Type Here to Get Search Results !

ভালোবাসা কি, কিভাবে বুঝবেন ।। মানসী বিশ্বাস

ভালোবাসা কি, কিভাবে বুঝবেন?


Love, অর্থাৎ ভালোবাসা। কথাটি কিন্তু ভালবাসা নয়, আমরা আকছার এই ভুল করে থাকি। 

অনেকে মনে করেন প্রেম ও ভালোবাসা দুটি আলাদা জিনিস। তা কিন্তু নয়। প্রেম ও ভালোবাসা একই কয়েনের দুটো পিঠ, একটু ভালো করে করে বললে প্রেম আগে আসে পরে ভালবাসা। প্রেম বা ভালোবাসায় যে দেহ আসবে এমন কোনো মানে নেই। তাহলে নির্যাতিত নিষিদ্ধপল্লির অলিগলিতেও ভালোবাসা ফুটত, প্রেমের বীজ রোপিত হত।



ভালোবাসার সংজ্ঞা কি?


অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে ভালোবাসা কি? 

ভালোবাসা কে এক কথায় প্রকাশ করা যায় না। বহু প্রাচীন কাল থেকে এই নিয়ে অনেক লেখালেখি, তর্কাতর্কি হয়েছে। আসলে ভালোবাসার সংজ্ঞা দেওয়া খুবই মুশকিল। তবে বলা যায় চাওয়া পাওয়ার আশা ছাড়া যারা অকুলে ডুবতে পারে তারা খাদহীন খাঁটি ভালোবাসার সাক্ষাৎ পায়। কামনা বাসনা যেখানে লুপ্ত সেখানে ভালোবাসার জন্ম।

এটা শুনে মনে হতে পারে কামনা বাসনা হীন ভালোবাসা, সেটা আবার হয় নাকি? আসলে আমরা যে কামনা বাসনা যুক্ত ভালোবাসার কথা বলি, ভাবি তা কিন্তু প্রকৃত অর্থে আমাদের শরীর থেকে নির্গত কিছু হরমোনের খেলা মাত্র। আবার অনেকে মনে করেন ভালোবাসা শুধু নারী-পুরুষেই সীমাবদ্ধ। এও এক বদ্ধমূল ভ্রান্ত ধারণা। ভালোবাসা সর্বত্র। এটা স্থান, কাল, পাত্র, সময়, জাতি, মানুষ, পশু, বিষহ, জিনিস, শরীর, মোহ, স্নেহ, কর্তব্য সবের উপর নির্ভর করে। আবার কখনো সবের ঊর্ধে।

প্রকৃতপক্ষে ভালোবাসা কখনো এসব দেখে হয় না। ভালোবাসা এসে গেলে, বা আপনি ভালোবাসায় পড়ে গেলে বিচার করেন সেটি কি, অনেকে আবার সেই বিচার ও করতে পারেনা।



ভালোবাসা মানে কি?


ধরুন আপনি একটি পাখি পুষেছেন বহুদিন হল। হঠাৎ কোনো অসুখে সে মারা গেল। এক বিরহ যন্ত্রণা, এক অতি কষ্টসাধ্য কষ্ট আপনার হৃদয়কে কুড়ে কুড়ে খাবে। খেতে, বসতে, পড়তে, শুতে কোনো কাজে মন লাগবে না। নিজেকে হারিয়ে ফেলবেন, পোষ্য পাখিটার কথা চিন্তা করবেন বার বার। মনে হবে ইস আরেকটু যত্ন নিতে পারতাম। একবারো মনকে এই বলে শান্ত করতে পারবেন না যে ওর ওই অব্ধি আয়ু ছিল, সেটা আমাদের হাতে নেই...  

অগত্যা এটাকে কি বলবেন? মোহ?মায়া? নাকি ভালোবাসা?

ভালোবাসায় সব থাকে। সবই। মোহ থাকে, মায়া থাকে, হারানোর ভয় থাকে, আনন্দ থাকে, চোখের জল থাকে। যার নিজের কোনো সংজ্ঞা নেই, যে নিজেই এই বিশ্বকে বেঁধে রেখেছে একই সুতোয়, তারই নাম ভালোবাসা।


ভালোবাসা কত প্রকার ও কি কি?


