আরশি কথা

আরশি কথা

No results found
    Breaking News

    বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে বিজয় দিবস উদযাপনঃ আগরতলা

    আরশি কথা

    প্রভাষ চৌধুরী, ঢাকা ব্যুরো এডিটর, আরশিকথাঃ বর্ণাঢ্য ও জমকালো আয়োজনে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মহান বিজয় দিবস উদযাপন করেছে আগরতলার বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন। বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের ৫০তম বিজয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনে আগরতলার কুঞ্জবন এলাকায় সহকারী হাইকমিশন চত্বরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ দিন সকাল সকাল ৯টায় দূতালয় প্রাঙ্গণে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর পরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এরপর মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও বার্তা প্রদর্শন করা হয়। এরপর অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ত্রিপুরা বিধানসভার স্পিকার আমন্ত্রিত বিশেষ অতিথিদের অংশগ্রহণে সহকারী হাইকমিশনে নবনির্মিত ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ উদ্বোধন করেন। সকাল ৯টা ১০ মিনিটে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। সকাল সাড়ে ৯টায় মহান বিজয় দিবসের তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন অত্র মিশনের প্রথম সচিব ও দূতালয় প্রধান মো. জাকির হোসেন ভূঞা। বিজয় দিবসের আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা বিধানসভার স্পিকার শ্রী রেবতীমোহন দাস, ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য শ্রী অরুনোদয় সাহা, মুক্তিযুদ্ধের সম্মাননাপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব শ্রী স্বপন ভট্টাচার্য, বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও শিক্ষানুরাগী ও মুক্তিযুদ্ধের সম্মাননাপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক মিহির দেব, বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব আগরতলাস্থ রামঠাকুর কলেজের অধ্যাপক মো. মুজাহিদুর রহমান, বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব ড. মো. মোস্তফা কামাল, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শ্রী অমিত ভৌমিক, বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব ড. আশিষ কুমার বৈদ্য প্রমুখ। বক্তারা উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের তীর্থভূমি ছিল ত্রিপুরা। ১৯৭১ সালের গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের যাত্রা থেকে শুরু করে পরবর্তীতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ পরিচালনা, বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের পক্ষে জনমত সৃষ্টি, বিশাল শরণার্থীদের ব্যবস্থাপনা, যুদ্ধবিধস্ত দেশবাসীর পাশে দাঁড়ানোসহ মুক্তিযুদ্ধকালীন ত্রিপুরাবাসীর অবদানের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন। বক্তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ জাতীয় চার নেতা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদদের অবদানের কথাও কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন।
    সহকারী হাইকমিশনার মোহাম্মদ জোবায়েদ হোসেন তাঁর সমাপনী বক্তব্যে মহান বিজয় দিবসে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ জাতীয় চার নেতা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে সর্বতোভাবে সহযোগিতার জন্য ভারতের জনগণ, ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী তথা ভারত সরকার, মিত্র বাহিনী, সংস্কৃতিকর্মী, সংবাদকর্মী, বুদ্ধিজীবী সহ সর্বস্তরের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় ভারতের অংশীদারিত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ত্রিপুরাকে মহান মুক্তিযুদ্ধের সুতিকাগার হিসেবে উল্লেখ করে মুক্তিযুদ্ধের সময় ত্রিপুরাবাসী বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষের জন্য যেভাবে পাশে দাঁড়িয়েছিল তাও কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন সহকারী হাইকমিশনার।

    ত্রিপুরার স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় আনন্দ উদ্দীপনায় মুখরিত মহান বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণ একখণ্ড বাংলাদেশে পরিণত হয়। ত্রিপুরার স্থানীয় শিল্পী এবং নৃত্যদল তাদের পেশাদারি পরিবেশনার মাধ্যমে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের পাশাপাশি বৈচিত্র্যময় বাংলাদেশের মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে যা অনুষ্ঠানে উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করে। অনুষ্ঠান পরিচালনা ও সঞ্চালনা করেন অত্র মিশনের প্রথম সচিব ও দূতালয় প্রধান মো. জাকির হোসেন ভূঞা । সহকারী হাইকমিশনার মোহাম্মদ জোবায়েদ হোসেন আগত অতিথিদের ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। মহান বিজয় দিবস পালন অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, সিভিল সোসাইটির গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং আগরতলা মিশনে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারী বৃন্দসহ নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ মাস্ক পরিধান করে যথাযথ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে উপস্থিত হন। অনুষ্ঠান শেষে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যাহ্নভোজের মাধ্যমে আপ্যায়ন করা হয়।


    আরশিকথা হাইলাইটস

    ১৬ই ডিসেম্বর ২০২০
     

    3/related/default