Type Here to Get Search Results !

বাংলাদেশে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ

আবু আলী, ঢাকা ॥ করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সরকার। এ সময় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও বন্ধ থাকবে। দেশে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে সচিবালয়ে জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে ২৩ মার্চ সোমবার দেশটির মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ কথা জানান। একই সঙ্গে সতর্কতামূলক ব্যবস্থার সুবিধার্থে আজ ২৪ মার্চ মঙ্গলবার থেকে সরকারের সহায়তায় সারাদেশে সেনাবাহিনী নিয়োজিত থাকবে বলে তিনি জানান, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস ও তার পরের দুই দিন শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। এর সঙ্গে মার্চের ২৯, ৩০, ৩১ এবং এপ্রিলের ১, ২ তারিখ সাধারণ ছুটি সংযুক্ত করা হয়েছে। এর পর ৩ ও ৪ এপ্রিল আবার সাপ্তাহিক ছুটি। এছাড়া আগামীকাল (আজ) মঙ্গলবার থেকে বিভাগীয় ও জেলাশহরগুলোতে সামাজিক দূরত্ব এবং সতর্কতামূলক ব্যবস্থার জন্য বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দিতে সেনাবাহিনী নিয়োজিত হবে। এ সময় কাঁচাবাজার, ওষুধের দোকান, খাবারের দোকান ও নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রির দোকান ছাড়া অন্য সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। বন্ধ থাকবে সব ধরনের রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান। মসজিদে না গিয়ে বাড়িতে নামাজ পড়ার জন্যও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে গণপরিবহন সীমিতভাবে চলাচল করলেও তা এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে। গণপরিবহনের সব চালক ও সহকারীদের মাস্কসহ প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রত্যেক জেলা প্রশাসককে সংশ্লিষ্ট জেলার দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনকে ৫০০ চিকিৎসকের একটি তালিকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাধারণ ছুটির সময় গার্মেন্টস কারখানা খোলা থাকার ব্যাপারে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, গার্মেন্টসের ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেরা সিদ্ধান্ত নেবে। অন্যদিকে বাংলাদেশের করোনার সর্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ২৫ মার্চ বুধবার জাতির উদ্দেশে দিক নির্দেশনামূলক ভাষণ দেবেন দেশেটির প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতার থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। ধারণা করা হচ্ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে সরকারের নেয়া পদক্ষেপ ও প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি তুলে ধরে দেশবাসীকে আশ্বস্ত করবেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। আসতে পারে আরও কিছু নির্দেশনা। করোনা ভাইরাসের সর্বশেষ অবস্থা: করোনাভাইরাসে বাংলাদেশে নতুন করে আরও ৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন। সব মিলিয়ে দেশে এখন করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩৩ জনে দাঁড়াল। আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় আরও ১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন, এনিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ৩ জনে। আক্রন্তদের মধ্যে ৫ জন সুস্থ হয়ে ইতোমধ্যে হাসপাতাল ছেড়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা গত ২৪ ঘন্টায় ৬৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করিয়েছি। সর্বমোট ৬২০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এই মুহুর্তে আইসোলেশনে আছেন করোনা নিশ্চিত এবং সন্দেহজনকভাবে যাদের মধ্যে মনে করা হচ্ছে যে, করোনার উপস্থিতি থাকতে পারে অথবা যাদের মধ্যে লক্ষণ উপসর্গ রয়েছে এমন ৫১ জন, প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৬ জন। নমুনা পরীক্ষায় করোনা আছে এমন সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা ৩৩ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে ৬ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত করেছি। এই ৬ জনের মধ্যে ১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। অর্থাৎ মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৩ জন এবং ৫ জন সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন। এদের মধ্যে আগেই ৩ জন সুস্থ হয়েছিলেন, নতুন আরো ২ জন গতকাল বাড়ি গেছেন।’ জেলাভিত্তিক আক্রান্তদের বিশ্লেষণে তিনি জানান, করোনা আক্রান্ত ৩৩ জনের মধ্যে ঢাকায় ১৫ জন, মাদারীপুরে ১০ জন, নারায়নগঞ্জে ৩ জন, গাইবান্ধায় ২ জন, কুমিল্লায় ১ জন, গাজীপুরে ১ জন এবং চুয়াডাঙ্গায় ১ জন। তিনি বলেন, সংক্রমণ পাওয়া গেছে এমন ৩৩ জনের মধ্যে ১৩ জন অন্য দেশ ভ্রমণ করে এসেছেন, বাকী ২০ জনই এদের মাধ্যমে কোন না কোনভাবে সংক্রমিত হয়েছেন। ১৩ জনের মধ্যে ইতালি থেকে ৬ জন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২ জন, ইউরোপের অন্যান্য দেশ থেকে ২ জন, বাহরাইন থেকে ১ জন, ভারত থেকে ১ জন এবং কুয়েত থেকে ১ জন। অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদী রোগ রয়েছে ১১ জনের মধ্যে। এদের মধ্যে বেশিরভাগের অবস্থা এখন পর্যন্ত স্থিতিশীল। কিডনি সমস্যা রয়েছে যে রোগীর তার এখনো ডায়ালাসিসের প্রয়োজন হচ্ছে। বাকীদের অবস্থা স্থিতিশীল।

২৩শে মার্চ ২০২০

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.