যদি ভালোবাসা কত প্রকারের ও কি কি বলা হয়, তাহলে এর উত্তর খুবই কঠিন। তবু ভালোবাসার নানান প্রকার ভেদ আছে বই কি! অনেকে দৈহিক চাহিদা কিংবা শারীরিক মিলনকে ভালোবাসার আখ্যা দেন, অনেকে অনলাইনে কেনা জামাকাপড়কেও ভালোবাসা বলতে পারেন, কেউ বা বৃদ্ধা বাবা মায়ের প্রতি নিষ্ঠা ও দায়িত্ব কেও ভালোবাসা বলতে পারেন। কিন্তু কথা হচ্ছে ভালোবাসা কয় প্রকারের বললে, আমরা সাধারণত একে দুভাবে ভাগ করতে পারি :


অ) আপেক্ষিক ভালোবাসা

আ) নিরপেক্ষ ভালোবাসা


আপেক্ষিক ও নিরপেক্ষ ভালোবাসাও আবার অনেক প্রকারের। আসুন দেখে নিই কত রকমের হতে পারে, ও তার উদাহরণই বা কি!

অ) আপেক্ষিক ভালোবাসা সাধারণত ছয় প্রকার :

যথা,


ক) আদিম যৌনতা মূলক ভালোবাসা : যেখানে যৌনতা প্রাধান্য পায় বেশি। সেখানে হৃদয়ের অনুভূতির চেয়ে যৌনতা বেশি। এটাকে শারীরিক চাহিদার সাথে মিশিয়ে ফেললে ভুল হবে। কারণ এখানে যৌনতা বাড়ির চৌহুদ্দিতে সীমাবদ্ধ থাকে, বাইরে প্রকাশিত হয় না। শারীরিক সুখ মিললেও মনের সুখ থাকে না।

যেমন ধরুন স্বামী স্ত্রী এক ছাদের তলায় বসবাস করে যখন সহবাসে লিপ্ত হয়। ভালোবাসায় শরীর থাকব, অজান্তে আসবেও কিন্তু মারধর করে, স্ত্রীকে একটি খেলনার পুতুল ভেবে যদি দিনরাত নিজের মনের ক্ষিদে মেটানো হতে থাকে তাহলে তা আপেক্ষিক ভালোবাসা। যার দীর্ঘকালীন কোনো স্থিতি নেই। যেখানে স্বামী বা স্ত্রী একে অন্যের হাতের কাঠের পুতুল। শুধু তার কথা মতো চলতে হয়।

খ) চোখের দেখায় ভালোবাসা : একনিমেষে বা এক পলকে যাকে দেখে ভালোলেগে ভালোবাসা জন্মায়। সেখানেও স্থায়িত্ব নেই। আর থাকবেই বা কি করে! না জেনে বুঝে তাকে ভালোবাসলেন অথচ কিছুই জানেন না তার সম্বন্ধে।

একটি সাধারণ উদাহরণই দিই, ধরুন বাজার থেকে যে গোলাপ টা কিনে আনলেন পছন্দ হয়েছিল বলে, বাড়িতে এসে নিজের বাগানের গোলাপ টিকে আরো ভালোলাগলো দেখে আপনি তাকে রেখে দিলেন ড্রেসিংটেবিলে বা অন্যকোথাও। দুদিন পরে সেটি নষ্ট হয়ে পচে গেল। এক্ষেত্রে আপনি কি তার যত্ন নিতে পেরেছেন?  পারেন নি। ওটা কেবল ক্ষনিকের ভালোবাসা। রাস্তা দিয়ে যে মেয়েটি যাচ্ছে তাকে আপনি পছন্দ করে প্রপোজ করলেন, মেয়েটি অসংলগ্ন অবস্থায় এক্সেপ্ট না করলেও না বলল না। আপনিও রাজি হলেন। কদিন ঘুরলেন হাত ধরে, পরে জানলেন সে ক্যান্সারে আক্রান্ত কিংবা সে সমাজের নামকরা একজিন যৌনকর্মীর মেয়ে, আপনি তাকে তার সমাজ জীবন দেখে এক লহমায় ভুলে গেলেন।  ঠিক এটাই হল চোখের দেখায় ভালোবাসা। কারণ আপনি তাকে ভুলে যেতে পেরেছেন।

