Type Here to Get Search Results !

বঙ্গবন্ধু ও শিশুসুরক্ষা" ---সুলেখা সরকার,কলকাতা

এই তো সেই সূর্যছবি, এই তো নিপুণ মুক্তি হাত
এই তো দুখী মানুষদল পাশে মুজিবের মুক্তিস্বাদ
 " একজন মানুষ হিসেবে সমগ্র মানবজাতি নিয়েই আমি ভাবি। একজন বাঙালি  হিসাবে যা কিছু বাঙালিদের সঙ্গে সম্পর্কিত তাই আমাকে গভীরভাবে ভাবায়। এই নিরন্তর সম্পৃক্তির উৎস অক্ষয় ভালোবাসা, যে ভালোবাসা আমার রাজনীতি এবং অস্তিত্বকে অর্থবহ করে তোলে।"   
শেখ মুজিবের পার্সোনাল নোটবুক এভাবেই আমাদের সাথে তাঁর আত্মিক সম্পর্ক গড়ে দেয়।  ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার  টুঙ্গিপাড়ার সেই ছোট্ট ছেলেটিই পারে এইভাবে সাবলীল কথা বলতে। উদারতা ও মহানতার পথে হাঁটা সহজসাধ্য নয় তার জন্য ত্যাগস্বীকার করা আবশ্যিক। দেশ ও দেশবাসীর জন্য নিজেকে নিঃশেষ করে দিতে পারে যে, যে অসীম সাহসীকতায় শক্তি উৎপাদন করে  তীক্ষ্ণ বিচারবুদ্ধি দিয়ে আদর্শ এবং উদ্দেশ্য আঁকড়ে শিক্ষা ও সচেতনতার পরিচয় দিয়ে জনমত এবং গনমুখী আন্দোলন গড়ে তুলে স্বাধীনতা এনে দিতে পারে তার পার্সোনাল নোটবুক পড়ে এটাই ভাবতে থাকি কতটা সাধারণ এবং সহজ হলে বঙ্গবন্ধুর মতো শক্তিশালী হয়ে ওঠা যায়। 
 "আমাদের সংঘবদ্ধ জনশক্তির সমবেত প্রচেষ্টায় গড়ে তুলতে হবে সোনার বাংলা। এ দায়িত্ব সমগ্র জাতির, প্রত্যেক সাধারণ মানুষের এবং তাদের প্রতিনিধিদের। তবেই আমার স্বপ্ন সার্থক হবে, সার্থক হবে শহীদের আত্মত্যাগ, সার্থক হবে মাতার অশ্রু।"
বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। জেল থেকে মুক্তি পাবার পর শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে তার কার্যক্রম শুরু করলেও পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৭০ সালে তৎকালীন নির্বাচনে নির্বাচিতরা দেশের প্রথম সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। মুক্তিবাহিনী ও অন্যান্য মিলিশিয়া সদস্যদের নিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গঠিত হয় যারা ১৯৭২ সালের ১৭ মার্চ ভারতীয় সেনাবাহিনীর হাত থেকে দেশের সার্বভৌমত্বের ভার গ্রহণ করেন। এইসময় মুজিব সরকারের সম্মুখে যে সমস্যাগুলি উঠে এসেছিল সেগুলি ছিল ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে বাস্তুহারা লক্ষ লক্ষ মানুষকে পুনর্বাসন, দেশকে দুর্ভিক্ষের হাত থেকে রক্ষা, স্বাস্থ্য ও অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় সমস্যার সমাধান কারণ ১৯৭০ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ দেশের অর্থনীতিকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করেছিল। বিধ্বস্ত বিপর্যস্ত দেশ গঠনকালীন উদ্ভুত এইসব নানাবিধ অনাকাঙ্খিত বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মোকাবিলায় বঙ্গবন্ধু একাধিক পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছিলেন এবং তার সাথে সাথে দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণের জন্য যে কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলেন যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল রাষ্ট্রপিতা হিসেবে দেশের সন্তানদের দায়ভার সরকারিভাবে সরকারের কাঁধে তুলে শিশুদের ভবিষ্যৎ সংরক্ষণ করা। আজ অল্প পরিসরে মুজিব ভাইয়ের সাথে শিশুদের সম্পর্ক এবং শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর দায়িত্ব সেটাই হবে আমার প্রবন্ধের