Type Here to Get Search Results !

মানবসেবায় দৃষ্টান্ত স্থাপন ইউএনও মনদীপ ঘরাই এরঃ ঢাকা

প্রভাষ চৌধুরী, ঢাকা ব্যুরো এডিটর, আরশিকথাঃ ষাটোর্ধ্ব অসুস্থ মানসিক প্রতিবন্ধী এক বৃদ্ধা দুই দিন ধরে রাস্তায় পড়েছিলেন। করোনার আতঙ্কে কেউ তাঁকে উদ্ধার বা সাহায্য করতে এগিয়ে আসছিলেন না। এ খবর পেয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করে চিকিৎসার উদ্যোগ নিয়েছেন শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনদীপ ঘরাই। ঘটনাটি বুধবার রাতে শরীয়তপুর সদর উপজেলায়। ইউএনও মনদীপ ঘরাই বলেন, ‘একজন মানুষ হিসেবে আরেকজন বিপন্ন মানুষকে সাহায্য করাই ধর্ম। আমি শুনে হতবাক হলাম, দুই দিন সড়কে পড়ে থাকার পরও কেউ তাঁকে সাহায্য করেননি। ডিসি স্যার ফোনে তথ্যটি দেওয়ার পরই আমি ওই নারীকে উদ্ধার করে চিকিৎসার দায়িত্ব নেই। আগামী রোববার তাঁর পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। আমরা ওই নারীর পরিচয়ও জানার চেষ্টা করছি।’ স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, সদর উপজেলার দেওভোগ এলাকার পালং-বুড়িরহাট সড়কে গত সোমবার থেকে এক নারী পড়ে ছিলেন। করোনার আতঙ্কে কেউ তাঁকে উদ্ধার করছিলেন না। বুধবার সন্ধ্যায় ওই স্থান দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলেন ভেদরগঞ্জের বাসিন্দা শাহীন মিয়া নামের এক তরুণ। তিনি বিষয়টি মুঠোফোনে জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসানকে জানান। জেলা প্রশাসক বিষয়টি ইউএনও মনদীপ ঘরাইকে জানান। পরে বুধবার সন্ধ্যায়ই মনদীপ ঘরাই দেওভোগ এলাকায় গিয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখানে তাঁর চিকিৎসা শুরু করেন। শাহীন মিয়া বলেন, ‘রাস্তার পাশে এক নারীকে পড়ে থাকতে দেখে আমি এগিয়ে যাই। তখন তিনি অচেতন ছিলেন। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে জেলা প্রশাসককে জানাই। কিছুক্ষণ পর ইউএনও আমাকে ফোন করে সেখানে অপেক্ষা করতে বলেন। তার পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ইউএনও ওই নারীকে উদ্ধার করে গাড়িতে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যান। ওই নারীকে উদ্ধারের সময় অনেক মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। ওই নারীর শরীর দিয়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল, করোনার আতঙ্কে কেউ তখনো সহায়তা করছিলেন না। তখন ইউএনও মনদীপ ঘরাই ওই নারীকে কোলে তুলে গাড়িতে ওঠান। এটা অনেক মানবিক ঘটনা। সচরাচর প্রশাসনের কর্মকর্তারা এ কাজগুলো করেন না। তিনি এমন কাজ করে মানবতার পরিচয় দিয়েছেন, অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
অসুস্থ ওই প্রতিবন্ধী বৃদ্ধা তাঁর ঠিকানা বলতে পারছেন না। তাঁকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের নারী ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ওই নারীকে চিকিৎসা দিচ্ছেন চিকিৎসক শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ওই নারীর শরীরের বিভিন্ন স্থানের মাংসে পচন ধরেছে। তাঁর শরীর অনেক দুর্বল। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া শুরু হয়েছে, তাঁর বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।


আরশিকথা বাংলাদেশ সংবাদ

১২ই ডিসেম্বর ২০২০
 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.