নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিলেন ঊনকোটি জেলা আদালতের বিচারক। সোমবার আদালতের বিচারক দোষী সাব্যস্ত রমিজ আলীকে তিন বছরের জেল হাজত এবং পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করেন। অনাদায়ে আরও নয় মাসের জেল হাজতের সাজা ঘোষণা করা হয়। কৈলাসহর মহকুমার ইরানী থানার অন্তর্গত খাওরাবিল গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা ৩৫ বছরের রমিজ আলী ২০১৯ সালের মে মাসে কৈলাসহরের ধলিয়াকান্দি গ্রামের নেশারুন বিবির মেয়ে রোশনা বেগমকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকেই রোশনা বেগমকে পনের জন্য শারিরীক এবং মানষিক ভাবে নির্যাতন করত রমিজ। বিয়ের নয় মাসের মাথায় তথা ২০২০ সালের ৬ই জানুয়ারি রাতে রমিজ আলী তার খাওরাবিল গ্রামের নিজ বাড়িতেই ধারালো কোদাল দিয়ে রোশনা বেগমের মাথায় আঘাত করেন। ঘটনাস্থলেই রোশনা বেগম মারা যায়। পরের দিন রমিজ আলী তার স্ত্রী রোশনা বেগমের মা নেশারুন বিবিকে খবর দেয়। খবর পেয়ে নেশারুন বিবি রমিজ আলীর বাড়িতে গিয়ে দেখে ঘরের ভিতরে মাটিতে রক্তাক্ত অবস্থায় রোশনার মৃতদেহ পড়ে রয়েছে। সাথে সাথে নেশারুন বিবি ইরানি থানায় খবর দেয়। খবর পেয়েই ইরানি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রোশনা বেগমের মৃতদেহ উদ্ধার করে ঊনকোটি জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে ২০২০ সালের ৭ই জানুয়ারি নেশারুন বিবি ইরানি থানায় রমিজ আলী এবং রমিজ আলীর এক নিকট আত্মীয়ের বিরুদ্ধে ইরানি থানায় মামলা করেন। ইরানি থানার পুলিশ সাথে সাথে একটি মামলা নেয়। ঘটনার পর রমিজ আলী তার নিজ বাড়ি থেকে পালিয়ে গেলেও ঘটনার তিন দিন পর মামলার তদন্তকারী অফিসার অপর্ণা দেবনাথ রমিজ আলীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তদন্তকারী অফিসার অপর্ণা দেবনাথ ২০২০ সালের ৩১শে মে মামলার চার্জশিট আদালতে জমা দেন। আদালতে মামলা চলাকালীন রমিজ আলীর পক্ষে দু’জন সাক্ষ্যদান করলেও রমিজ আলীর বিরুদ্ধে বাইশ জন সাক্ষ্যদান করে। দীর্ঘদিন আদালতে মামলা চলার পর ঊনকোটি জেলা আদালতের বিচারক সুদীপ্তা চৌধুরী শনিবার রমিজ আলীকে দোষী সাব্যস্ত করেন এবং কুড়ি জানুয়ারি সাজা ঘোষণা করেন। বিচারক 498A ধারা মূলে দোষী সাব্যস্ত রমিজ আলীকে তিন বছরের জেল হাজত এবং পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে নয় মাসের জেল হাজত দেন। আদালতের এই রায়ে খুশি মৃতা রোশনা বেগমের পরিবার। তবে মেয়েকে আর ফিরে না পেলেও আদালতের রায়ে স্বস্তিতে মৃতার মা নেশারুন বিবি।
AKB TV News
20.01.2025