তিনটি সদ্যজাত যমজ মেয়ের নাম দিলেন দাদু শশীকান্ত পোদ্দার ঝুলন পূর্ণিমা ও রাখী ।
ফুটুফুটে তিনটি শিশু ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছে ওদের দেখতে যাওয় মামা মামী পিসি ঠাকুরদা ঠাকুমার দিকে ।
দাদুকে প্রশ্ন করা হলো এতো এতো নাম থাকতে ঝুলন পূর্ণিমা রাখী কেন ।
দাদু হেসে বললেন উত্তরটা সোজা । ঝুলন পূর্ণিমা তে পৃথিবীতে এসেছেন দিদিমনিরা , বিশেষ দিনে জন্ম তাই বিশেষ নাম । তাহলে রাখী কেন ।দাদু বললেন রাখী বন্ধন উৎসব ভাই বোন এ সখ্যতা ,ভাই বন্ধু তে আত্মীয় তা বুঝায়।রাখী বন্ধন মানেই তো বুঝি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্বদেশ ভাবনা । স্বাধীনতা আন্দোলনের বিভীষিকা দিনগুলো ।তার পর আমাদের স্বাধীনতা দিবস ও স্বাধীন ভারত ।এখন আমরা স্বাধীন জাতি ভারতীয় ।
তিনটি সদ্যোজাত সদ্যোজাত শিশুর মধ্যেই আমি দেখছি মহা মিলন আনন্দ রাধাকৃষ্ণের অপার লীলা প্রেমের আখ্যান ।
সবার মুখ চুপ । প্রশ্ন করার সাহস নেই । সবার মুখে একই প্রশ্ন কি করে মানুষ করবে তিনটি যমজ কন্যা সন্তান ।
নব প্রসূতী মা শেলী মেয়ে হবার খবর পেয়ে ক্লান্ত মুখে প্রশ্ন করে মাকে একটিও ছেলে হয়নি , একজন ছেলে হলে ভালো হতো ।কথাটা কানে যায় দাদুর ।উনি বললেন তিনটি মেয়ে বিয়ে দিলেই তো তিনটা ছেলে পাওয়া যাবে ।যমজ তিনটি কন্যা রত্নের বাবা সুভাষ বেজায় খুশি।একখরচে এক পরিশ্রমে,একই সময়ে তিনটি মেয়ে বড় হবে , ইস্কুলে যাবে, একসাথে খেলব চলবে মিলে মিশে থাকবে । মানুষ এর মতো মানুষ হয়ে উজ্জ্বল করবে পারিবারিক মান মর্যাদা ।
দিদিমা ফোঁড়ন কেটে বলেন এক সাথে তিনটি সতীন পেলাম , আনন্দ হচ্ছে দুঃখ হচ্ছে ।
একজন প্রশ্ন করে দুঃখ কিসের,ওরা তো ঝুলন পূর্ণিমাতে জন্মেছে , স্বয়ং রাধারানী এসেছে আপনার মেয়ের ঘরে ।দিদা বলে ওদের দেখাশোনা করবে কে? জামাই বলে ভাববেন না মা , ওদের জন্য নার্স রেখেছি, কাজের লোক ও রাখবো ।
ঝুলন পূর্ণিমা তে তিনটি যমজ মেয়ে এলো মা শেলীর ঘরে । আনন্দময় হলো সারা পাড়া ।
পাশে বিনোদ গোঁসাই এর বাড়িতে রাধাকৃষ্ণ ঝুলন এ উঠেছে , চলছে অবিরাম হরি কীর্তন ।ঢোল করতাল এ মুখরিত সারা এলাকা । প্রসাদ বিতরণ হচ্ছে , কৃষ্ণ ভক্তগন ধ্বনি দিচ্ছে রাধাকৃষ্ণের জয় ,।রাধা গোবিন্দের জয় ।
তিনটি সদ্যজাত যমজ শিশুর মধ্যেই প্রতিষ্ঠিত হলো ঝুলন পূর্ণিমা ও রাখী ।
মাধুরী লোধ
বিলোনিয়া, দক্ষিণ ত্রিপুরা
২৬শে সেপ্টেম্বর ২০২১
মাধুরী লোধ- এর "ঝুলন পূর্ণিমা রাখী" সুন্দর গল্প পাঠ করলাম। নতুন আঙ্গিকে চমৎকার লেখা।
উত্তরমুছুন