অবশ্য যারা পারে না ভুলতে তারা ব্যতিক্রমী উদাহরণের নজির গড়ে অবশ্যই। 

গ) শারীরিক মিলন বা দৈহিক চাহিদা যুক্ত ভালোবাসা : যেখানে যৌনতা প্রবল, কিন্তু বাহ্যিক ভাবে তা প্রকাশিত। অর্থাৎ যৌনতা প্রাপ্তিতে আপনি অন্য কারো সাহায্য নেন আপনার স্বামী বা স্ত্রী ব্যতীত।

ধরুন, আপনার স্ত্রী আপনার মনের মতো আপনাকে সুখী করতে পারে না। আপনি বাধ্য হয়ে নিয়ম করে সপ্তাহে দুবার নিষিদ্ধপল্লিতে যাতায়াত করেন। এখানে কোনো কাজকেই অসম্মানিত করে বলা হচ্ছে না, কিন্তু আপনি যে শারীরিক সুখ লাভের আশায় যান তা কখনোই ভালোবাসা হতে পারে না। সাময়িক তৃপ্তি মাত্র।

ঘ) অনলাইন চ্যাটিং বা ডেটিং অ্যাপ মারফত ফলপ্রসূ ভালোবাসা : আজকাল অনলাইনে প্রেম বা ভালোবাসা বহুগুণ বেড়ে গেছে নিঃসন্দেহে। তবে এটা প্রেম বা ভালোবাসা নয়, অধিক ক্ষেত্রে ফোন সেক্স বা চ্যাট সেক্স বলা হয় তাকে।

ধরুন ফেসবুকে একটি হ্যান্ডসাম ছেলে আপনাকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠালো। তারপর দিন কুড়িক কথোপকথন হল ম্যাসেঞ্জারে। আপনি প্রেমে না পড়লেও একটা আকর্ষণ অনুভব করছেন, এটা স্বাভাবিক। আসলে আগুন আর ঘি কি কাছাকাছি আলাদা আলাদা থাকতে পারে? আকর্ষণ আসবেই তবে তা কখনই ভালোবাসা নয়। 

হ্যাঁ, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় তারা পরস্পর পরস্পরকে ভালোবেসেছেন, বিবাহ করছেন। সুখেও আছেন। এখানে সুখ সম্পূর্ণই নিজেদের হাতে। অবশ্য ডিভোর্সও যে কমবেশি দেখা যায় না তাও নয়!

ঙ) কোনো জিনিসের প্রতি আসক্তি থেকে ভালোবাসা : এই ভালোবাসা আরো ক্ষনিকের। তাকে ভালোবাসা বলাটাই ভুল।

আপনি অনলাইনে একটি ড্রেসকে খুব পছন্দ করে কিনে ফেললেন। সেটি পাঁচ বছর পর ছিঁড়ে গেলে তাকে আরোই ছিঁড়ে ফেলবেন। এটা নিশ্চয় ভালোবাসা নয়। তাকে ইংরাজিতে আমরা like বলি, পছন্দ বলি। অনেকে এটিকে ভালোবাসা বলেও ভুল করেন। সেটা শুধু জিনিস নয়, কোনো ব্যক্তিকেও জিনিস হিসাবে ধরা যেতে পারে।

চ) কোনো বিষয়ের প্রতি অবজ্ঞা হেতু অন্য বিষয়ের প্রতি ভালোবাসা : কাউকে অবহেলা করতে গিয়ে যখন অন্যকে ভালোবেসে ফেলা হয় বা ভালোবাসি এইটা অভিনয় করে দেখানো হয়।

আপনি মাধ্যমিকে অঙ্ককে ভয় পেতেন, তাই বলতেন ইংরাজি ভালোবাসি, ইতিহাস ভালোবাসি.. ইত্যাদি। এরকম কেউ কেউ আছেন যারা নিজের স্ত্রীকে ( হয়তো তার গায়ের রঙ বা অন্য কোনো কারণে ) পছন্দ করেন না। বাধ্য হয়েছেন অন্য কাউকে ভালোবাসতে। এবং এরপরে শুধু মাত্র একজনকে পছন্দ করি না, অবহেলা করব এই মনোভাব থেকে অন্য একজনকে ভালোবাসেন। কিন্তু যাকে ভালোবাসেন সেটাও স্থায়ী নয়। কারণ অন্য কাউকে আরো ভালো লাগলে এই ভালোলাগা তখন অতীত!


