এই দিতা ! মাথা তোল ।
কেন মেঘ দিয়ে মাখলি চুল।
অমিতাভই যদি দুঃহাতে মাখিস্
তোর সুমেরু কুমেরু বুকে ,
কেন তবে লাল ফিতায় বাঁধলি -না
ঢেউ তোলা আঁধারের ঢল্ ।
যাবি যদি চল্ ।
অষ্টাদশীর কুলোতে ঝাড়ন্
একুশ ধানের শীষ ;
খল্ খল্ নদীর পাশে
অগ্নিবৃত্তের মুখ ধোওয়া
আ-মরি ! বাংলা ভাষার বুকে ;
মুখ তোলে ------
নগরনটির হাস্যমুখর হংসপাখার তলে ।
আয় আয় ! বন্দী সুন্দরের নগ্ন উনুন হতে
যত বারুদের বর্ণমালা ডেকে ওঠে
তোর নদীমাতৃক . দেশমাতৃক. বন্দনার মর্মতল
ছিন্নভিন্ন করে ,
পারিস্ -তো, দু-বেলার আত্মজীবনী সেলাই করে
রক্ত তোলপাড় , পরানমাঝির বৈঠা দিয়ে
বন্ধ বন্যার আর্তনাদ ভেঙ্গে ফেল্ ।
কারুময় মাটির কাচুলি দিয়ে
ঢেকে ফেলা জলোচ্ছ্বাসের প্রত্নময় ছেনীতে ---
যে আগুন এখনও , রক্তে ডাকে বান -----
শুকিয়ে যাওয়া ধূলট পথে
ফুল ফুটানোর অমৃতজয়ী গান , ......
সেখানে পাঁজরের হাড় গুণে গুণে
বোকা মেয়ের পায়ের কাছে
তীব্র চাবুক চিৎকার........ তৃতীয় বিশ্বের প্রাণঃ
.........তোর যত ভাঙনের প্রবাহ দিয়ে
গড়েছ মোদের হাঃ হাঃ , হো হো.....
সূর্যের শর্ষক্ষেতে, মাধ্যাকর্ষনের যত নম্র নখ
ঝক্ ঝক্ করে ----- আমাদের শরীরে ;
তাদের ধন্য করে, কিসের শরীর থেকে
কাদের শরীরে গলে যাওয়ার আগে ......
হে বস্তির দূরন্ত মেয়ে ! অফুরন্ত মনিমঞ্জুষা !
ধূলোবালি গায়ে মেখে সারাদিন টই টই ডাংগুলি ঘুড়ি ,
আর ক্লান্ত লাটাইয়ে যখন
কুড়োনো খাবার তুলে ঘুমিয়ে পড় ----
শহরের এঁটোবাস গলির ভাঙা রিক্ সায় ;
------তখন , আমরাই তোর গায়ে
শীতের রোদের মত জড়িয়ে থাকি
বর্ণমালার চাদর নিয়ে , অক্ষরবুটির আকাশছায়ায়
জ্বলে উঠি , রাত্রিশেষের ঝড়োপাতায় ।
তবু তোর দু-চোখ ভরে
বিজয়ার বাজনা মুছে , এঁকে দি ----
অপুষ্টির অন্নসৃজন শিল্পের দুনিয়া ।
আর দেশভ্রাতৃক নদীমাতৃক বন্দনার মর্মতল
তোলপাড় করে -----
নানা ছাঁদে , নানা রঙে , এঁকে দি
তোর ভাষাজলতার মনজলতার দীর্ঘ বেণী !
তবুও , বঙ্গভঙ্গের আমরন অনশন ঝেড়ে ফেলে.....
একবার , শুধু একবার
.....এই দিতা , মাথা তোল্ ! মুখ খোল্ !
তোর জাগরণ আমরণে চেয়ে আছে ----
পিতামাতার অন্নজল তুলে ধরা
বোবা দস্যু রত্নাকরের দল ।
নতুবা , পৃথিবীর সব শব্দগুহায়
আজও লিখে চলে ----
ধমনীতান্ডব অক্ষরের জয় ,
মানুষের......বিপন্ন....... বিস্ময় !
- খোকন সাহা, ত্রিপুরা
ছবিঃ সৌজন্যে ইন্টারনেট
২১শে ফেব্রুয়ারি ২০২৩