বিষয়। বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন আজকের শিশুরা আগামী দিনে দেশের নেতৃত্ব দেবে। তাদের সুস্থ সুন্দর জীবনের নিশ্চয়তা না দিলে প্রকারান্তরে জাতি দূর্বল হয়ে পড়বে। শিক্ষাদীক্ষা জ্ঞানেগুনে সমৃদ্ধ ও সৃজনশীল মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য শিশুদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষা ও নির্মানের প্রয়োজন। মেধাবী ও সম্ভাবনাময় শিশুদের মেধা ও প্রতিভার বিকাশে তার যেমন উৎসাহ ছিল তেমনি দুঃস্থ, দরিদ্র, সুবিধাবঞ্চিত শিশু কিশোরের জন্যও তার ছিল অকৃত্রিম ভালোবাসা। এই ভালোবাসা কোনো তাৎক্ষণিক আবেগ-সংক্রান্ত নয়, শিশুরা যাতে তাদের অধিকার নিয়ে সমাজে বেড়ে উঠতে পারে তারজন্য বঙ্গবন্ধুর সৎ ও আন্তরিক চেষ্টা ছিল। তিনি অনুভব করেছিলেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ভেদাভেদ ভুলে সবরকম সুরক্ষা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা। সবরকম বঞ্চনা, শারীরিক মানসিক নির্যাতন, লাঞ্ছনা থেকে তাদের রক্ষা করা এবং প্রাথমিক অধিকারগুলির মাধ্যমে তাদের সামগ্রিক বিকাশ।
যখন মুজিব ভাই বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠেননি, একজন নেতা হয়ে উঠেছেন মাত্র তখনও তিনি তার পরিকল্পনায় শিশুবান্ধব সিদ্ধান্ত রাখতেন বলে জানিয়েছেন তার সহযোদ্ধারা। শিশুরা সৃজনশীল ও মুক্তমনের মানুষ হিসেবে গড়ে উঠুক সেটি ছিল তার আকাঙ্ক্ষার বিষয়। 
ছোটবেলা থেকেই মানুষের প্রতি দরদী হওয়ার কারণেই নিপীড়িত বাঙালিকে তিনি অধিকার আদায়ে উদ্বুদ্ধ করে সচেতন ও সংগ্রামী করতে পেরেছিলেন। ১৯৫৮ সালে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আইয়ুব খান জোর করে দেশের ক্ষমতা দখল করেন এবং মুজিব ভাইসহ বহু নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে জেলে আটকে রাখেন। পাঁচবছরের জন্য পুরো দেশে রাজনীতি বন্ধ করে দেওয়া হলে মুজিব ভাই গ্রেপ্তার হবার পূর্ব মুহূর্তে তরুনদের এক যুগান্তকারী নির্দেশ দিয়ে যান। তিনি বলেন, 
 " এই পাঁচবছর তোমরা শিশুসংগঠন কচি-কাঁচার মেলার মাধ্যমে কাজ করো। নিজেদের সচল রাখো। "
দেশের ঐতিহ্যবাহী এই সংগঠনটি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশের মাত্র দু-বছর আগে অর্থাৎ ১৯৫৬ সালে ৫ ই অক্টোবর প্রতিষ্ঠিত হয়। কারণ বঙ্গবন্ধু জানতেন, কচি-কাঁচার মেলা প্রগতিশীল একটি শিশু সংগঠন। শিক্ষা, সংস্কৃতিচর্চা, খেলাধুলার মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক চেতনা, দেশ ও মানুষকে ভালোবাসার মানসিকতা বিকাশে শিশুরা সেখানে নিজেদের দেশের যোগ্য ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার প্রেরণা ও সুযোগ পাচ্ছে।  
বঙ্গবন্ধু ছিলেন দূরদর্শী। তরুন সৈনিকদলের অগাধ আনুগত্য, উদ্যোম, উচ্ছাস, অন্তর্নিহিত শক্তিকে গতিশীল রাখার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে তিনি সচেতন ছিলেন। রাজনীতি থেকে সরে গেলে তরুনশক্তি ক্রমে দূর্বল ও বিচ্ছিন্ন হয়ে  যেতে পারে তাই তিনি সঠিক দিগদর্শনের মাধ্যমে তরুন শক্তিকে সচল রেখেছিলেন। 
