Type Here to Get Search Results !

বাসন্তী পাঞ্জাবি আর নীলদিগন্ত শাড়ি । কবিতা । আরণ্যক বসু

বাসন্তী পাঞ্জাবি আর নীলদিগন্ত শাড়ি....
 


কেউ একজন ঘোরের মধ‍্যে গুনগুনিয়ে, যেন কানে কানে বলে যাবে-- আমি যে তোর বাসন্তী পাঞ্জাবির প্রান্তটুকু ছুঁয়ে বলতে চাই...

কেউ একজন বাধা দিয়ে বলবে---

চুপ,আগে আমি বলবো--

আমি যে তোর নিজস্ব ওয়াড্রব-ভরা সুগন্ধে-- নাক,চোখ,ঘ্রাণসাগরের 

শেষ বিন্দুটুকু ডুবিয়ে ডুবিয়ে,

 মরে যেতে চাই !

#

কেউ একজন তাই শুনে একাকার হয়ে যাবে  বিস্মরণের প্রলাপে--

স্টেশনে একা একা দাঁড়িয়ে থাকা হয় কেন ?

সকালের বাসস্ট্যান্ডে ?

একা একা ?

কেন !

#

কেউ মাটিতে মিশে যাওয়া লজ্জায় উত্তর দেবে -- 

তোর শীতরোদ্দুরের 

কোল-আঁচলটুকুর 

স্বাভাবিক উচ্ছ্বাস দেখতে 

খুউব ইচ্ছে করে যে...

#

কেউ তাই শুনে 

মৃত‍্যুমুখী সুখের পশমে 

মুখ ডুবিয়ে বলবে--

তোকে কেন এত আপন মনে হয় রে ? 

কী আশ্চর্য চেনা অচেনা গন্ধের 

এক বিন্দু পারফিউম যেন ...

কেন মনে হয় ?

কোথায় তোর বাড়ি ?

বাসরাস্তা ,আলপথ , তালদিঘি  ছাড়িয়ে,

 দৃষ্টিসীমার অতলে থাকিস ?

তোর গ্রামের নাম কি 

শঙ্খচিল নাকি বনলতা ...

আমাকে বলবি না ?

#

তারপর ?

তারপর... কী যে বলি !

একটা বাসন্তী পাঞ্জাবি, 

আর একটা নীলদিগন্ত শাড়ি ,

একটা রেলগাড়ির জানালা,

 নির্জন লেভেল ক্রসিং,

একটা অপলক চোখের সাদা বাস , 

বাসের মাথায় বসে থাকা মগ্ন মাছরাঙা, 

একঝাঁক উড়ন্ত বুলবুলি, 

 একটা দেবদারুর শীর্ষডাল ,

দুজোড়া বিস্মিত গভীর দৃষ্টিপাত , 

কেঁপে কেঁপে ওঠা নার্ভাস ভুরু,

 চরাচরে আকাশ আকাশ--

নীল নীল নীল...

উন্মনামন শিল্পীর ক্যানভাসে আঁকা 

শান্ততা শান্ততা শান্ততা ।

#

আর , দুটো ঠোঁটের ইচ্ছেপাপড়িতে,

অন‍্য দুটো ঠোঁটের প্রথম অনিবার্য নেমে আসার ঠিক আগের মুহূর্ত...

#

কী আশ্চর্য সরষে ক্ষেতে পালক হাওয়ার লুটোপুটি।

 হালকা শিশির ভেজা ঘাসের গালিচায়, আঙুলে আঙুল জড়ানো দুটো সূর্যমুখির চোখে চোখে, 

মহাপৃথিবীর আলোয়, আলোয় আলো....

#

পৌষ পেরিয়ে মাঘ,

মাঘ পেরোলেই তো--

নীল দিগন্তে ওই ফুলের আগুন লাগলো...

#

আচ্ছা , ওদের নাম দুটো জানা হলো না তো!



আরণ্যক বসু

জানুয়ারি ৯ , ২০২৫

পৌষ ১৪৩১

@আরণ্যক বসু


(এ পর্যন্ত প্রকাশিত কবিতাটি আরশি কথা পত্রিকার জন্য সংরক্ষিত )

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.