আবার, যার স্থায়িত্ব চিরন্তন সেই নিরপেক্ষা ভালোবাসা কে আমরা পাঁচ ভাগে ভাগ করতে পারি :

যথা,

ক) স্নেহ মূলক ভালোবাসা

খ) মায়া মোহ যুক্ত ভালোবাসা

গ) ভালোবাসা যেখানে পূজা ও পবিত্রের সমান

ঘ) কর্তব্য নিষ্ঠা যুক্ত ভালোবাসা

ঙ) অন্যকে হারানোর ভয়ে ভীত ভালোবাসা


ক) স্নেহ মূলক ভালোবাসা : স্নেহেতে পরিপূর্ণ একে অপরের প্রতি ভালোবাসা।

আপনি আপনার মেয়ের জন্য প্রতিদিন একটি চকোলেট আনেন। একদিন আনেন নি দেখে মেয়ে আপনাকে কিছু বলল ও না, চাইল ও না। আপনি তাকে জিজ্ঞাসা করতে সে বলল বাবা আমি জানি, মা বলেছে বিসনেসে তোমার মন্দা চলছে, তাই আমি চাইনি। বাবা মন্দা কি গো? এই হল ভালোবাসা, ওই পাঁচ বছরের বাচ্চা, যার মন্দা শব্দের অর্থ জানা নেই, সে বুঝতে পেরেছে বাবার অসুবিধা। এই স্নেহ টিকে থাকে বছরের পর বছর। যার কোনো থেমে যাওয়ার ভয় নেই, কিন্তু হারিয়ে ফেলার ভয় আছে।

খ) মায়া মোহ যুক্ত ভালোবাসা : যে ভালোবাসায় মায়া থাকে, মোহ থাকে। আসলে স্নেহ মূলক ভালোবাসা যখন পরিপূর্ণ হয়ে হারানোর ভয়ে আকুল হয় তখনই এই ভালোবাসার জন্ম।

যে ব্যক্তি জীবনে কাঁদেনি, বাবাকে ইলেকট্রিক চুল্লিতে দেওয়ার সময় তার চোখের কোণে একফোঁটা জল এল, মনে পড়ে গেল বাবা একবার তাকে একটা পেন কিনে এনে দিয়েছিলেন। বাবাকে হারিয়ে তার বাবার প্রতি মায়া ও মোহ থেকে এই ভালোবাসা সৃষ্টি হয়েছে। ব্যক্তির মৃত্যুর পরেও তার ছেলে তাকে স্মরণ করেছে, এই ভালোবাসা অমর, অতুলনীয়!

গ) ভালোবাসা যেখানে পূজা ও পবিত্রের সমান : মা সারদাকে রামকৃষ্ণদেব আসনে বসিয়ে পূজা করেছিলেন, তিনি ভগবান তুল্য, আমরা কখনোই হয়তো তা পারব না। কিন্তু নিজের স্বামী বা স্ত্রীকে মন থেকে পবিত্র মনে করে শ্রদ্ধা পূর্বক পূজা করতেই পারি। 

আগেকার দিনের ঠাকুমা দিদাদের প্রসবের সময় দাই মা বা ধাই মা সাহায্য করার পর, স্বামী সমস্ত দিকে খেয়াল রাখতেন। না ছিল লজ্জা না ছিল সংকোচ। কিংবা স্বামী স্ত্রী মিলনের সময়েও যখন নিজেদের পবিত্র মনে করে নিজেদের প্রতি, একে অন্যের প্রতি সম্মান রাখতে পারে এর থেকে পবিত্রতা আর কিই বা হতে পারে!

