Type Here to Get Search Results !

যবনিকাপাত একটি অবিসংবাদী রাজনৈতিক জীবনের ।। চলে গেলেন জননেতা সুরজিৎ দত্তঃ আরশিকথা ত্রিপুরা

বিশেষ প্রতিনিধি, আগরতলা,আরশিকথাঃ


সমাপ্ত হলো একটি বর্ণময় রাজনৈতিক জীবনের। রামনগরের বিধায়ক, এইটুকু পরিচয়ই যার যথেষ্ট। হাজারো মানুষের চোখের জলে চির বিদায় নিলেন রামনগর কেন্দ্রের বিধায়ক জননেতা সুরজিৎ দত্ত। শোকাহত গোটা রাজ্য। শেষ বারের মতো শ্রদ্ধা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা সহ অসংখ্য গুণমুগ্ধ মানুষ।  বুধবার রাত ১১তা ১০ মিনিটে কলকাতার একটি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বৃহস্পতিবার শবদেহ নিয়ে আসা  হয় আগরতলায়।

রামনগর কেন্দ্র থেকে সাত বারের জয়ী বিধায়ক সুরজিৎ দত্ত শুধু রামনগর এরই নয় গোটা রাজ্যের অবিসংবাদী নেতা ছিলেন। সুরজিৎ দত্ত, সুনু দা, বিভিন্ন নামেই সুপরিচিত এই জননেতা। দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক ভাবে অসুস্থ হলেও মনের দিক থেকে তিনি ছিলেন ১০০ শতাংশ ফিট। মঙ্গলবার আই এল এস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীকে বলে ছিলেন " আমি মরবো না" . কিন্তু মৃত্যু যে অমোঘ সত্য। তার কাছে সবাইকে একদিন হার মানতেই হবে। ডাকাবুকো এই পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদকেও  মৃত্যুর কাছে হারতেই হলো। কিন্তু কিছু মানুষ মৃত্যুর পরও অমর হয়ে থাকেন। সুরজিৎ দত্তও তাদের মধ্যেই একজন। এইদিন প্রিয়া নেতাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে এক বাক্যে সবাই এই কথা বলেন। হাজার হাজার মানুষের চোখের জলে চির  বিদায় নেন তিনি। এম বি বি বিমান বন্দর থেকে শব শকট যায় মহাকরণে। সেখানে শেষ শ্রদ্ধা জানান মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা,মন্ত্রী রতন লাল নাথ, টিঙ্কু রায়,সুধাংশু দাস সহ অন্যান্যরা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে তা কেউ কোনোদিন পূরন করতে পারবেন কিনা জানেন না। এই দিকে বিধানসভা ভবনে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন , বিরোধী দলনেতা অনিমেষ দেববর্মা সহ শাসক ও বিরোধী দলগুলির বিধায়করা। অনিমেষ দেববর্মা গভীর শোক ব্যক্ত করে বলেন একজন অভিভাবককে হারালাম। বিধানসভা ভবন থেকে শববাহী গাড়ি আসে বিজেপির প্রদেশ কার্যালয়ে। সেখানে আগে থেকেই অপেক্ষা করছিলেন অগণিত মানুষ। দলীয় কার্যালয়ের সামনে অন্তিম শ্রদ্ধা জানান দলের প্রদেশ সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্যী সহ অন্যান্য নেতৃত্বরা। প্রবীণ এই জননেতার মৃত্যুতে গভীর শোক এবং প্রয়াতের পরিবার পরিজনদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন প্রদেশ সভাপতি।

দলীয় কার্যালয় থেকে শব দেহ নিয়ে যাওয়া হয় রামনগর ২ নং রোডস্থিত প্রয়াত বিধায়কের বাস  ভবনে। সেখানে    কান্নায় ভেঙে পড়েন প্রয়াত নেতার অগণিত গুনমুগ্ধরা।  তাঁর মৃত্যুতে শাসক বিরোধী   সব অংশ থেকেই শোক ও সমবেদনা জানানো হয়েছে। প্রয়াত নেতার বাড়ি থেকে দলীয়  কর্মী সমর্থকরা এক বিরাট শোক মিছিল বের করেন। ধীরে ধীরে মিছিল এগিয়ে যায় বটতলা মহা শ্মশানের দিকে। সেখানেই হয় অন্তিম সংস্কার।   বিধায়কের মৃত্যুতে রাজ্য সরকার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে। রামনগর কেন্দ্র থেকে সাতবার বিধানসভা ভোটে জয়ী হয়েছেন সুরজিৎ দত্ত। যবনিকাপাত একটি অবিসংবাদী রাজনৈতিক জীবনের।


আরশিকথা ত্রিপুরা সংবাদ

২৮শে ডিসেম্বর ২০২৩

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.