Type Here to Get Search Results !

অমাবস্যার আঁধার জয়ে প্রস্তুত মাতা ত্রিপুরেশ্বরী মন্দির

স্নেহাশিস পাল, উদয়পুরঃ
 মন্দির নগরী উদয়পুরের মাতাবাড়ি আবারও বাহারি রঙে সেজে উঠেছে। দুইদিন ব্যাপী ঐতিহ্যবাহী দীপাবলি উৎসবের সূচনা হবে মঙ্গলবার ( ৬ নভেম্বর )। অসুরবিনাশী দেবী দশভূজার আরাধনার পর গোটা দেশ জুড়ে মানুষ জেগে ওঠেন শ্যামা মায়ের আরাধনায়। সুন্দর এই বসুন্ধরাকে শান্তির ধরাধামে পরিণত করার আরাধনায় ব্রতী হয় ধর্মপ্রাণ মানুষ। 
ফি বছর দীপাবলি উপলক্ষ্যে মাতাবাড়িতে দেওয়ালি মেলা বসে। একান্নপীঠের এক শক্তিপীঠে পুণ্যার্থীদের ঢেউয়ে ভেসে যান মা ত্রিপুরেশ্বরী। 
সমাগম ঘটে লক্ষাধিক  পুণ্যার্থীর। রাত্রি যত গভীর হতে থাকবে ততই যেন পুণ্যার্থীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। তার একটাই কারণ, এই দেওয়ালি মেলা বা উৎসব মাতা ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরকে কেন্দ্র করে। 
জনসমুদ্রের ঢেউয়ে  মাতা ত্রিপুরেশ্বরী মন্দির ও মন্দির চত্বরের আনাচ-কানাচ ডুবে যায় প্রতি বছরই। এই ত্রিপুরেশ্বরী মন্দির ভারতবর্ষের পবিত্র ধর্মস্থানগুলির একান্নপীঠের এক পীঠ। যেহেতু মন্দিরটি কচ্ছপের উপরের শক্ত খোলার অনুকরণে তৈরি, তাই এই পীঠস্থানটি কুমারপীঠ নামেও পরিচিত। 
এই মন্দিরের ভেতর দুইটি দেবীর মূর্তি রয়েছে। একটি বড় ও অপরটি ছোট। বড় দেবীর মূর্তিটিই দেবী ত্রিপুরেশ্বরী। ছোট মূর্তিটিকে বলা হয় ছোট মা। এই ছোট মা হলেন দেবী চণ্ডীমা। 
কথিত আছে - ১৫০০ খ্রিষ্টাব্দে মহারাজা ধন্যমাণিক্য স্বপ্নাদেশ পেয়ে মাতা ত্রিপুরেশ্বরীর এই মূর্তিটি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম থেকে এনে এর প্রতিষ্ঠা করেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। পরবর্তী সময়ে মহারাজা কল্যাণ মাণিক্য কল্যাণ সাগর খননের সময় মাটির নীচ থেকে ছোট মা অর্থাৎ চণ্ডীমায়ের মূর্তিটি পান। 
প্রতি বছর দুইদিন ব্যাপী দীপাবলি উৎসবের দিনগুলিতে মা ত্রিপুরেশ্বরী ও চণ্ডীমা কে নতুন কাপড় পরিয়ে অলংকারে সজ্জিত করে পূজার্চনা করা হয়। পাশাপাশি দেওয়ালি মেলাকে ঘিরে মন্দির ও মন্দির চত্বরে আলোর বন্যায় অমাবস্যার কালো রাতকে মুছে দেয়। 
দেওয়ালি মেল উপলক্ষ্যে মেলা কমিটির প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। মঙ্গলবার ( ৬ নভেম্বর ) বিকাল চার ঘটিকায় দীপাবলি উৎসবের উদ্বোধন করবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন উপ-মুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মণ। এছাড়া অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে থাকবেন রাজস্বমন্ত্রী নরেন্দ্র চন্দ্র দেববর্মা, উপজাতি কল্যাণ মন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়া, কৃষিমন্ত্রী প্রনজিৎ সিংহ রায়, বিধায়ক বিপ্লব কুমার ঘোষ, বিধায়ক রামপদ জমাতিয়া প্রমুখ। 
এদিকে মেলাকে সর্বাঙ্গীণ সার্থক করে তোলার জন্য নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। থাকবে প্রায় ১২০০ পুলিশ এবং টিএসআর বাহিনী, ১০০০ স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী। এছাড়া থাকবে ১২টি ওয়াচ টাওয়ার ও ৩৬টি সিসি ক্যামেরা। থাকছে ১৫টি ড্রপগেইট। 

ছবিঃ সৌজন্যে প্রতিবেদক
৫ই নভেম্বর ২০১৮ইং                

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.