ঘ) কর্তব্য নিষ্ঠা যুক্ত ভালোবাসা : স্ত্রী দেরি করে অফিস থেকে ফিরলে রাতের রুটিটা আপনি বানান, কিংবা অসুস্থ শ্বশুরের চিকিৎসার যাবতীয় খরচ আপনি টানেন স্ত্রীর মৃত্যুর পরেও। কারণ আপনি তাকে বাবা বলে ডেকেছিলেন, মন থেকে মেনেও নিয়েছিলেন। এই ভালোবাসা চিরন্তন। যেখানে হারানোর ভয় আছে, ভালোবাসা প্রাপ্তির জায়গাও আছে।

ঙ) অন্যকে হারানোর ভয়ে ভীত ভালোবাসা : এই ভালোবাসা সবচেয়ে জনপ্রিয়। শুধু স্বামী-স্ত্রী নয়, বাবা, মা, ভাই, বোন, আত্মীয় সকলের জন্যই প্রযোজ্য।

আপনার স্বামী চাকুরি সূত্রে বাইরে থাকে, কিংবা আর্মিতে চাকরি করেন। সারাদিন ভীত, সন্ত্রস্ত থাকে  যেন কোনক খারাপ খবর না আসে। অর্থাৎ হারানোর ভয়ে আপনি তাকে ভালোবাসেন কিন্তু হারাতে চান না। "দুঁহু ক্রোড়ে দুঁহুঁ কাঁদে বিচ্ছেদ ভাবিয়া" এখানেই জনপ্রিয়।


একতরফা ভালোবাসা কাকে বলে?

ভালোবাসা একতরফাই হয়। আপনি কাউকে ভালোবাসলে অন্যজন যখন বুঝতে পারে সেও ভালোবাসতে শুরু করে। আর তখনই দুই হৃদয় এক হলে তা কালজয়ী হয়। 

কিন্তু এটাও মাথায় রাখতে হবে, একতরফা ভালোবাসার জন্য অনেকেই ভালোবাসা ছিনিয়ে নেওয়ার আশায় অন্য জনকে অ্যাসিড দিয়ে মুখ নষ্ট করার চেষ্টা করছেন। কেউবা, ধর্ষক হয়ে উঠেছেন। ভালোবাসা কি সেটা? কখনই নয়। উলটো দিকের মানুষটি যখন আপনাকে পছন্দ করেনা, আপনি সরে আসুন। আপনাকে নিয়ে তার কোনো অনুভূতি থেকে থাকলে, আপনার শূন্যতা সে অবশ্যই মনে করবে। আপনার সাথে নিজে থেকে যোগাযোগ করবে। কিন্তু অ্যাসিড দিয়ে কারোর মুখ পুড়িয়ে, কিংবা অন্য কোনো উপায়ে তাকে মেরে ফেলা বা সমাজের চোখে নিচু করার মধ্যে ভালোবাসা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা থাকে না। সেটা আপনার নিচু মানসিকতার পরিচয় মাত্র। 



সত্যিকারের ভালোবাসা কাকে বলে?

যেখানে হারানোয় ভয় থাকে প্রতি সময়, আনন্দাশ্রু আসে একে অপরকে দেখামাত্র, অন্যের প্রতি চিন্তা, কর্তব্য, শ্রদ্ধা, সম্মান থাকে সেটাই সত্যিকারের ভালোবাসা। 

ভালোবাসা ও ভালোলাগা এক জিনিস নয়। ভালোলাগা থেকে ভালোবাসা আসলে চিরস্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা কম। ভালোবাসা যেখানে ভালোলাগায় রূপান্তরিত হয়ে মিলেমিশে যায় তা কালজয়ী।

রাধা-কৃষ্ণ, নল-দময়ন্তী, লক্ষ্মী-নারায়ন, হর-পার্বতী... এতো গেল ভগবানের উদাহরণ, মনুষ্য হিসাবে বিষ্ণুপ্রিয়া-চৈতন্যদেব, সারদা-রামকৃষ্ণ এঁনারা প্রকৃত ও সত্যিকারের ভালোবাসার দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছেন এই পৃথিবীতে। এটাও মনে রাখতে হবে দুই বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণই যে, ভালোবাসা তা নাও হতে পারে।


মানসী বিশ্বাস


আরশিকথা অতিথি কলাম


ছবিঃ সৌজন্যে ইন্টারনেট

১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.