১৯৬৩ সাল। মুজিব ভাই তখনও বঙ্গবন্ধু উপাধি পান নি, তখন তিনি আওয়ামী লীগের নেতা সেইসময় ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে কচি-কাঁচার মেলা আয়োজিত শিশু আনন্দ মেলায় তিনি এসেছিলেন। তিনি বলেন," শিশুদের সাথে মিশি মনটা হালকা করার জন্য "ছোট্ট একটি বাক্য শিশুদের প্রতি তার অগাধ ভালোবাসার কথাই বলে। ১৯৭২ সালে কচি-কাঁচার মেলার কিছু শিশুরা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ নিজেদের চোখে দেখে প্রায় তিনশো ছবি আঁকে এবং সেই ছবিগুলো তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবন গণভবনে নিয়ে যায়। এরমধ্যে বাছাই করা ৭০টি ছবি রোকনুজ্জামান খান দাদা বঙ্গবন্ধুকে দেখান। ছবিগুলো বঙ্গবন্ধু রাশিয়া সফরের সময় সে দেশের শিশুদের জন্য নিয়ে যাবেন শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে। বঙ্গবন্ধু আগ্রহভরে বাচ্চাদের ছবিগুলো দেখছিলেন আর মন খুলে ছবি ও ছবির আঁকিয়েদের প্রশংসা করছিলেন। তিনি মুগ্ধ হয়ে বলেছিলেন, 
 " আমার দেশের শিশুরা এমন নিখুঁত ছবি আঁকতে পারে, এসব না দেখলে তা বিশ্বাস করা যায় না। "
তিনি শিশুদের সঙ্গে সেদিন প্রায় সাড়ে তিনঘন্টা কাটান এবং সঙ্গে খাবার পরিবেশন করেন। সেদিন বঙ্গবন্ধুর ঘর থেকে শিশুরা বেরিয়ে আসার সময় তিনি গভীর তৃপ্তিভরা কন্ঠে বলেছিলেন, 
 " আজকের কর্মব্যস্ত সারাটা দিনের মধ্যে এই একটুখানি সময়ের জন্য আমি শান্তি পেলাম। শিশুদের সান্নিধ্য আমাকে সব অবসাদ থেকে মুক্তি দিয়েছে। "
বঙ্গবন্ধু শিশুদের খুব ভালোবাসতেন। শিশুরা তার কাছে ছিল পবিত্রতার প্রতীক। শিশু-কিশোরদের সাহচর্য তাঁর মনকে প্রশান্তিতে ভরিয়ে তুলতো। কচি-কাঁচার মেলা, খেলাঘরসহ অন্যান্য সংগঠনের শিশুদের অনুষ্ঠানে মার্চপার্স্ট, লাঠিখেলা, নাটক পরিবেশনা উপভোগ করতেন তিনি। শিশুদের এমন উপস্থাপনায় আশ্চর্য ও অভিভূত হতেন তিনি। তাকে যারা দেখেছেন তারা বলেন, " তিনি এতো সহজে, এতো আন্তরিকভাবে শিশুদের সঙ্গে মিশে যেতেন যে শিশুরা তাকে অল্প সময়েই একান্ত কাছের করে নিতো। জানা যায়, শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণী, যুবক সবার কাছেই তিনি ছিলেন মুজিব ভাই তাই স্বাভাবিকভাবেই বয়সের ব্যবধান কমে যেত। তিনি ছিলেন পিতার মতো, অভিভাবকের মতো। এই প্রসঙ্গে একটি গল্প বলা আবশ্যিক। ১৯৭২ সালের শেষের দিক। রোজকার মতো  একদিন সকালে বঙ্গবন্ধু বড় ছেলে শেখ কামালকে নিয়ে হাঁটতে বেরিয়েছেন হঠাৎ বঙ্গবন্ধু লক্ষ্য করলেন, একটি বাচ্চা ছেলে। তার কাঁধে বইয়ের ব্যাগ ঝোলানো। ছেলেটি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছে। ছেলেটি জানালো তার পায়ে কি যেন ফুটছে তাই ব্যথা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু ছেলেটির পায়ের জুতো খুলে দেখেন জুতোর ভেতর লোহার সুচালো মাথা বের হয়ে আছে। যার খোঁচায় পা দিয়ে ররক্তক্ষরণ হচ্ছে। তখনই ছেলেটিকে চিকিৎসার জন্য তাঁর দেহরক্ষী পুলিশকে নির্দেশ দেন। ছেলেটির হাতে কিছু টাকা দিয়ে পরম মমতায় ছেলেটিকে আদর করে বিদায় নেন। 
বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন আজকের শিশুরাই আগামীদিনের ভবিষ্যৎ। ভবিষ্যতের নেতা। যারা সঠিক চিন্তাধারায় দেশ গড়বে এবং শক্তিশালী করে তুলবে দেশবাসীর উন্নয়ন ও বেঁচে থাকা। তাই শিশুদের সৃজনশীল, মননশীল, শিক্ষিত এবং মুক্তমনের হতে হবে। প্রাবন্ধিক সুলেখা সরকার মনে করেন, বঙ্গবন্ধু জানতেন  শিশুদের প্রতি সংবেদনশীল হওয়া জরুরী। শিশু বিষয়ক কাজে সমাজকর্মীদের সাথে সাথে পরিবার, বিদ্যালয়, প্রতিষ্ঠান, প্রশাসন সকলকে সচেতন করে তুলতে হবে এবং আইনের মাধ্যমে কর্তব্যপরায়ণ ও দায়িত্বশীল ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান যেমন সরকারি কর্মচারী, শিক্ষক, শিশুপ্রতিপালক, নাগরিক, বিচারক এবং শিশুদের নিজেদের দ্বারা