Type Here to Get Search Results !

না বলতে জানতে হয়"...আরশিকথার অতিথি কলামে নন্দিতা দত্তের প্রতিবেদন

অনিচ্ছেগুলো ছোটবেলা থেকে চাপিয়ে দিয়ে আমাদের বোঝানো হয় - 'না' বলা মানে অসভ্যতা, আসলে কি তা? 'না' - বলার মধ্যে যে আত্মবিশ্বাস থাকে - সেটা আমরা উপলব্ধি করতে পারিনা, বা অস্বীকার করি। 'না' মানে যে শুধু নেগেটিভ নয় ''পজেটিভ' সেটা আমরা জানতেই পারিনা। 'না' বলাটা তাই জানতে হয়। অভিজ্ঞতা থেকে এখন বুঝতে পারি - সবসময় অন্যকে খুশি রাখতে নিজের খুশিকে বলি চড়ানোর জন্য - 'না' বলাটা অপরাধ বা অসভ্যতা বোঝানো। নিজের ইচ্ছে অনিচ্ছে যে বুঝতে না পারে তাহলে তার আত্মবিশ্বাস কি করে গড়ে উঠবে? কি করে না বলবো? এটা ভাবতে ভাবতে অনেকে কোনটা ঠিক কোনটা বেঠিক, কোনটা ন্যায় কোনটা অন্যায় - সে বোধটা হারিয়ে যায়। 'না' কে 'হ্যাঁ' বলার মতো করে বললে 'না'-ই থাকে - এটা একটা আর্ট বা কৌশল। যারা পারে তারা সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেনা। 'না' বলতে পারার কৌশলগত দিকটা সামলাতে পারলে পাল্টে যায় অনেক কিছু। ছোটবেলায় পড়েছিলাম, "পারিবোনা একথাটি বলিও না আর কেন পারিবেনা তাহা ভাবো একবার, পাঁচজনে পারে যাহা তুমিও পারিবে তাহা।" পাঁচজনে যাহা পারে এখানে যে অর্থে বলা হয়েছে - তা অন্য মানে। সেটা একজনই শুরু করে- ক্ষুদ্র থেকে বৃহত্তরের দিকে যাওয়া। এই কবিতায় অবশ্যই 'না' বলতে যা বলা হয়েছে - যা বোঝানো হয়েছে, তার সাথে আমার ভাবনার 'না' এর মিল কোথায়? দুটোই পজেটিভ অর্থে ভাবতে লেখা। কেমন তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে? না...একটু ভাবলেই দেখবেন - আমি যে 'না' এর কথা বলছি তার সাথে এই 'না' এর মিল আছে। সে মিলটা হলো পজেটিভ। প্রয়োজন ভিত্তিক নিজের স্বার্থের জন্য এমন কিছু কাজ মানুষ করে বসে যেগুলো নিয়ে তিনি কখনওই ভাবেন না। বা কেউ ভুলগুলো শুধরে দেওয়ার চেষ্টা করেনা। যদি পাশের মানুষটির জন্য মঙ্গল চাওয়া হয় তা কিন্তু পরোক্ষভাবে নিজের জন্য। তাই যেখানে 'না' বলার প্রয়োজন - সেই 'না' টা বলা যায় - যার অর্থ 'হ্যা' বাচক। তাই না বলাটা জানতে হয়। 
তাই ছোটবেলা থেকে দৃঢ়তার সাথে পজেটিভ 'না' কি করে বলা যায় এটা পারিবারিক শিক্ষা থেকে সম্ভব। দৃঢ়চেতা মানুষ - তাই সিদ্ধান্তে অটল থেকে 'না' বলতে পারেন বলেই তিনি আত্মবিশ্বাসী হোন। অথচ ছোটবেলা থেকে একটা বাচ্চার 'না'-কে না-মেনে নেওয়ার মধ্য দিয়ে অভিভাবকরা আত্মবিশ্বাস তৈরীতে শিশুকে যথাযথ শিক্ষা না দিতে পারলে - শিশুর সঙ্গে 'জেদী' বিশেষণটা জুড়ে দেয়। আজকালকার এককোটি পরিবারের সন্তান ছোটবেলা থেকে আত্মকেন্দ্রিকতার পাঠ নিয়ে বড় হয়। পাশের বাড়ির ছেলেটি বা মেয়েটিকে কখনো নিজের ভেবে শাসন করতে আসেন না। কারণ অভিভাবকরা ভাবেন, আমি যে বলবো অন্যায় হচ্ছে, করা উচিত নয় - এটা বলতে পারেন না, হয়তো এর পেছনে কাজ করে অদ্ভুত এক নেগেটিভ মানসিকতা। একদিন দু'দিন নয় পরপর অনেকদিন একই বিষয়ের সুপরামর্শ নেগেটিভ থেকে পজেটিভ হতে পারে - সেটা আমরা বুঝিনা, বুঝিনা বলেই প্রয়োজনে 'না' বলার অনীহা থেকে জন্মায় এক অদ্ভুত মানসিকতা। যা আমাদের প্রশ্নচিহ্নের মুখে দাঁড় করায়। এটা কি ভাববেন না? না ভাবাটাই কাল হয়ে দাঁড়ায়। সময় কাউকে রেয়াৎ করেনা। ভাববো না কেন - এই চিন্তাধারাতেই 'না' টা পজেটিভ হয়। তাই - "না বলা জানতি হয় গো...।।"

লেখিকাঃ নন্দিতা দত্ত,সাংবাদিক এবং সঞ্চালিকা
(আকাশবাণী ও দূরদর্শন)

৫ই আগস্ট ২০১৮ইং                      

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.