ফুটবলকে বলা হয়
একটি যুদ্ধ, একটি খেলা, একটি শিল্প। আর ফ্রান্সকে
বলা শিল্পের দেশ। তাই তো চার বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে
স্বপ্নের ট্রফিটা ধরা দিলো
সেই শিল্পের দেশের শিল্পীদের হাতেই।২০১৮ তে রাশিয়া বিশ্বকাপ শুরুর আগে
কে ভেবেছিল ফাইনালের দুই
দলের নাম
হবে ক্রোয়েশিয়া-
ফ্রান্স।আর সেই লড়াইয়ে চ্যাম্পিয়ন হবে ফ্রান্স।
সবাই মেতেছিল ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, জার্মানি, আর স্পেনকে নিয়ে। কিন্তু তারা কেউই সেমিফাইনাল
খেলতে পারেনি। কেউ বিদায়
নিয়েছে গ্রুপ
পর্বের প্রথম
রাউন্ড থেকে। কেউ দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে
আর কেউ
বা কোয়াটার ফাইনাল থেকে। বস্তুত এবারের বিশ্বকাপ কোনো
ঐতিহাসিক নাম
কিংবা কোনো ব্র্যান্ড দলের
অনিবার্য সাফল্য রচিত হয়নি। এবারের বিশ্বকাপের
প্রতিটা ম্যাচই তাৎক্ষণিক পরিস্থিতিতে যারা সক্ষমতা দেখাতে পেরেছে তারাই জয়ী
হয়েছে।
তাই তো ফেবারিটের
তকমা পাওয়া
দলগুলো যখন
একে একে
বিদায় নিয়ে
চলে গেল। তখন মানুষের প্রশ্ন ছিল
তাহলে কে
পেতে যাচ্ছে এবারের সোনালী ট্রফি। কার ঘরে যাচ্ছে এবারের বিশ্বকাপ।
এক সপ্তাহ আগেও অনেকেই ধারণা করেছিল বেলজিয়াম হতে
যাচ্ছে এবারের বিজয়ী। কিন্তু তারাও বিদায়
নিলো সেফিফাইনাল থেকে। এরপর যখন ফাইনালের মঞ্চ এলো। কোটি কোটি মানুষ যখন দাঁড়িয়ে গেলেন সেই
ফাইনালের রোমাঞ্চ উপভোগ করতে। যখন আর কেউ কোনো
ভবিষৎ বাণী
করলো না।সবাই বুঝে
গেলো যেকেউ জিততে
পারে।
তাই তো সবাই মন দিলো ফাইনালের রোমাঞ্চ উপভোগ করতে। তাহলে আর মঞ্চের কারিগরেরা বসে থাকবে
কেন ? তারাও শুরু থেকেই
রোমাঞ্চ ছড়িয়ে
গেল এবং
সেই রোমাঞ্চ চললো খেলা
শেষ হওয়ারও আরো ৯০
মিনিট অবধি। ম্যাচের শুরুতেই ক্রোয়েশিয়ার গোছালো আক্রমন।
প্রথম ছয় সাত মিনিট তো
বলতে গেলে
ফ্রান্স বলই
পায়ে জড়াতে
পারেনি। তারপর ১৮ মিনিটে গিয়ে গোল।ক্রোয়েশিয়ার খেলোয়াড় মানজুকিচ’র মাথায় লেগে
বল জালে। গোল..। কিন্তু এরপরই যে উল্লাসে মেতে উঠল
ফ্রান্স। কেননা মানজুকিচের মাথায়
লেগে বলটা
যে তাদের
জালে জড়িয়েছে। শুরু হলো
নতুন ইতিহাস। ফাইনালে আত্নঘাতী গোল।তার ঠিক ১০ মিনিট পরে ক্রোয়েশিয়া ফিরলো সমতায়।খেলার ঠিক
৩৮ মিনিটে গিয়ে পেরিসিচের হাতে লেগে
পেনাল্টি। যে কিনা ক্রোয়েশিয়ার গোল উপহার
দিয়ে সমতা
এনেছিল সেই
হয়ে গেল
খেলার খলনায়ক। এরপর ম্যাচের ৫৯
মিনিটে ফ্রান্সের পগবা গোল
করে দলকে
স্বস্তি এনে
দিলেন। ফলাফল ৩-১।সেটা বুঝে
উঠতে না
উঠতেই ৪ মিনিটের মাথায়
আবারও আঘাত
আনলো ফ্রান্স। এমবাপ্পের গোলে
এবার ফলাফল
গিয়ে দাঁড়ালো ৪-১।মূলত ফাইনালের রোমাঞ্চ তখনই
শেষ। কিন্তু না, ৮০ মিনিটে গিয়ে
ক্রোয়েশিয়া এক
হাস্যকর গোলের
সুযোগ নিয়ে
রোমাঞ্চ জমিয়ে
রাখলো। কিন্তু ফুটবল বিধাতা যে তার
আগেই ফলাফল
তৈরি করে
রেখেছেন। ৪-২ এ শেষ হলো
৯০ মিনিটের খেলা। চার বছরের নিষ্পত্তি ঘটলো মাত্র
নব্বই মিনিটের রোমাঞ্চে। ্তারপর আকাশ জুড়ে
নেমে এলো
বৃষ্টি।
এই বৃষ্টি ক্রোয়েশিয়ার বিষাদের কান্না নাকি ফ্রান্সের আনন্দের বন্যা
সেটা কোটি
কোটি দর্শকের হৃদয়ে জমে
থাকা স্মৃতিরাই জানিয়ে দেবে !প্রতিবেদকঃ জহির রায়হান,বাংলাদেশ
আরশি কথা
ছবিঃ সৌজন্যে জহির রায়হান
১৬ই জুলাই ২০১৮ইং