুলাই মাসে, সীমান্ত এলাকায় অস্ত্র থেকে অপ্রাণঘাতী গুলি চালানোর ৫৬টি ঘটনা ঘটেছে, যেখানে সীমান্তের আন্তঃসীমান্ত অপরাধী এবং অনুপ্রবেশকারীদের প্রতিরোধ করতে ৭০ রাউন্ডেরও বেশি গুলি চালানো হয়েছিল। এটি নির্ভরযোগ্যভাবে জানা গেছে যে গুলির কারণে ৬ আন্তঃসীমান্ত অপরাধী আহত হয়েছে। পাশাপাশি আইজি জানান, বিএসএফ জুলাই মাসে ৪ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের মাদকদ্রব্য জব্দ করেছে যার মধ্যে রয়েছে ৮৪.৬ টন চিনি, ১২৬৯২টি ইয়াবা ট্যাবলেট, ৩৬০ কেজি গাঁজা, ৫৬৬৯ বোতল কাফ সিরাপ। এছাড়া ১৮০টি গবাদি পশু একক অথবা যৌথ অভিযানে বিএসএফ এক মাসেই আটক করতে সমর্থ হয়েছে। জুলাই ২০২৪ এ আরও ৭৮ জন অবৈধ অনুপ্রবেশকারী (৭১ বাংলাদেশী নাগরিক এবং ৬জন রোহিঙ্গা অবৈধ অভিবাসী), ২৩ জন ভারতীয় নাগরিককে আন্তঃসীমান্ত চোরাচালানের সাথে জড়িত এবং ৪ জন দালালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে যারা অবৈধ অনুপ্রবেশ সহায়তা করেছিল। আইজি বলেন, জুলাই মাসে বন বিভাগের সঙ্গে যৌথ অভিযানে ৭৬ হাজার গাঁজার গাছ ধ্বংস করা হয়েছে। আইজি আরও জানিয়েছেন, যে বিএসএফ ত্রিপুরা রাজ্যের সীমান্ত সুরক্ষিত রাখতে এবং সমস্ত আন্তঃসীমান্ত অপরাধ এবং অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে বাহিনীর প্রত্যেক জওয়ান প্রতিশ্রুতিতে অটল রয়েছে।
আরশিকথা ত্রিপুরা সংবাদ
ছবিঃ সৌজন্যে ইন্টারনেট
৩১শে জুলাই ২০২৪