Type Here to Get Search Results !

ক্রমশ: পাথর হয়ে যাচ্ছে ৫ মাসের শিশুটি ঃ আরশিকথা হাইলাইটস

নরম চাহনি, তুলতুলে গালের একরত্তি শিশু। দূর থেকে দেখলে চিনামাটির পুতুল মনে হতে বাধ্য।  বাস্তবে পাথর হওয়ার পথে শিশুটি। চিকিৎসকরা হাত তুলে নিয়েছেন ইতিমধ্যেই। রক্তমাংসের শিশু হিসেবে মায়ের কোলে জন্ম নিলেও, যত দিন জীবিত থাকবে, পাথর হয়েই তাকে কাটাতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। অতিমারির মধ্যেই এ বছর ৩১ জানুয়ারি ব্রিটেনে জন্ম লেক্সি রবিন্‌সের। করোনায় যখন চারিদিকে মৃত্যুমিছিল, সেই সময় ফুটফুটে শিশুটিকে পেয়ে সংসার ভরে উঠেছিল অ্যালেক্স এবং ডেভ রবিন্‌সের। এমনিতে সারা ক্ষণ হাসিখুশি লেক্সি। কোথাও কোনও সমস্যা চোখে পড়েনি। কিন্তু ধন্দ কাটে কয়েক দিন যেতেই। অ্যালেক্স এবং ডেভ জানিয়েছেন, সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু তাঁরা লক্ষ্য করেন, মেয়ে হাতের বুড়ো আঙুলটি একেবারেই নাড়াচ্ছে না। পায়ের আঙুলগুলোও যে স্বাভাবিকের থেকে একটু বড়। এ ভাবে কয়েক দিন কাটার পরেও অবস্থার কোনও পরিবর্তন না হওয়ায়, চিকিৎসকের কাছে ছোটেন তাঁরা। প্রথমে কেউই রোগ ধরতে পারেননি। শুধু বলা হয়, তাঁদের মেয়ে হাঁটতে পারবে না। সুস্থ-সবল মেয়েকে দেখে তা বিশ্বাস করতে পারেননি অ্যালেক্স এবং ডেভ। তাই বিশেষজ্ঞকে দেখানোর সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু সেখানে যা জানতে পারেন, তাতে স্তম্ভিত হয়ে যান অ্যালেক্স এবং ডেভ। জানতে পারেন তাঁদের মেয়ে ফাইব্রোডিসপ্লেসিয়া ওসিফিকানস প্রগ্রেসিভা (এফওপি) নামের বিরল রোগে আক্রান্ত, যে রোগে, কঙ্কালের কাঠামোর বাইরেও হাড় গজায়। শরীরে পেশিও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হাড়ে পরিণত হয়। যত বয়স বাড়তে থাকে ততই হাড়ের আধিক্য বাড়তে থাকে শরীরে। যে কারণে একটা সময় শরীর কার্যত পাথরে পরিণত হয়। চিকিৎসকরা জানান, লেক্সির পায়ের পাতা থেকে আঙুল পর্যন্ত হাড়ের সন্ধিস্থলগুলি ফুলে রয়েছে। হাতের বুড়ো আঙুলে দু’টি করে সন্ধিস্থল রয়েছে। সেই কারণেই আঙুল নাড়াতে পারছে না সে। চিকিৎসকরা আরও জানান, কানের হাড় বাড়তে বাড়তে তার বধির হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও ৫০ শতাংশ। দাঁতের চিকিৎসা করাতে পারবে না লেক্সি। তাকে কোনওরকম ইঞ্জেকশনও দেওয়া যাবে না। লেক্সির বাবা জেভ বলেন, ‘‘যে চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলাম, তিনি বলেন ৩০ বছরের কর্মজীবনে আগে এমন কোনও রোগী দেখেননি তিনি। এটি অত্যন্ত বিরল রোগ।’’ গোটা পৃথিবীতে লেক্সির মতো অসুস্থতার পাওয়া গিয়েছে মাত্র ২০ লক্ষের শরীরে। এই রোগের আক্রান্ত হলে ২০ বছর বয়সেই শয্যাশায়ী হয়ে যান রোগীরা। সর্বোচ্চ আয়ুকাল হয় ৪০ বছরের আশেপাশে।


আরশিকথা হাইলাইটস 


৪ঠা জুলাই ২০২১

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.