শিশুসংরক্ষণ করতে হবে। শিশুরা যাতে তাদের জীবনধারণের অধিকার, সামগ্রিক বিকাশের অধিকার এবং নিরাপত্তার অধিকার অর্জনে সক্ষম হয়, যাতে শিশুর শৈশব বজায় থাকে সবসময় এবং জরুরী অবস্থায় সেইজন্য পূর্ণাঙ্গ আইন প্রনয়ণ ও পরিসেবা প্রয়োজন। শিশুদের মৌলিক অধিকার স্থির করার লক্ষ্যেই ১৯৭৪ সালের ২২ শে জুন বঙ্গবন্ধু জাতীয় শিশু আইন বা চিল্ড্রেন অ্যাক্ট জারি করেন। এই আইনের মাধ্যমে শিশুদের নাম ও জাতীয়তার অধিকারের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। শিশুদের প্রতি সবধরনের অবহেলা, শোষণ, বঞ্চনা, নিষ্ঠুরতা, নির্যাতন, নিপীড়ন অথবা শিশুকে বিপদসংকুল অসামাজিক কাজে ব্যবহার করা ইত্যাদি থেকে নিরাপত্তার অধিকার নিশ্চিত করা হয় এই আইনে। 
 ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির হাতে নিহত না হলে তিনি নিশ্চয়ই বাংলাদেশের শিশুদের সার্বিক বিকাশ ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জীবনমান উন্নয়নে আরও অনেক ব্যবস্থা নিতে পারতেন এবং এক শ্রেনীর মানুষের মধ্যে নিষ্ঠুরভাবে শিশু নির্যাতন ও শিশুহত্যার অমানবিক মানসিকতা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতো না।
বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীন বাংলাদেশ । বঙ্গবন্ধু মানেই সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। জাতির জনক। বঙ্গবন্ধু মানেই শক্তিশালী প্রতিবাদী দেশবাসী। বঙ্গবন্ধু মানেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিকশিত শিক্ষার্থী, শিশু। শিশুদের প্রতি পিতৃসুলভ দায়িত্বপূর্ণ কর্মের বিবেচনায় বঙ্গবন্ধুর  জন্মদিনের দিনটিকে "জাতীয় শিশুদিবস" হিসেবে পালন করা হয়। কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, " একটি স্বাধীন দেশের স্রস্টা জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন একটি ঐতিহাসিক দিন। ঐ দিনটি কেন জাতীয় শিশুদিবস হল - এ নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন করেন। তার উত্তর লুকিয়ে আছে বঙ্গবন্ধুর শিশুদের জন্য নেওয়া নানা কর্মসূচির মধ্যেই। ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত সময়ে দেশে জাতীয় শিশুদিবস পালন বন্ধ হয়ে যায় তবে বেসরকারি দলীয় পর্যায়ে এ দিবস যথাযোগ্য গুরুত্বের সাথে পালন করা হতো পরে ২০০৯ সালে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা পুনরায় ক্ষমতায় এলে ১৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনটিকে জাতীয় শিশুদিবস বলে ঘোষণা করেন এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হয় জাতীয় শিশুদিবস। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানুষকে ভালোবেসে, তাদের দুঃখ-দুর্দশার সাথী হয়ে অহিংসা দিয়ে, মানবপ্রেম দিয়ে যে বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক  আদর্শ গড়ে তুলে গেছেন তার বিনাশ নেই, ক্ষয় নেই।   
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া গ্রামের ছোট্ট ছেলেটি কবে যেন শিশুদের সাথে খেলতে খেলতে মুজিব ভাই হয়ে উঠেছেন। হয়ে উঠেছেন রাষ্ট্রনেতা। বঙ্গবন্ধু।
এই তো সেই স্বাধীন চাষি, স্বাধীনতার ইতিহাস।  
এই তো সেই তুলির আঁচড়, মুজিবের ক্যানভাস।
এই তো সেই বীর বাহিনী, এই তো সেই যুদ্ধছবি।
এই তো সেই আলোকচ্ছটায় ছবির মাঝে দেশের রবি।

সুলেখা সরকার,কলকাতা

১৭ই মার্চ ২০২০

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.