Type Here to Get Search Results !

মুখোশের আড়ালে ।। ছোট গল্প ।। বিপ্লব গোস্বামী

মুখোশের আড়ালে ।।
 


নমির সঙ্গে গোপালের বিয়ে হয়েছে বছর সাতেক।এমনিতে নমির চেহারাটা যথেষ্ট আকর্ষণীয়।তাদের বিয়েটাও ভালোবেসে।বিয়ের আগে যেমন তাদের ভালোবাসা ছিল বিয়ের পরও একই রকম।গোপাল প্রাণখুলে ভালোবাসে নমিকে।সুন্দরী নমিও গোপালের মত স্বামী পেয়ে খুব খুশি।নিজেকে ভাগ‍্যবান বলে মনে করে নমি।গোপালের আদর সে যত্নে খুব সন্তুষ্ট।বিয়ের দু বছরের মাথায় নমি প্রথম কন‍্যা পিঙ্কি জন্ম দিল।প্রথম সন্তান কন‍্যা হওয়াতে গোপাল আনন্দে আত্মাহারা।বিয়ের পর গোপাল নমির কাছে একটা কন‍্যা সন্তানের জন্য আবদারও করেছিল।যেখানে পুত্র সন্তানের জন‍্য স্বামী স্ত্রীর কাছে আবদার করে গোপল এখানে সম্পূর্ণ অন‍্য রকম।তার ঠিক দুই বছর পর দ্বিতীয় কন‍্যা রিঙ্কির জন্ম হলো।গোপাল আর নমি দুজনেরই আনন্দের সীমা নেই।দুই কন‍্যা নিয়ে খুশিতে কাটাতে লাগল তাদের দিন।নমি এখন দুই সন্তানের জননী।মেয়েদের দেখাশোনা করতে নমি যথেষ্ট ব‍্যস্ত হয়ে পড়েছে।নমি এখন আর গোপালকে আগের মতো সময় দিতে পারে না।এজন‍্য গোপাল নিজেও নমিকে দোষী মনে করে না বরং যতটুকু সম্ভব নমিকে ছোটখাটো কাজে সাহায্য করে।

      দেখতে দেখতে তাদের দুই মেয়েরই স্কুলে ভর্তি হওয়ার বয়স হয়ে গেল।গোপাল খুব শখ করে দুই মেয়েকেই নামী বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ভর্তি করল।গোপাল নিজে সরকারি চাকুরিজীবী।কিন্তু ইদানিং বেসরকারি স্কুলে ভালো পড়াশোনা হয় এই বিশ্বাসে সে তার মেয়েদেরকে শহরের নামকরা প্রাইভেট স্কুলে ভর্তি করে।সে ডিউটিতে যাওয়ার আগে যা পারে নমিকে ঘরের কাজে সাহায্য করে।গোপালের এমন ব‍্যবহারে নমি খুবই খুশি।নমি গোপালকে বলে আমি গত জন্মে খুব পূণ্য করেছিলাম বলে এজন্মে তোমাকে স্বামী রূপে পেয়েছি।গোপাল এসব কথায় পাত্তা দেয় না।এভাবেই আনন্দের সঙ্গে কাটছিল তাদের জীবন।

      রানা গোপালের ঘনিষ্ঠ বন্ধু।এক সঙ্গে তারা লেখাপড়া করেছে।ছোটবেলা থেকেই খুব গভীর বন্ধুত্বতা দুজনের মধ‍্যে।এখন দুজনেই প্রতিষ্ঠিত।গোপাল সরকারি চাকুরিজীবী আর রানা বড় ব‍্যবসায়ী।দুজনেই বিয়ে করে স্ত্রী সন্তান নিয়ে সুখ শান্তিতে দিন যাপন করছে। বন্ধু রানা প্রায়ই গোপালের বাড়িতে আসা যাওয়া করে।গোপালের বন্ধু হওয়ার সুবাদে রানা নমির সঙ্গে কথাবার্তা স্ফুর্তি আমোদও করে।কিন্তু সুন্দরী নমির প্রতি যে তার কুনজর রয়েছে তা কেউই কোনদিন ভাবতেও পারে নি।একদিন নমি বাড়িতে একা ছিল।গোপাল ডিউটিতে, মেয়েরা তখন স্কুলে ছিল।সে সময় রানা গোপালের বাড়ি আসে।নমি তখন স্নান করছিল।বাড়িতে কেউ নেই আর এমন সময় কারো আসারও সম্ভাবনা নেই এই ভেবে নমীর বাথরুমের দরজা ভালো ভাবে বন্ধ না করেই স্নান করছিল।ঘরের সদর দরজা বন্ধ ছিল।মুমিত তা খোলে ঘরে ডুকে যায়।নমিকে ঘরে না দেখে বাথরুমের দিকে যায় কারণ রানার জানা ছিল নমি এই সময়েই স্নান করে।বাথরুমের দরজা খোলা থাকায় রানা গোপনে নমির স্নানের বিডিও রেকর্ড করে।ঐদিন থেকেই নমিকে ব্লেকমিল করতে শুরু করে রানা।নমিকে হুমকি দেয় তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক না করলে বিডিও ভাইরাল করে দেবে। নমি এসব কিছু গোপালকে বললে সে অবাক হয়ে যায়।কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছিল না রানা যে এসব করতে পারে।নিজের চেয়ে বেশি বিশ্বাস করত প্রিয় বন্ধু রানাকে।মুখোশের আড়ালে রানা যে একটা হিংস্র জন্তু তা বুঝতে তার আর বাকি রইল না গোপালের।অবশেষে তারা আইনের সাহায্য নিল।


-বিপ্লব গোস্বামী


ছবিঃ সৌজন্যে ইন্টারনেট

১১ই ডিসেম্বর ২০২২ 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.