নিজস্ব প্রতিনিধি,
প্রতি বছরের মতো এবছরও দুর্গোৎসবের অষ্টমীতে ধলেশ্বর রামকৃষ্ণ মিশনে আয়োজিত হল কুমারী পূজা। মহাঅষ্টমীর এই বিশেষ পূজা দেখতে মঙ্গলবার সকাল থেকেই ভিড় জমায় হাজার হাজার ভক্ত ও দর্শনার্থীরা। চারিদিকে উৎসবের আবহ, ঢাকের বাদ্যি, ধূপের গন্ধ আর দেবী বন্দনায় মুখর হয়ে ওঠে মিশন প্রাঙ্গণ। এবছরের কুমারী মা ছিলেন আগরতলার রাণীবাজার এলাকার বাসিন্দা স্বর্ণমিতা চক্রবর্তী। বয়স মাত্র ৭ বছর ১১ দিন। স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী। তাঁকে পরম শ্রদ্ধা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দেবীরূপে পূজা করা হয়। দেবী দুর্গার প্রতীকরূপে কুমারী কন্যার পূজা দেবী শক্তির মাহাত্ম্য এবং নারীর পূজনীয় রূপকে স্মরণ করিয়ে দেয়। পূজার শুরু হয় সকালে বিশেষ মন্ত্রোচ্চারণ ও বর্ণাঢ্য আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। কুমারী স্বর্ণমিতাকে স্নান করিয়ে, নতুন বস্ত্র পরিয়ে, গয়নায় অলংকৃত করে দেবীর আসনে বসানো হয়। এরপর মন্দিরের পুরোহিত মন্ত্রপাঠ ও নির্দিষ্ট বিধি অনুসারে পূজা সম্পন্ন করেন। দেবীকে নিবেদন করা হয় ফল-মিষ্টি, প্রসাদ ও পুষ্পাঞ্জলি। মিশনের জনৈক মহারাজ জানান, কুমারী পূজার শাস্ত্রীয় ভিত্তি অত্যন্ত গভীর। পুরাণ অনুযায়ী, এক সময় শক্তিশালী অসুর কোলাসুর স্বর্গ ও মর্ত্যলোক দখল করে নেয়। তখন দেবতারা দেবী মহাকালীর শরণাপন্ন হন। দেবী কুমারীরূপে পুনর্জন্ম নিয়ে কোলাসুরকে বধ করেন এবং ধরণীকে রক্ষা করেন। সেই থেকেই কুমারী পূজার প্রচলন শুরু হয়। এ পূজা শুধু ভক্তির প্রকাশ নয়, এটি নারীশক্তির প্রতি সম্মানজ্ঞাপনও বটে। রাজ্য জুড়ে শারদ উৎসবে চরম আনন্দময় সময়ে প্রতিটি পাড়া, মহল্লা ও মন্দিরে চলছে দেবী দুর্গার আরাধনা। ধলেশ্বর রামকৃষ্ণ মিশনের এই কুমারী পূজা সেই উৎসবেরই এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ যা শারদ উৎসবের এক বিরাট প্রাপ্তি।
akb tv news
30.09.2025